শুক্রবার, ১০ই অক্টোবর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৫শে আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** মাহফুজ-সারজিসরা গণ–অভ্যুত্থানের প্রকৃত নায়ক নন, যা বললেন মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম *** মানুষের শরীরে শূকরের যকৃৎ, চীনা চিকিৎসকদের সাফল্য *** দায়মুক্তি পাচ্ছেন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৮টি ধারার মামলার আসামিরা *** নোবেল না পেলে ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া কী হবে—শঙ্কিত নরওয়ে *** অবশেষে গাজায় শান্তির আভাস, শান্তিচুক্তি সই *** সেফ এক্সিটকে সন্দেহের চোখে দেখছে বিএনপি, বিব্রত কোনো কোনো উপদেষ্টা *** থেমেছে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান–কামানের গর্জন, ২ বছর পর শান্তির ঘুমে গাজাবাসী *** জামায়াতে ৪৩ শতাংশ নারী—এটা খুশির খবর, কিন্তু তাদের দেখা যায় না: শারমীন মুরশিদ *** তহবিলসংকটের কারণে এক-চতুর্থাংশ শান্তিরক্ষী কমাচ্ছে জাতিসংঘ *** খালেদা জিয়ার সেফ এক্সিটের দরকার পড়েনি: রিজভী

ওয়াইপিআই এর খেলাধুলার মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়নের উদ্যোগ গ্রহণ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১২:২২ পূর্বাহ্ন, ২২শে জুন ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

২০০৬ সালে ইয়ং পিপলস ইনিশিয়েটিভ তৈরি করেন কল্যাণী সুব্রহ্মণ্যম। তখন এটি প্রতিষ্ঠিত হয় খেলাধুলার মাধ্যমে বিশেষ করে বাস্কেটবলের মাধ্যমে নারী ক্ষমতায়নের লক্ষ্য নিয়ে। এ কাজে নাজ ফাউন্ডেশন প্রথম দিকে সহায়তা করলেও কোভিড এর আবির্ভাবে পরবর্তীতে তারা পিছিয়ে পড়ে।

তবে কল্যাণী পিছিয়ে পড়েননি। তিনি বলেন,খেলাধুলা ব্যক্তিত্বকে গঠন করতে সাহায্য করে। যখন একদল খেলোয়াড় খেলার জন্য একত্রিত হয় এবং জয়ের জন্য চেষ্টা করে তখন সে জয় শুধুমাত্র নিজের নয়, পুরো দলের।

সেই সময়ে, কল্যাণী নেদারল্যান্ডসের একজন ক্রীড়া প্রশিক্ষক করিনা ভ্যান ড্যামের সাথেও কাজ করার সুযোগ পান। সেসময় ওয়াইপিআই এ ১,১৫,০০০ মেয়ে অন্তর্ভুক্ত ছিল এবং তারা উভয়েই এ কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

এ কাজে সহযোগিতার জন্য তিনি মৈত্রায়ণার প্রতিষ্ঠাতাদের সাথে দেখা করেন। তখন মৈত্রায়ণা একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ছিল যার কোন নিজস্ব কর্মী ছিল না। মৈত্রায়ণার প্রতিষ্ঠাতারা ওয়াইপিআই এর সাথে কাজ করতে সম্মত হন।

লিঙ্গ বৈষম্যের কারণে স্কুলে সুযোগ-সুবিধার অভাব এবং অন্যান্য কারণে সব মেয়েরা খেলাধুলার সুযোগ লাভ করে না। তাছাড়া অনেক অভিভাবকও এ ক্ষেত্রকে মেয়েদের জন্য অনিরাপদ মনে করেন। 

অন্যদিকে ভ্যান ড্যাম ৮০-এর দশকে নেদারল্যান্ডসে ফুটবল খেলা শুরু করেছিলেন, যখন মেয়েরা এ খেলা খেলত না। বেশ কয়েক বছর ধরে ফুটবল পুরুষদের অধীনেই ছিল বলে জানান তিনি। নারী ফুটবল খেলোয়াড়দের দুর্বল এবং কুৎসিত বলা হতো। কিন্তু পরিস্থিতি পরিবর্তিত হয় যখন ডাচ মহিলা দল বিশ্ব মঞ্চে ভাল পারফর্ম করে এবং পুরুষ দল কোনও ইউরোপীয় বা বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে প্রত্যাশা অনুযায়ী খেলতে পারেনি।

তিনি বলেন, ফুটবল খেলার মাধ্যমেই তিনি মানসিকভাবে শক্তিশালী হয়েছেন এবং এখন তিনি সমাজের সকল ধ্যানধারণাকে পাল্টাতে চান।

