ছবি-সংগৃহীত
মনের জোরে মানুষ নানা ধরনের বাঁধা-বিপত্তিতেও অটল থাকে। বলা হয়, যার যত মনের জোর সে জীবনে তত সফল। যদিও মনের জোর অনেকেই প্রাকৃতিক। অর্থাৎ মানুষ বংশগতভাবেই মানসিক শক্তির অধিকারী হয়। কিন্তু তারপরও কিছু কিছু অভ্যাস ও চিন্তাধারা বদলালে যাদের মানসিক শক্তি কম তারাও শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারেন। যারা জয় করতে জানে, তারা আপনার থেকে আলাদা নন। কেবল তাদের মনের জোরটাই আপনার থেকে বেশি। এ কারণে দিনশেষে বিজয়ীর হাসিটা তারাই হাসেন।
আপনার মনের জোর কমে গেলে তার প্রভাব পড়বে সব কাজেই। যে কাজটি অনেকে সহজে করে ফেলছেন, আপনার তাতে ভুল হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে আপনার করণীয় কী?
আত্মবিশ্বাস বাড়াতে হবে। ভুল হলেও থেমে যাওয়া চলবে না। নিজের মনের জোর বাড়াতে আপনাকে করতে হবে এই কাজগুলো। চলুন জেনে নেওয়া যাক-
নিজেকে বুঝুন
সবার আগে নিজেকে চিনতে ও বুঝতে হবে। কী পারেন এবং কী পারেন না, সেসব সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা রাখতে হবে। নিজেকেই নিজে প্রশ্ন করুন। এতে নিজেকে জানা সহজ হবে। কারও কথায় নিজেকে দুর্বল ভাববেন না। আপনার ভেতরের শক্তি আপনাকেই আবিষ্কার করতে হবে। নিজেকে চেনা এবং বুঝতে পারার যোগ্যতা থাকলে বাকি কাজও আপনার জন্য সহজ হয়ে যাবে।
সুন্দর করে উপস্থাপন
নিজেকে কখনোই ছোট করে উপস্থাপন করবেন না। আবার যেন নিজেকে বড় দেখানোর প্রবণতা পেয়ে না বসে, সেদিকেও খেয়াল রাখবেন। আপনি যদি নিজেকে ছোট করে কথা বলেন, নিজের দুর্বলতা প্রকাশ করতে থাকেন, তবে অন্যরাও আপনাকে দুর্বল ভাবতে শুরু করবে। সেখান থেকে আপনার মনের জোর আরও কমে যাবে। তাই নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করুন, যেন অন্যরাও মুগ্ধ হয়।
আরো পড়ুন: প্রিয়জনের জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকী মনে করিয়ে দেবে গুগল
কাজ গুছিয়ে নিন
যেকোনো কাজ করার ক্ষেত্রে তাড়াহুড়ো করবেন না। আগে নিজের মধ্যে নিজেকে ভালো করে গুছিয়ে নিতে হবে। কোন কাজটি কীভাবে করবেন, তার পুরো পরিকল্পনা শুরুতেই ভালোভাবে তৈরি করে নিন। এতে কাজে ভুল হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই কমে যাবে। সেইসঙ্গে বাড়বে মনের জোরও।
গঠনমূলক সমালোচনা
অন্যের সমালোচনা শুনলেই মন খারাপ করবেন না বা ক্ষেপে যাবেন না। কেউ গঠনমূলক সমালোচনা করলে তা মন দিয়ে শুনুন। এরপর তার ভেতরের গঠনমূলক দিকগুলো মনে গেঁথে নিন। এতে আপনার লাভ ছাড়া ক্ষতি হবে না। সেইসঙ্গে কোন কাজটি করলে আরও বেশি উন্নতি করতে পারবেন তা চিন্তা করে দেখুন।
পরিকল্পিত জীবনযাপন
পরিকল্পিত জীবনযাপন করুন যাদের জীবনে পরিকল্পনা আছে, জীবনে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য আছে তার প্রবল মানসিক শক্তির অধিকারী হয়ে থাকেন। এর মূল কারণ হচ্ছে-তারা যাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে বিভিন্ন ধরনের বাঁধা-বিপত্তি এড়িয়ে চলেন। কিংবা বাঁধা এলেও সেগুলো দৃঢ় চিত্তে সামলে নেন। তাই আপনি যদি মানসিক শক্তি বাড়াতে চান তবে ছকে বেধে ফেলুন।
ইতিবাচকতা
ইতিবাচক হোন এটা প্রমাণিত যে যারা নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গীর তাদের মনের জোর কম। অন্যদিকে যারা ইতিবাচক তাদের মনের শক্তিও বেশি। কেননা, ইতিবাচক মনের অধিকারীরা হতাশা, ব্যর্থতা, গ্লানি ছেড়ে নতুন উদ্যামে কাজ করেন।
জীবন হারজিত থাকবেই। তাই বলে থেমে থাকলে চলবে না। একবার পারেন নি, তাকে কী হয়েছে? নতুন উৎসাহ নিয়ে ফের শুরু করুন। দেখবেন সফল হবেনই।
ব্যায়াম করুন শারীরিকভাবে যারা দুর্বল তারা মানসিকভাবেও দুর্বলচিত্তের হয়। মনের শক্তি বাড়ানোর আগে শরীরের শক্তি বাড়ান। দেখবেন মনের জোর এমনিতেই বাড়বে। গবেষণায় দেখা গেছে যারা নিয়মিত ব্যায়াম ও শরীর চর্চা করেন তারা যেকোনো প্রতিকূলতায়ও অটল থাকেন।
শখ থেকে শক্তি মনের জোর বাড়িয়ে আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠতে চাইলে শখগুলোকে জাগিয়ে তুলুন। গবেষণায় প্রমাণিত যে তাদের বিভিন্ন শখ রয়েছে, এবং অবসর সময়ে তারা এই শখের পেছনে সময় দেয় তারা অত্যান্ত মানসিক শক্তির অধিকারী হয়।
সময়ে হাসুন, কাঁদুন জীবনে বাঁচতে যেমন হাসির প্রয়োজন। তেমনি কান্নারও প্রয়োজন। তাই মনের জোর বাড়াতে বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে প্রাণ খুলে হাসুন। তেমনি কষ্ট পেলে নিরবে কাঁদুন। কান্নায় মনের বিষ দূর হয়।
ভাগ্যকে দোষারোপ না করা কী হয়নি তা নিয়ে বেশি ভাবনা চিন্তা করার দরকার নেই। কী হতে পারে সেই নিয়ে ভাবনা চিন্তা করুন। তাতে আপনার সময়ও বাঁচবে এবং নিজের মনোবলও বাড়বে।
এসি/ আই. কে. জে/