ছবি : সংগ্রিহিত
আধুনিক বাঙালিদের সন্ধ্যার নাস্তায় নুডলস জনপ্রিয় খাবার হিসেবে সীমাবদ্ধ থাকলেও বিশ্বের অন্যান্য দেশে নুডলস সদৃশ জাপানি খাবার ‘রামেন’ দিনকে দিন প্রধান খাদ্য হয়ে উঠছে। মূলত উচ্চ মূল্যস্ফীতির এই চ্যালেঞ্জিং সময়ে মধ্যবিত্ত ভোক্তাদের মধ্যে রামেনের চাহিদা বেড়েছে আগের তুলনায় কয়েকগুণ।
জাপানিরা শত শত বছর ধরে নিজেদের প্রধান খাদ্য হিসেবে রামেন বা নুডলস রেখেছে সর্বাগ্রে। তবে রামেনের মধ্যে বিভিন্ন ধরন থাকলেও বর্তমানে জাপানের পাশাপাশি বিশ্বের অন্যান্য দেশেও ‘ইন্সট্যান্ট রামেন’ হয়ে উঠছে জনপ্রিয়। পশ্চিমারা বার্গার-স্যান্ডউইচের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে ঝুঁকছে তুলণামূলক সস্তা অথচ সুস্বাদু এ খাবারের দিকে।
৬৫ বছর আগে জাপানের ওসাকা দ্বীপের অধিবাসী মোমোফুকো আন্দোর হাত ধরে যাত্রা ইন্সট্যান্ট রামেনের। এ রামেন তৈরিতে লাগে না আগুন, তেল বা মসলা। শুধু একটু গরম পানি দিলেই তৈরি হয়ে যায় ইন্সট্যান্ট এই রামেন।
স্পাইসি টমেটো সস, সামুদ্রিক মাছের টুকরা, জাপানের বিশেষ তেরিয়াকি চিকেন, কোরিয়ান বারবিকিউ আর চিজ কারির মিশ্রণে এই রামেন এখন আমেরিকার মানুষের কাছে নতুন ‘আমেরিকান ব্রেকফাস্ট’ নামে পরিচিত।
আন্দো ২০০৭ সালে ৯৬ বছর বয়সে মারা যান। জীবদ্দশায় তার তৈরি খাদ্যের এমন বিশ্বব্যাপী সমাদর তিনি দেখে যেতে পারেননি। বোধহয় কল্পনাও করেননি আন্তর্জাতিক বাজারে তার হাতে প্রতিষ্ঠিত ইন্সট্যান্ট রামেন ভিত্তিক স্থানীয় কোম্পানি নিসিন ফুড এতটা জনপ্রিয়তা লাভ করবে।
নিসিন কোম্পানির কয়েক ধরনের রামেন বিক্রি হয় আন্তর্জাতিক বাজারে। ঝাল কম-বেশির ধরন ছাড়াও নানা ধর্মের মানুষের জন্য রয়েছে উপযোগী নানা রকমের ইন্সট্যান্ট রামেন। এতে করে হারাম-হালালের নিশ্চয়তা পেয়ে মুসলিম দেশগুলোতেও এ রামেন নিজেদের অবস্থান ইতোমধ্যে পাকাপোক্ত করে ফেলেছে।
ওসাকা ভিত্তিক ওয়ার্ল্ড ইন্সট্যান্ট নুডুলস অ্যাসোসিয়েশনের এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২২ সালে ৫০টির বেশি দেশে ১২১ বিলিয়নের বেশি ইন্সট্যান্ট নুডুলস বিক্রি হয়েছে।
এর আগে চীন, হংকং এবং ইন্দোনেশিয়ার মানুষ নিজেদের প্রধান খাদ্য হিসেবে নুডলসের ওপরে নির্ভরশীল ছিল। চতুর্থ এবং পঞ্চম অবস্থানে ছিল যথাক্রমে জাপান ও ভিয়েতনাম। বর্তমানে ভিয়েতনামের পর সবচেয়ে বেশি নুডলস বিক্রি হয় ভারতে। দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের মধ্যে দিনকে দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে নুডলসের চাহিদা।
আরো পড়ুন : সকালের নাস্তায় পাউরুটি নয়, খান আটার রুটি
এমনকি ক’দিন আগেও যেখানে বাংলাদেশের বাজারে রামেন ছিল উচ্চবিত্তদের নাস্তার টেবিলের খাবার, তা এখন মধ্যবিত্তদের মধ্যে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। ১২০ থেকে ৪০০ টাকা দামের নানা ধরনের ইন্সট্যান্ট রামেন দিনকে দিন ভোক্তাদের মধ্যে জনপ্রিয় হচ্ছে।
কয়েকটি সুপারশপে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আগে অভিজাত এলাকার দুই একটি আউটলেটে রামেন বিক্রি হলেও এখন প্রায় সবকটি আউটলেটে বিক্রি হচ্ছে জাপানি এ খাবার। রামেনের পাশাপাশি সস্তা হওয়ায় দেশীয় কোম্পানির ইন্সট্যান্ট নুডলসের দিকে মধ্যবিত্ত ভোক্তাদের ঝোঁক বাড়ছে। বিশেষ করে তরুণ সমাজের মধ্যে রামেনের জনপ্রিয়তা অপেক্ষাকৃত অনেক বেশি।
আরো পড়ুন : ছুটির দিনটি হোক আনন্দের
এস/ আই. কে. জে/