ইয়ং পিপলস ইনিশিয়েটিভ তৈরি করা হয়েছে তিনটি স্তম্ভের উপর ভিত্তি করে — নারী ক্ষমতায়ন; পরিবার এবং সম্প্রদায়কে প্রভাবিত করা; এবং অন্যান্য অংশীদারদের সাথে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বজায় রাখা। 

এই প্রোগ্রামটি ১০ বছর বয়সী মেয়েদের থেকে শুরু হয়, কারণ এর বেশি বয়সী মেয়েদের মধ্যে অনেকেই শারীরিক পরিবর্তন উপলব্ধি করে খেলা ছেড়ে দেয়।

খেলা সম্পর্কে ১০ মাসের একটি প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় তাদেরকে। বাস্কেটবল খেলায় মেয়েরা যেকোন ধরনের পোশাকই পরতে পারে এবং এটা যেকোন স্থানেই খেলা যায়। প্রশিক্ষকরা এ সংগঠনের পাশাপাশি সরকারি ও পৌর বিদ্যালয়ে সপ্তাহে দুটি সেশন করেন। প্রতিটি সেশন ৪৫ মিনিট থেকে এক ঘন্টা স্থায়ী হয়।

প্রোগ্রামটি শেষ করার পর মেয়েদেরকে নেটবল খেলা চালিয়ে যেতে সক্ষম করার জন্য, ওয়াইপিআই নেটবল ক্লাব তৈরির সুবিধা প্রদান করে।

মেয়েরা গঠন থেকে নির্বাচন পর্যন্ত ক্লাবের ব্যবস্থাপনা পরিচালনা করে। অন্যদিকে মৈত্রায়ণা তাদের রেফারি, কোচ এবং প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে সহায়তা করে। ক্লাবগুলো মেয়েদের তাদের জীবন দক্ষতা অনুশীলন করতে এবং তাদের অধিকার এবং তারা যে সমস্যাগুলোর মুখোমুখি হয় সে সম্পর্কে একে অপরের সাথে কথোপকথন চালিয়ে যাওয়ার জন্য একটি নিরাপদ স্থান দেয়।

মৈত্রায়ণা বর্তমানে দিল্লি, মুম্বাই এবং বেঙ্গালুরুতে ওয়াইপিএ প্রোগ্রাম পরিচালনা করে, যেখানে প্রতি বছর প্রায় ১০ হাজার মেয়ে অংশগ্রহণ করে। কল্যাণী অনুমান করেন যে ২০০৬ সালে প্রোগ্রামটি শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার মেয়ে এ প্রোগ্রামের মাধ্যমে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়েছে।

ওয়াইপিআই যখন প্রথম চালু হয়, তখন তিনি অভিভাবকদের সাথে মিটিং করতেন এবং তাদের মেয়েদের সেখানে যোগদান করানোর জন্য অভিভাবকদের রাজি করাতেন। তখন অনেক অভিভাবকই রাজি হতেন না। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে অভিভাবকদের মন মানসিকতা পাল্টেছে। এখন অনেক অভিভাবক তাদের মেয়েদের প্রশিক্ষণের জন্য নিয়ে আসেন।

আরো পড়ুন: অটো চালিয়ে নারীর ক্ষমতায়নের দৃষ্টান্ত স্থাপন হায়দ্রাবাদের মহিলাদের

এ প্রোগ্রামে কাজ করা একজন হলেন শীতল শেঠি। ২৪ বছর বয়সী শীতল শেঠি মৈত্রায়ণায় শিক্ষা ও উদ্ভাবনের সহযোগী। ২৪ বছর বয়সী শীতলের বেড়ে ওঠা মুম্বাইয়ে। ২০১০ সালে তিনি ওয়াইপিআই প্রোগ্রামে যোগদান করেন।

১০ মাসের প্রোগ্রামের পর তিনি স্কুলের নেটবল লীগে যোগ দেন। পরবর্তীতে তার মা তাকে ১৮ মাসের কমিউনিটি স্পোর্টস কোচ প্রোগ্রামে ইন্টার্ন হওয়ার জন্য চাপ দেন। কোচরাও তাকে এ ব্যাপারে সহযোগিতা করেন। ১৯ বছর বয়সে তিনি সিনিয়র কোচ হন। এখন তিনি তার পরিবারের দায়িত্ব নিয়েছেন এবং মা ও ছোটভাইয়ের দেখাশোনা করেন। এ প্রোগ্রাম তাকে আত্মবিশ্বাস প্রদান করেছে এবং অধিকার সম্পর্কে তাকে সচেতন করেছে।

এম এইচ ডি/ আই.কে.জে/

ওয়াইপিআই খেলাধুলা নারীর ক্ষমতায়ন

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন

Footer Up 970x250