ছবি: সংগৃহীত
২০১০ সালে, চীন প্রথমবারের মতো শিল্পনীতি বাস্তবায়নে মনোনিবেশ করে। সে বছর দেশটি বৈদ্যুতিক গাড়িসহ সবুজ প্রযুক্তি, ৫জি টেলিকমিউনিকেশন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ড্রোন এবং উচ্চগতিসম্পন্ন ট্রেনের মতো বিভিন্ন আধুনিক প্রযুক্তির বিস্তৃত পরিসরে উন্নয়ন ঘটায়। এখন দেশটি শিল্প বিপ্লবে অংশীদারিত্বের অগ্রগতির বিষয়ে এপ্রিলের শেষদিকে দুইদিনের সেমিনার আয়োজনের পরিকল্পনা করছে। চীন শুধুমাত্র শিল্প বিপ্লব ৪.০ এর সুবিধা গ্রহণের পরিকল্পনাই করছে না, একইসাথে চীনের বৈশ্বিক বাজারে অংশীদারিত্ব বৃদ্ধিও এর লক্ষ্য।
এ পরিকল্পনা চীনের বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। ২০১৩ সাল থেকে অবকাঠামোগত উন্নয়নের ক্ষেত্রে সংযোগ বৃদ্ধিতে বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভ গ্রহণ করেছে চীন। চীন বিভিন্ন দেশের সরকারকে এই সেমিনারে তাদের প্রতিনিধি পাঠানোর জন্য আহ্বান জানিয়েছে। বিশেষ করে আর্থিক ও প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের উপস্থিতি কামনা করছে চীন।
এক দশকের ব্যবধানে বিআরআই প্রকল্প সারাবিশ্বের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে এবং প্রায় ১৬৫ টি দেশ এ প্রকল্পে অংশ নিয়েছে। বিশ্বব্যাপী নেটওয়ার্ক সৃষ্টিতে বিআরআই প্রকল্পের অংশীদারদের আকৃষ্ট করার কথা ভাবছে চীন। তবে কিছু বিশেষজ্ঞদের মতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার পশ্চিমা মিত্রদের দ্বারা চীনের বিরুদ্ধে আরোপিত নিষেধাজ্ঞার মোক্ষম জবাব হতে পারে সেমিনারটি।
প্রস্তাবিত সেমিনারে বিশ্বব্যাপী শিল্প ও সরবরাহ শৃঙ্খলের ডিজিটালাইজেশনের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হবে। বিশেষ করে পরবর্তী প্রজন্মের আইসিটি, জৈবপ্রযুক্তি, রোবোটিক্স, মহাকাশ, জাহাজ নির্মাণ, মহাসাগরীয় প্রকৌশল সরঞ্জাম এবং পরিবেশগত সুরক্ষা এর উপর গুরুত্ব প্রদান করা হবে।
আরো পড়ুন: চীনের বিখ্যাত যাজক ওয়ান চ্যাংচুন গ্রেফতার
সম্ভবত চীন উপলব্ধি করতে পেরেছে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে তার অবস্থান টিকিয়ে রাখতে হলে দেশটিকে প্রযুক্তিগত দিক দিয়েও উন্নত হতে হবে এবং প্রযুক্তির সমস্ত সুবিধা ভোগ করতে হবে।
তবে এ কাজটি চীনের জন্য অত্যন্ত কঠিন হতে চলেছে। কারণ পশ্চিমা দেশগুলো কখনোই চীনকে নিজেদের জায়গা ছেড়ে দিবে না। চীনকে কখনোই তারা প্রযুক্তিগতভাবে পরাশক্তি হতে দিবে না। মার্চ মাসে, চীনের বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং বলেন, চীনকে বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত নীতির দিকে মনোযোগ দিতে হবে এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহকে একত্রিত করে শক্তিশালী ও স্বনির্ভর হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
ইতিমধ্যেই চীনের অর্থ মন্ত্রণালয় এবং রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনাকারী ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এন্ড রিফর্ম কমিশন (এনডিআরসি) এই লক্ষ্য পূরণে বাজেট বৃদ্ধি করেছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ৫জি সহ বিভিন্ন প্রযুক্তিগত খাতে চীন বিনিয়োগ করতে চলেছে। একইসাথে বৈদ্যুতিক যানবাহন এবং সৌর প্যানেলের মতো খাতেও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় নামতে চলেছে চীন।
এমএইচডি/
প্রযুক্তি আধিপত্য চীন মহাকাশ বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভ বৈজ্ঞানিক
খবরটি শেয়ার করুন