ছবি: সংগৃহীত
ঈদ উৎসবের অপেক্ষায় পুরো দেশ। আজ বাদে কাল ঈদুল আজহা। তবে ফুটবল মাঠে দেশের জন্য লড়তে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করা হচ্ছে না আনিসুর রহমান জিকো-শেখ মোরসালিনদের। তাতে অবশ্য কোনো আফসোস নেই; বরং সুদূর বেঙ্গালুরু থেকে দেশবাসীর ঈদের আনন্দ দ্বিগুণ করার প্রত্যয় জামাল ভূঁইয়াদের। মঙ্গলবার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে শ্রী কান্তেরেভা স্টেডিয়ামে ভুটানকে হারিয়ে ঈদের আগাম উৎসব করতে চান ফুটবলাররা। এই জয়টি অবসান ঘটাবে ১৪ বছরের। ২০০৯ সালের পর দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলের সর্বোচ্চ আসরে সেমিফাইনালে উঠবে হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার দল।
এমন না যে ভুটান সব কিছু ছাড়িয়ে আকাশে উঠে গেছে। দুর্ভাগ্য হচ্ছে ফিফার র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের (১৯২) ওপরে ভুটান (১৮৫)। অথচ এই ভুটান সাফের মঞ্চে কখনোই বাংলাদেশকে হারাতে পারেনি। সব সময় হেরে এসেছে। দেশের ফুটবলের যত খারাপ অবস্থাই হোক, ভুটান কখনোই বাংলাদেশের মাথায় ছড়ি ঘুরাতে পারেনি। সেই ভুটানকে নিয়ে এখন ভাবতে হয়। কারণ একটাই, ২০১৬ সালের কথা, এশিয়ান কাপ এবং বিশ্বকাপের বাছাই একসঙ্গে চলছিল। ভুটানের বিপক্ষে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে হেরে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে ১৭ মাস দূরে ছিল। ম্যাচ জিতলেও আর হয়তো এক-দুই ম্যাচ খেলার সুযোগ পেত। কিন্তু থামতেই হতো। হয়তো দুই ম্যাচ আগেই বিদায় নিয়েছিল। কেন ভুটানের কাছে হারবে। বাফুফের বিপক্ষে থাকা সাবেক ফুটবলাররা চিৎকার করে আকাশ কাঁপিয়ে দিল। সেই ম্যাচের ফুটবলাররা সেদিন ম্যাচ ডোবানোর কারিগর ছিলেন। কোচ ইঙ্গিত দিয়েছিলেন খেলোয়াড়দের কারণে ম্যাচ হেরেছে। সেই ম্যাচের পর ভুটানকে তিন বার হারিয়ে ছিল বাংলাদেশ। তারপরও ভুটানের বিপক্ষে ম্যাচ হলে দুঃস্বপ্নের কথাগুলো চোখে এসে যায়। এখনো ভুটানকে নিয়ে ভাবতে হয়।
সাফে বাংলাদেশ-ভুটান মুখোমুখি হয়েছে ছয় বার। এর মধ্যে একবারও ভুটান জয় পায়নি। ১ বার ড্র হয়েছিল ২০০৮ সালে মালদ্বীপে। সেই সাফেই ভুটান তার ইতিহাসে সর্বোচ্চ সাফল্য ছিল সেমিফাইনাল খেলেছিল তারা। ভারতের কাছে হেরেছিল। গোল করে এগিয়ে থাকা ভুটানকে হারাতে ১২০ মিনিট পর্যন্ত লড়াই করতে হয়েছিল সুনীল ছেত্রীদেরকে। সেই সাফেই ভুটান সর্বশেষ জয় পেয়েছিল আফগানিস্তানের বিপক্ষে, ৩-১ গোলে জিতে। এছাড়া সাফে কখনোই ভুটান কিছু করতে পারেনি।
এবার ভারতের বেঙ্গালুরুতে ১৪তম সাফেও ভুটান দুই ম্যাচ হেরে বিদায়ের দুয়ারে দাঁড়িয়ে। সমীকরণে এখনো বিদায় হয়নি। বাংলাদেশ যদি জিতে যায় ভুটানকে ঘরে ফেরার বিমান ধরতে হবে, সমীকরণ নিয়ে ভাবতে হবে না।
আরো পড়ুন: অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী না হওয়ার পরামর্শ জামালের
শ্রী কান্তীরাভা স্টেডিয়ামে রাত ৮টায় ভুটানের বিপক্ষে ম্যাচে নামার আগে বাংলাদেশের সুবিধা হচ্ছে বিকেল ৪টায় একই গ্রুপের লেবানন-মালদ্বীপ মুখোমুখি হবে। এই ম্যাচের ফলাফল দেখে বাংলাদেশ নির্ধারণ করবে করণীয়। বিকেলের ম্যাচ ড্র হলে বাংলাদেশকে জিততেই হবে। আর মালদ্বীপ যদি লেবাননকে হারায় তাহলে বাংলাদেশকে জিততে হবে এবং গোল গড় বাড়িয়ে নিতে হবে। কী করতে হবে সেটিও বোঝা যাবে মাঠে নামার আগেই। সাফে সবদিক থেকে এগিয়ে বাংলাদেশ। আজ ভুটানকে হারিয়ে সমীকরণ মিলিয়ে সেমিফাইনালে উঠতে পারবে বাংলাদেশ। দুঃখ ঘুচবে বাংলার ফুটবলের। টানা পাঁচটি সাফের গ্রুপপর্ব হতে বিদায় নেওয়ার কষ্টের গল্পের কথা শেষ হতে পারে।
এম/
খবরটি শেয়ার করুন