শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঈদে মিলাদুন্নবীর জশনে জুলুসে লাখো মুসল্লির ঢল

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০২:৫০ অপরাহ্ন, ২৮শে সেপ্টেম্বর ২০২৩

#

ঈদে মিলাদুন্নবীর জুলুশে লোকে-লোকারণ্য হয়ে উঠেছে চট্টগ্রাম। সড়কজুড়ে আলোকসজ্জা। একটু পর পর ছোট-বড় তোরণ। একইসঙ্গে সাঁটানো হয়েছে ব্যানার-ফেস্টুন। এছাড়াও সড়কের দুপাশে বিশেষ পতাকাও পুঁতে দেওয়া হয়েছে।

ইতোমধ্যে নগরীর বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, ষোলশহর দুই নম্বর গেইট, জিইসির মোড় ও হাটহাজারী সড়কের কয়েক কিলোমিটার এলাকা মানুষে পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। 

একই সঙ্গে বৃহত্তর চট্টগ্রামের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকেও ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা চট্টগ্রাম মহানগরীতে আসছেন। সবার মুখে ‘ইয়া নবী সালাম আলাইকা, ইয়া রাসুল সালাম আলাইকা’ সহ নবীর শানে বিভিন্ন দরুদ ধ্বনিত হচ্ছে। এছাড়া ‘নারায়ে তকবির’, ‘আল্লাহু আকবর’ ধ্বনিতেও প্রকম্পিত হচ্ছে চট্টগ্রাম মহানগরের চারপাশ। 

বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ভোর থেকে চট্টগ্রাম মহানগরীতে নবী প্রেমিদের ঢল নামলেও ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপন কমিটি পূর্ব নির্ধারিত সময়সূচি মোতাবেক সকাল ৯টার দিকে ষোলশহর জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদরাসা সংলগ্ন আলমগীর খানকা থেকে ঈদে মিলাদুন্নবীর জুলুশ শুরু হয়। 

৫১তম এই জুলুশে নেতৃত্বে রয়েছেন পাকিস্তান থেকে আগত আওলাদে রাসুল আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তাহের শাহ। তার সঙ্গে রয়েছেন আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ ও আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ কাসেম শাহ। জুলুশটি নগরীর বিবিরহাট, মুরাদপুর, মির্জাপুল, কাতালগঞ্জ, চকবাজার অলিখাঁ মসজিদ, প্যারেড মাঠের পশ্চিম পাশ হয়ে, চট্টগ্রাম কলেজ, গণিবেকারি, খাস্তগীর স্কুল, আসকার দীঘি, কাজীর দেউড়ি, আলমাস, ওয়াসা, জিইসি, দুই নম্বর গেট হয়ে জামেয়া মাদ্রাসা মাঠে শেষ হবে। এরপর মাহফিল ও জোহর নামাজের পর দোয়া-মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন মিলাদুন্নবী উদযাপন ও গাউসিয়া কমিটির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট মোছাহেব উদ্দিন বখতেয়ার। 

তিনি বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারও প্রায় অর্ধকোটিরও বেশি নবীপ্রেমী লোকজন ঈদে মিলাদুন্নবীর জুলুশে অংশ নিয়েছেন। জুলুশের শৃঙ্খলা রক্ষায় আমাদের নিজস্ব ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক মাঠে রয়েছেন। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও কাজ করছেন। 

আরো পড়ুন : পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) আজ

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় বলেন, জশনে জুলুশ উপলক্ষে সিএমপির দেড় হাজার সদস্য মাঠে কাজ করছেন। একই সঙ্গে সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরাও কাজ করছেন। তাছাড়া সড়কে যানচলাচলে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে ট্রাফিক বিভাগ। 

বৃহস্পতিবার সকাল আটটা থেকে বিকেল তিনটা পর্যন্ত নগরের বিবিরহাট, মুরাদপুর, মির্জারপুল, পাঁচলাইশ থানার মোড়, মেডিকেল হতে অলিখাঁ মসজিদের মুখ, তেলিপট্টি মোড়, চকবাজার থানা রোডের মুখ, সিজিএস স্কুল মোড়, প্যারেড কর্নার, গণি বেকারী মোড়, জামালখান মোড়, চেরাগী পাহাড় মোড়, সার্সন রোডের মুখ, নেভাল এভিনিউ, স্টেডিয়াম গোল চত্বর, আলমাস সিনেমা মোড়, চট্টেশ্বরী মোড়, এসএইচ খান ফিলিং স্টেশন (ওয়াসা), জিইসি মোড়, ষোলশহর ২নং গেইট, মুরাদপুর রোডের মুখে রোড ব্লক স্থাপনের মাধ্যমে ডাইভারশন প্রদান করা হচ্ছে।

এদিকে জুলুশ উপলক্ষে চট্টগ্রামকে সাজানো হয়েছে নানা বর্ণিল সাজে। নগরজুড়ে বিভিন্ন সড়কের মোড়ে বসানো হয়েছে তোরণ, সাঁটানো হয়েছে ব্যানার-ফেস্টুন। সড়কের দুপাশে বিশেষ পতাকাও ঠাঙানো হয়েছে। আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে নগরীর বিভিন্ন মসজিদ ও মাদ্রাসা। বসানো হয়েছে খাবারসহ বিভিন্ন আইটেমের অস্থায়ী দোকানও। বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে স্বেচ্ছাসেবীরা বিতরণ করছেন শরবত। 

প্রসঙ্গত, ১৯৭৪ সালে চট্টগ্রাম মহানগরের এ জুলুশের সূচনা করেন আওলাদে রাসুল আল্লামা তৈয়্যব শাহ (রহ.)। সেই থেকে আনজুমানে রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় প্রতিবছর ১২ রবিউল আউয়াল চট্টগ্রামে এ জুলুশ উদযাপিত হচ্ছে। আনজুমানে রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের দাবি, আরাফাতের ময়দানে জমায়েতের পর এই ঈদে মিলাদুন্নবীর জুলুশের সমাবেশ দ্বিতীয় বৃহত্তম সমাবেশ। এই সমাবেশকে গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের জন্য আবেদন করা হয়েছে বলে জানান সংগঠনটির কর্মকর্তারা।  

এসকে/ 

চট্টগ্রাম পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী

খবরটি শেয়ার করুন