ছবি : সংগৃহীত
বর্তমান প্রজন্মের জনপ্রিয় খাবার হালিমের আগমন আরবদের হাত ধরে। শুধু রোজার মাস নয়, অন্য মৌসুমেও হালিমের রয়েছে বেশ কদর। তবে স্বাদে অতুলনীয় হওয়ায় কিছু হালিমের রয়েছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা। তেমন একটি হালিমের দোকানের নাম ‘পাগলা হালিম’।
রাজধানীর ফার্মগেটে আনন্দ সিনেমা হলের বিপরীত পাশ থেকে সামনে দশ কদম হাঁটতেই চোখে পড়বে বাবুর্চি ওলিউল্লাহ শেখের পাগলা হালিম। ১৩ বছর ধরে ফার্মগেট এলাকায় হালিম বিক্রি করছেন তিনি। ফুটপাতে খোলা আকাশের নিচে জমজমাট চলছে পাগলা হালিম। নিজ হাতে তৈরি এ হালিমের নাম ‘পাগলা হালিম’ মজা করেই রেখেছেন ওলিউল্লাহ।
সুস্বাদু হালিমের স্বাদ গ্রহণ করতে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসতে দেখা যায় ভোজন রসিকদের। প্রতিদিন বিকেল ৫টা থেকে বাড়তে থাকে মানুষের চাপ। তাই ভিড় সামলাতে রেখেছেন দুজন দক্ষ কর্মচারী। যারা একবার পাগলা হালিম খেয়েছেন; তারাও নিচ্ছেন আরেক বাটি। যে কারণে মাত্র ৪-৫ ঘণ্টায় শেষ হয়ে যায় মুখরোচক এই খাবার।
কয়েক জাতের ডাল, পোলাও চাল দিয়ে তৈরি করা হয় হালিমের ঝোল। গরুর মাথার মাংসের সঙ্গে কিছু সলিড মাংস, নলি আর কুড়কুড়ে হাড্ডির সঙ্গে মশলা মিশিয়ে বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি হয় এ হালিম। মাত্র ৩০ টাকা বিক্রি করা হয় এক বাটি। তবুও প্রতিদিন গড়ে ৫০ থেকে ৬০ কেজি হালিম বিক্রি করেন কয়েক ঘণ্টায়। ওলিউল্লাহর দৈনিক আয় গিয়ে দাঁড়ায় ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা।
আরো পড়ুন : চালের পোকা দূর করুন সহজ উপায়ে
তারপরও ওলিউল্লাহ আক্ষেপ করে বলেন, ‘সব কিছুর দাম বাড়লেও হালিমের দামে তেমন পরিবর্তন আসেনি। খরচ পুষিয়ে নিতে দাম ও গুণে ঠিক রেখে পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছি। আগে ফুল বাটি হালিম ৩০ টাকা বিক্রি করতাম। এখন হাফ বাটি একই দামে বিক্রি করি।’
ফার্মগেটের গণ্ডি পেরিয়ে এ হালিমেরে স্বাদ এখন শহরের বাইরে চলে গেছে। সমাজের উচ্চবিত্ত থেকে শুরু করে সীমিত আয়ের মানুষও পাগলা হালিমের ক্রেতা। অনেকেই কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে নিজে খেয়ে পার্সেল নিয়ে যান। এমনটিই জানালেন নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা খদ্দের সুমন বিশ্বাস।
যারা ওলিউল্লাহ শেখের পাগলা হালিম খেতে চান, তাদের প্রথমেই আসতে হবে ঢাকা শহরের ফার্মগেটে। ফার্মগেটমুখী যে কোনো বাসে চড়ে নামতে হবে আনন্দ সিনেমা হলের সামনে। এরপর যে কাউকে জিজ্ঞেস করলেই দেখিয়ে দেবে পাগলা হালিমের অবস্থান। এছাড়া শুধু ভিড় দেখেও ঘ্রাণ পাবেন পাগলা হালিমের।
এস/ আই. কে. জে/