ছবি: সংগৃহীত
আমেরিকার সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য-উদ্বৃত্ত আছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যেসব দেশের পণ্যে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছেন, বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে বাংলাদেশের পণ্যে।
এ বাস্তবতায় রপ্তানি পণ্যের শুল্ক হ্রাস করার উদ্যোগের অংশ হিসেবে আমেরিকা থেকে গ্যাস টারবাইন, সেমিকন্ডাক্টর ও চিকিৎসাসামগ্রী আমদানিতে ৫০ শতাংশ শুল্কছাড়ের প্রস্তাব দেওয়ার চিন্তা করছে বাংলাদেশ। যেসব পণ্যে ইতিমধ্যে শুল্ক নেই, সেসব পণ্য বিনা শুল্কে আমদানি করার নীতি অব্যাহত রাখারও চিন্তাও আছে। সেই সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা ও সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ আগামী তিন মাসের জন্য এ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখার আহ্বান জানাতে পারে।
গতকাল শনিবার (৫ই এপ্রিল) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিডা কার্যালয়ে পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদ্দেশে চিঠি লেখা হবে এবং তার খসড়াও সেই বৈঠকে প্রণয়ন করা হয়। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠক সূত্র সুখবর ডটকমকে এসব তথ্য জানিয়েছে।
বিষয়টি হলো, ২রা এপ্রিল আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বের সব দেশের পণ্য ১০ শতাংশ ন্যূনতম শুল্কসহ বিভিন্ন দেশের ওপর বিভিন্ন হারে শুল্ক আরোপ করেছেন। ৯ই এপ্রিল থেকে এ শুল্ক কার্যকর হবে। তবে এটাই চূড়ান্ত কথা নয়, আমেরিকা এ নিয়ে আলোচনার পথ খোলা রেখেছে। তার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ এখন শুল্ক কমানোর উদ্দেশ্যে নানা চেষ্টাচরিত্র শুরু করেছে।
বিডার সভায় আরও জানানো হয়েছে, শুল্কবাধা অপসারণের পাশাপাশি অশুল্কবাধা অপসারণের কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। যেমন আমেরিকার কটন বা সুতা আমদানির ক্ষেত্রে ফিউমিগেশনের শর্ত বাতিল করা, আমেরিকার সুতা গুদামজাত করার অনুমতি দেওয়া, আমেরিকার কৃষি ও প্রযুক্তিপণ্য কেনায় অগ্রাধিকার দেওয়া ইত্যাদি। একই সঙ্গে বাংলাদেশ আমেরিকার শীর্ষ কোম্পানি, অর্থাৎ ফরচুন ৫০ তালিকাভুক্ত কোম্পানি, যেমন ওয়ালমার্ট, শেভরন, মেটা, টেসলা ও বোয়িংয়ের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল বরাদ্দের প্রস্তাব দেবে।
বিডার সেই চিঠিতে আমেরিকা থেকে আমদানি করা যায়—এমন সম্ভাব্য চারটি পণ্যের নামও দেওয়া হয়েছে। সেগুলো হলো ক্যালসিয়াম কার্বনেট, তাজা অথবা হিমায়িত পশুর মৃতদেহ (মাংসের জন্য), হাড়সহ পশুর মাংসের তাজা বা হিমায়িত টুকরা, হাড়বিহীন তাজা ও হিমায়িত পশুর মাংস।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ইতিমধ্যে বেশ কিছু আমেরিকার পণ্য বিনা শুল্কে আমদানি করছে। সেগুলো হলো- কটন বা সুতা, ভাঙা বা আস্ত সয়াবিন, তরলীকৃত বিউটেনাস, সমুদ্রগামী জাহাজ ও তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস।
এইচ.এস/
খবরটি শেয়ার করুন