শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শীতের সবজি যেভাবে সংগ্রহ করবেন

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৪:২৬ অপরাহ্ন, ৮ই ডিসেম্বর ২০২৩

#

ছবি-সংগৃহীত

শীতের সবজির উৎপাদন বাড়ার সাথে সাথে সঠিক নিয়মে সবজি সংগ্রহ এবং বাজারজাতকরণের বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। শীতের শুরুতে বা শীত শুরুর মাস খানেক আগে যেসব সবজি সংগ্রহ করে বাজারজাত করা হয়, সেগুলোকে শীতের আগাম সবজি বলা হয়। এ সময়ে বাজারে শীতের আগাম সবজি ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, টমেটো, লাউ, মুলা, কুমড়া, মিষ্টিকুমড়া পাওয়া যায়।

ধরনভেদে বিভিন্ন পদ্ধতি ও কৌশলে এসব সবজি সংগ্রহ করতে হয়। আসুন জেনে নিই শীতের সবজি সংগ্রহের নিয়ম-

ঢ্যাঁড়শ

কোমল ও কচি অবস্থায় এর ফল তুলতে হবে। তা না হলে ফল শক্ত ও খাওয়ার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ফল বের হওয়ার ৩-৫ দিন পর ঢ্যাঁড়শ খাওয়ার উপযোগী হয়। ফল তোলা না হলে কাণ্ডের বৃদ্ধি কমে যায় এবং ফলন কম হয়।

ধুন্দল

বীজ বোনার দেড় থেকে দুই মাস পর থেকে ধুন্দল ফল ধরা শুরু হয়। এটি দুই-তিন মাস পর্যন্ত চলতে থাকে। গাছে ফল ধরার ৮-১০ দিন পরই সংগ্রহের উপযোগী হয়। ফল কচি অবস্থায় সংগ্রহ করা উচিত। এতে পুষ্টিমান বজায় থাকে। বেশি পরিপক্ব ফলের স্বাদ ও পুষ্টিমান দুটিই কমে যায়।

বরবটি

শুঁটি পরিপূর্ণ লম্বা ও মোটা হলে এবং বীজের অংশ সামান্য স্ফীত হতে শুরু করলে বরবটি তোলা যাবে।

লাউ

ফলের ত্বকের লোমশ ভাগ পরিপক্বতার সাথে সাথে কমতে থাকে। ফলের লোমশ ঘনত্ব দেখেও এর সংগ্রহ উপযোগিতা নির্ণয় করা যায় এবং সংগ্রহ করতে হয়।

আরো পড়ুন: মিরসরাইয়ে শিম চাষে ভালো ফলনের আশা কৃষকের

মূলা

বীজ বপনের ২০-২৫ দিন পর থেকে সংগ্রহ করা যায়। শাকের জন্য ঘন করে লাগালে ফসল ২০ দিন পর এবং মুলার জন্য ৪০ দিন পর থেকে ফুল ফোটা পর্যন্ত সংগ্রহ করা যাবে।

শিম

ফুল ফোঁটার ২০-২৫ দিন পর সংগ্রহ করা যায়। শুঁটি পরিপূর্ণ বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হলে বীজের অংশ কিছুটা স্ফীত হওয়ার পর পরই সংগ্রহ করতে হবে। অতিরিক্ত পরিপক্ব শুঁটিতে আঁশ জন্মালে কোমলতা ও স্বাদ নষ্ট হয়ে যায়।

আরো কিছু পদ্ধতি-

১. টমেটো, বেগুন, শসা, কুমড়া-এসব সবজিকে বোঁটা থেকে ধারালো ছুরি দিয়ে গাছ থেকে আলাদা করতে হবে।

২. চারাগাছ পাতলা করার সময় ছোট গাছ হিসেবে লালশাক, পালংশাক-এসবের শাক সংগ্রহ করতে হবে।

৩. পালংশাক, লালশাক, মুলাশাক সংগ্রহের সময় সম্পূর্ণ গাছটি শিকড়সহ উপড়ে ফেলতে হবে।

৪. শাক হিসেবে ব্যবহারের জন্য পুঁইশাক ও লাউয়ের ডগা ছাঁটার সময় গাছের অংশ কেটে সংগ্রহ করতে হবে।

৫. বিভিন্ন সবজি সংগ্রহের উপযোগী সময় ও উপযুক্ত অবস্থাভেদে সংগ্রহ করতে হবে।

৬. সবজির ফল যথেষ্ট কচি অবস্থায় পরিপূর্ণ আকার এবং রং প্রাপ্তির পর সংগ্রহের ব্যবস্থা নিতে হবে।

সতর্কতা

১. হাত দিয়ে মুচড়ে সবজি সংগ্রহ করা যাবে না। এতে গাছের ক্ষতি হয়। তাই ধারালো ছুরি বা ক্লিপার দিয়ে সংগ্রহ করা উচিত। সংগ্রহ করে ফসল তোলার পাত্রে রাখতে হবে। পরে বাজারজাতকরণ কার্যক্রম সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পাদন করতে হবে।

২. মাঠে থাকা অবস্থায় সংগ্রহের সময় সবজির গায়ে ধুলাবালি লাগতে পারে। এর জন্য সংগ্রহের পরপরই পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে নিলে নেতিয়ে পড়ার সম্ভাবনা কমে। তবে অপরিষ্কার পানিতে ধোয়া উচিত নয়। কেননা রোগ-জীবাণুর আক্রমণের আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।

৩. কাছে বা দূরের বাজারে পাঠানোর আগে খুব ধারালো ছুরি দিয়ে ছাঁটাই করতে হবে। আকর্ষণ ও মূল্য বাড়ানোর জন্য সটিং এবং গ্রেডিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সবজিভেদে বিভিন্ন শ্রেণীতে ভাগ করে গ্রেড করার ব্যবস্থা নিতে হবে। রসালো সবজি সংগ্রহের পরও শ্বসন প্রক্রিয়া চলে। তাই ঠাণ্ডা ঘরে বায়ুশূন্য করে অল্প সময়ের জন্য হলেও তাপ সরানোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

৪. দূরের পথে সবজি টাটকা রাখার জন্য মোড়ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিছু সবজি খুব পাতলা ও স্বচ্ছ পলিথিনের ব্যাগে রাখলে নেতিয়ে পড়া কমে যায়। খুবই পাতলা পলিথিনের ভেতর দিয়ে বাতাস চলাচল করতে পারে। তাই শাক, ব্রোকলি, শিম, লেটুস, ধনিয়া পাতাকে মোড়কায়নের ব্যবস্থা নিতে হবে।

৫. মোড়কায়নের পর পরিবহনের সময় সবজিতে যেন আঘাত না লাগে; সেজন্য বাক্সে করে চালান দেয়া উচিত। পরিবহনের সময় ট্রাকের ও ট্রেনের বগিতে পরিচ্ছন্নতা ও বাতাস চলাচলের বিশেষ ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন।

সূত্র: কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস)

এসি/ আই.কে.জে/


শীতের সবজি

খবরটি শেয়ার করুন