ছবি : সংগৃহিত
ব্রণ সাধারণত বয়োসন্ধিকালের সমস্যা হলেও এটা যে কোনও বয়সেই হতে পারে। এটি মূলত ১৩ থেকে ১৯ বছর বয়সীদের মধ্যে বেশি দেখা দেয়। প্রাপ্ত বয়সেও অনেকে কমবেশি ব্রণের সমস্যার শিকার হন। আর এটা যেকোনো ধরনের হতে পারে।
লাল রঙের ছোট ছোট গোটা, আবার পুঁজপূর্ণ বড় বড় চাকাও হতে পারে। এগুলোর কারণে ত্বকে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।
এছাড়া অতিরিক্ত মাত্রায় হলে এটা যন্ত্রণাদায়ক হয়ে যায়। কারও কারও মুখে ব্রণের তীব্রতা এত বেশি থাকে যে, মুখে গর্ত হয়ে যায়। এর ফলে ত্বক নষ্ট হয়ে মুখের লাবণ্যতা চলে যায়।
ব্রণ দূর করার জন্য অনেকেই অনেক কিছু করে থাকেন। নানা ধরনের দামি রাসায়নিক প্রসাধনীও ব্যবহার করেন। এতকিছু করেও তেমন কাজ হয় না। তবে ঘরোয়া কিছু উপাদান ব্যবহার করে আপনি এই সমস্যা দূর করতে পারেন।
চলুন জেনে নিই ঘরোয়া কী কী উপাদান ফেস প্যাক তৈরিতে ব্যবহার করা যায়-
টমেট
ত্বক এবং চুলের যত্নে টমেটো অত্যন্ত উপকারী একটি সবজি। কারণ এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, খনিজ উপাদান এবং ভিটামিন প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। এটি ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখে। ফলে ব্রণের প্রকোপ কমাতে সাহায্য করে।
আলু
সবজির ঝুড়িতে আলু সবসময় পাওয়া যায়। রান্নার সময় খাবার তৈরিতে এর ব্যবহার সবচেয়ে বেশি। এটা ছাড়া যেন একটি দিনও চলে না। আর সেই আলুর ব্যবহারেই হতে পারে আপনার ব্রণের সমাধান।
ভিটামিন ‘এ’, পটাশিয়াম আয়রন, অ্যান্টি-অক্সাইড, ফাইবারসহ প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট পাওয়া যায় আলুর খোসায়। প্রদাহজনিত সমস্যা দূর করার ক্ষমতা আছে এর মধ্যে। ফলে ত্বকে জ্বালাপোড়াভাব বা যেকোনো সংক্রমণ হলে তা সারাতে আলু ভালো কাজ করে।
আরো পড়ুন : শীতে বাড়ে নিউমোনিয়ার ঝুঁকি, যেভাবে সতর্ক থাকবেন
হলুদ
হলুদের ব্যবহারে ত্বকের যেকোনো সমস্যা সমাধান হতে পারে। কয়েক ধরনের আণুবীক্ষণিক জীবাণু আমাদের ত্বকের ক্ষতির জন্য দায়ী থাকে। হলুদ ত্বককে সুস্থ ও জীবাণু থেকে বাঁচিয়ে রাখতে সাহায্য করে।
এটি ত্বকের অতিরিক্ত তেল শোষণ করে নেয়। ফলে ব্রণের সমস্যা দ্রুত কমতে থাকে। এতে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা ত্বক উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে।
লেবুর রস
ব্রণ দূর করতে লেবু অত্যন্ত উপকারী। এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে অ্যাসিড বা ক্ষার জাতীয় উপাদান রয়েছে। ফলে এটি প্রাকৃতিক ক্লিনজার হিসেবে কাজ করে।
এছাড়া ত্বকের ছোপ ছোপ কালো দাগ ও রোদে পোড়া দাগ দূর করতে সাহায্য করে। আবার ত্বকের লোমকূপ উন্মুক্ত করে দিতেও সাহায্য করে। এতে প্রচুর পরিমাণে জীবাণুনাশক উপাদান উপস্থিত রয়েছে। এটি একটি প্রাকৃতিক অ্যাস্ট্রিনজেন্ট।
টুথপেস্ট
ব্রণের চিকিৎসা করে ফেলুন বেসিনে থাকা টুথপেস্ট দিয়ে। এটি ত্বকের নানা ধরনের সমস্যা সমাধানে ভালো কাজ করে। এতে সিলিকা নামক একটি উপাদান রয়েছে।
যা ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূর করতে সাহায্য করে। এর ফলে ব্রণ ওঠার প্রবণতাও কমে যায়। তবে মাথায় রাখতে হবে সব টুথপেস্টে সিলিকা নামক উপাদান থাকে না। তাই ব্যবহারের আগে দেখে নেবেন।
ভিনেগার
বর্তমানে পরিচিত একটি নাম অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার। আপনারা সবাই জানেন এটি রান্নার কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তবে এখন শুধু রান্নার ক্ষেত্রেই নয় ত্বকের যত্নেও এর উপকারিতা অনেক। এটি ফুসকুড়ির মতো সমস্যাও খুব সহজে ভালো করে তুলতে পারে।
কারণ এর মধ্যে জীবাণুনাশক উপাদান রয়েছে। সেই সঙ্গে আছে ম্যালিক অ্যাসিড, যা আপনার ত্বকের সব ধরনের জীবাণু এবং ছত্রাকের সঙ্গে লড়তে পারে। এর ফলে ব্রণের মতো সমস্যাও সমাধান হতে পারে।
বেকিং সোডা
বেকিং সোডা ব্রণ সারিয়ে তুলতে দারুণভাবে কাজ করে। এটি আপনার রান্না ঘরেই পেয়ে যাবেন। এর ব্যবহারের ফলে ব্রণ সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি নতুনভাবে ওঠার প্রবণতাও কমে যাবে। এছাড়া ত্বকের জ্বালাভাব ও ব্রণ শুকিয়ে দাগ হয়ে গেলে সেই সমস্যা থেকেও মুক্তি দেবে বেকিং সোডা।
বরফ
ব্রণ দূর করতে বরফ অত্যন্ত উপকারী। বরফ ত্বকের রুক্ষতা দূর করে। অতিরিক্ত তেল বের করে এবং ব্রণের সমস্যার সমাধান করে।
এছাড়া রক্ত সঞ্চালনের মাত্রা বাড়িয়ে ত্বকের বলিরেখা দূর করতে সাহায্য করে। মুখে নিয়মিত বরফ ঘষলে চুলকানিসহ ত্বকের অন্যান্য সংক্রমণজাতীয় সমস্যাও দূর হয়।
এস/ আই.কে.জে
খবরটি শেয়ার করুন