বুধবার, ৫ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৩শে মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঘূর্ণিঝড় মোখা

কক্সবাজারে মুষলধারে বৃষ্টি, সেন্টমার্টিন ছাড়ছে মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক

🕒 প্রকাশ: ০৪:০৭ অপরাহ্ন, ১২ই মে ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ শুক্রবার সকালে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত এ ঘূর্ণিঝড় শক্তিশালী হয়ে কক্সবাজারের দিকে ধেয়ে আসছে। বেলা পৌনে ৩টার দিকে কক্সবাজারে শুরু হয়েছে মুষলধারে বৃষ্টি। মোখা র কেন্দ্রে বাতাসের গতিবেগ বাড়ছে।

এদিকে সেন্টমার্টিন দ্বীপের সব হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টকে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে সেন্টমাটিন দ্বীপের আকাশে মেঘ দেখা গেছে। শুরু হয়েছে বাতাস। সকালে দ্বীপ থেকে কাঠের ট্রলারে প্রায় পাঁচশ’ মানুষ সেন্টমাটিন ছাড়েন।

একইসঙ্গে সেন্টমার্টিন থেকে পর্যটকসহ বিভিন্ন জেলার বাসিন্দাদের ইতোমধ্যে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় দ্বীপবাসীদের হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টগুলোতে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে এসব তথ্য জানিয়েছেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সুফিয়ান।

তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকা যেহেতু কক্সবাজার-সেন্টমার্টিনমুখী। তাই কক্সবাজারসহ সেন্টমার্টিন দ্বীপ ঝুঁকিতে রয়েছে। এজন্যই সেন্টমার্টিনের সব হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টকে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। পাশাপাশি সেন্টমার্টিন থেকে বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা ও পর্যটকদের ইতোমধ্যে সরিয়ে এনেছি আমরা। 

সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দা জয়নাল আবেদীন বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকার ভয়ে সেন্টমার্টিন দ্বীপ ছাড়তে শুরু করেছেন বাসিন্দারা। আজকে প্রায় পাঁচশ’ মানুষ দ্বীপ ছাড়ছেন। মূলত স্বচ্ছল পরিবারের লোকজন দ্বীপ ছাড়ছেন। যারা এখনও বসতভিটায় রয়েছেন তারাও আছেন ভয়ে।

এদিকে কক্সবাজার সৈকতে সকাল থেকে হাজারও পর্যটক সমুদ্রের লোনাপানিতে নেমে গোসল করছেন। গোসলে নেমে কোনো পর্যটক যেন বিপদে না পড়েন, সেজন্য জেলা প্রশাসন, ট্যুরিস্ট পুলিশ ও লাইফ গার্ড বাহিনীর পক্ষ থেকে সতর্কতামূলক প্রচার চালানো হচ্ছে।

এর আগে শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে সৈকতের লাবণী পয়েন্টে দেখা গেছে, কক্সবাজারের আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। তখনও সাগরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক দেখা গেছে। উত্তর দিক থেকে কিছুক্ষণ পরপর ছুটে আসা হালকা বাতাস পর্যটকদের প্রশান্তি দিচ্ছে। এর মধ্যে শতশত পর্যটক সমুদ্রে নেমে গোসল করছেন। ট্যুরিস্ট পুলিশ ও লাইফগার্ড কর্মীরা পর্যটকদের নজরদারি করছেন। 

জেলা প্রশাসনের পর্যটন শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম বিল্লাহ বলেন, মোকা অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলেও শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত কক্সবাজারের পরিবেশ-পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। সাগর শান্ত আছে। গোসলে নেমে কোনো পর্যটক যেন বিপদে না পড়েন সেজন্য আগাম সতর্কতা হিসেবে বালুচরে একাধিক লাল নিশানা উড়ানো হচ্ছে। চলছে ঘূর্ণিঝড় ও সতর্কতা নিয়ে প্রচার।

আরো পড়ুন: মোখা র কেন্দ্রে বাতাসের গতিবেগ বাড়ছে

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড়টি রোববার কক্সবাজার উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এর প্রভাব পড়তে পারে টেকনাফ, সেন্টমার্টিন, মহেশখালী ও কুতুবদিয়ায়। বিশেষ করে সেন্টমার্টিন দ্বীপের প্রায় পুরোটা জলোচ্ছ্বাসের সময় ডুবে যেতে পারে। এর চারপাশে বাঁধ না থাকায় এবং সেখানে প্রচুর অবকাঠামো থাকায় ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।

কক্সবাজার আবহাওয়া অধিদপ্তরের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকা কক্সবাজার থেকে ১ হাজার ২৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। এর প্রভাবে সাগর উত্তাল হচ্ছে। বর্তমানে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখানো হলেও সংকেত বাড়তে পারে।

এম/

 

ঘূর্ণিঝড় মোখা

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন