সোমবার, ৮ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৩শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাবা দিবসের শুরু যেভাবে

ডেস্ক নিউজ

🕒 প্রকাশ: ০৫:৫৯ অপরাহ্ন, ১৭ই জুন ২০২৩

#

প্রতীকী ছবি

বাবা মানে বটবৃক্ষের ছায়া। বাবা মানে বিশ্বস্ততা, ভরসা, পরম আদর ও ভালোবাসায় সিক্ত প্রাণ। পৃথিবীর ছোট ও মধুর শব্দগুলোর মধ্যে বাবা ডাকটিও অন্যতম। এ শব্দটির সঙ্গেই যেন জড়িয়ে আছে নির্ভরতার ছায়া। তাই বাবার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে প্রতিবছর জুন মাসের তৃতীয় রোববার বিশ্বব্যাপী পালন করা হয় বিশ্ব বাবা দিবস।

প্রতিবছর এই দিনে নানা আয়োজনে সন্তান উদ্‌যাপন করে বাবার অবদান। শুভেচ্ছা জানানো, সারপ্রাইজ দেয়া, উপহার দেয়াসহ বাবাকে এই বিশেষ দিনে স্মরণ করা হয়। তবে কীভাবে, কোথা থেকে কিংবা কবে থেকে বাবা দিবসের সূচনা, তা আমরা অনেকেই জানি না। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক বাবা দিবসটি শুরু হওয়ার গল্প।

মা দিবস প্রথম পালিত হয়েছিল ১৮৬০ সালে। সেই তুলনায় বাবা দিবসের বয়স কমই বলা যায়। আমেরিকায় মা দিবসকে জাতীয় ছুটির দিন হিসেবে পালন করা শুরু হয় সেই ১৯১৪ সাল থেকে। মা দিবস যতটা দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পেরেছে, বাবা দিবস এ ক্ষেত্রে একটু পিছিয়েই আছে বলা চলে।

১৯০৮ সাল। পশ্চিম ভার্জিনিয়ার এক গির্জায় একটি স্মরণসভার আয়োজন করা হয়েছে। এর আগের বছরই একটি কয়লাখনিতে বিস্ফোরণে নিহত হয়েছিল ৩৬২ জন কয়লাশ্রমিক। তাদের সম্মান জানাতে সন্তানরা মিলে এই প্রার্থনাসভার আয়োজন করে। এটি ছিল বাবাকে সম্মান জানাতে ইতিহাসের প্রথম আয়োজন।

পরের বছর ১৯০৯ সালে সনোরা স্মার্ট ডড নামের এক নারী বাবা দিবসের স্বীকৃতির জন্য সোচ্চার হয়ে ওঠেন। ডড তার বাবাকে অসম্ভব ভালোবাসতেন। মা ছিল না তাদের। তাদের সাত ভাইবোনকে বড় করে তুলেছিলেন তাদের সিঙ্গেল বাবা। বাবার এই ত্যাগ দেখে ডডের মনে হলো, মা দিবসের এত আয়োজন হলে বাবা দিবস কেন বাদ থাকবে। বাবাকে সম্মান জানানোর জন্যও একটা দিন থাকা দরকার।

অনেক চেষ্টাচরিত্র করে দীর্ঘ এক বছরের সাধনায় স্থানীয় কমিউনিটিগুলোতে বাবা দিবস পালন করতে পারেন ডড। ১৯১০ সালের ১৯ জুন বিশ্বে প্রথমবারের মতো পালিত হয় বাবা দিবস।

শুরুটা ওয়াশিংটনে হলেও ধীরে ধীরে এক রাজ্য থেকে আরেক রাজ্যে ছড়িয়ে পড়তে থাকে এ দিবস। আস্তে আস্তে মা দিবসের পাশাপাশি বাবা দিবসের প্রতিও সচেতন হতে থাকেন সন্তানরা। দীর্ঘ ছয় দশক পর মিলে বাবা দিবসের স্বীকৃতি। ১৯৭২ সালে তখনকার আমেরিকান প্রেসিডেন্ট নিক্সন একটি আইনে স্বাক্ষর করে বাবা দিবসকে জাতীয় মর্যাদা দেন।

তবে এর মাঝে বেশ কিছু আন্দোলনও হয়ে গেছে মা দিবস এবং বাবা দিবস একসঙ্গে করে প্যারেন্ট ডে পালনের জন্য। তবে বেশির ভাগ মানুষ আলাদা আলাদা দিন পালনেই রত থাকল। অবশ্য কেউ কেউ এটিকে পুরুষতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার ধান্দা বলতেও কার্পণ্য করেনি।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এটি ভিন্ন ভিন্ন দিনে পালন করা হয়। বাংলাদেশ,  যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বাবা দিবস হচ্ছে জুন মাসের তৃতীয় রোববার। দক্ষিণ আমেরিকায় এটি পালিত হয় ১৯ মার্চ। অস্ট্রেলিয়া ও ফিজিতে পালন করা হয় সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম রোববার।

বিশেষ এই দিনে সন্তানরা বাবাদের কোনো না কোনো উপহার দিতে পছন্দ করে। অনেক দেশে ঘটা করে বাবা দিবস উদ্‌যাপন করা হয়। দেশভেদে উদ্‌যাপনে কিছুটা বৈচিত্র্য দেখা যায়। কোনো কোনো দেশে সন্তান বাবাকে ফুলের তোড়া ও কার্ড উপহার দিয়ে শুভেচ্ছা জানায়, আবার কোনো দেশে নেকটাই, টুপি, মোজা ও বিভিন্ন স্পোর্টস সামগ্রী উপহার দেয়া হয়।

আরো পড়ুন: ৫৫০ সন্তানের জন্মদাতাকে 'স্পার্ম ডোনেট' বন্ধ করার নির্দেশ আদালতের

অনেকে আবার দিবসটি উপলক্ষ্যে কেক কাটার আয়োজন করে। বাবাদের জন্য উপহার কিনতে বেশ খরচও করা হয় অনেক দেশে। ধারণা করা হয়, শুধু আমেরিকায় দিবসটি ঘিরে উপহার কেনা বাবদ খরচ করা হয় ১০০ কোটি ডলারের বেশি।

সূত্র: হিস্ট্রি ডটকম, ব্রিটানিকা ডটকম, এনডিটিভি

এম এইচ ডি/

বাবা দিবস বিশ্ব উপহার

খবরটি শেয়ার করুন