মাহবুব কামাল
২০১৪ সালের ১৫ই আগস্ট উপলক্ষে দৈনিক যুগান্তরে 'হংসলতা বঙ্গবন্ধু' শিরোনামে যে কলামটি লিখেছিলাম, আজ সকালে সেটায় আবার চোখ বুলালাম। লিখেছিলাম, ডেনমার্কের যুবরাজ ছাড়া হ্যামলেট নাটক যেমন মঞ্চস্থ করা যায় না, তেমনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ছাড়া স্বাধীনতার ওপর নাটক বানিয়ে অন্তত ষাটোর্ধ্ব বাঙালিকে দর্শক সারিতে বসানো যাবে না। আরও লিখেছিলাম, বঙ্গবন্ধুর জন্ম ও বিকাশ রহস্য এক জৈব প্রহেলিকা।
কোথায় এবং কেন তিনি জন্মেছিলেন, কী বিচিত্র উপায়ে ও অবস্থায় তিনি জীবনের জ্বালানি সংগ্রহ করে, রৌদ্ররস ও বাতাস শোষণ করে এমন দুর্মর হয়ে উঠেছিলেন, বলা যাবে না। অনেক কথার পর শেষে লিখেছিলাম, বঙ্গবন্ধুকে তুলনা করা যেতে পারে হংসলতার সঙ্গে। প্রতিকূল শীতে শুকিয়ে গেলেও গোড়া সজীব থাকে, বর্ষার পানিতে তার গায়ে আবার গজায় নতুন সতেজ পাতা।
বঙ্গবন্ধু যে হৃদয়ে কতোটা গেঁথে আছেন, তার প্রমাণ পাওয়া গেছে। সকালে দেখেছি, আমার মতো সামান্য লোকের একটি দুই বাক্যের পোস্টের (ফেসবুক পোস্ট) লাইক ৩২০০, মন্তব্য ৮০০ এবং শেয়ার ২৫৫। সংখ্যাগুলো ক্রমেই বাড়ছে। দ্বিতীয় পোস্টেও তুমুল প্রতিক্রিয়া চলমান। হ্যাঁ, আমরা বঙ্গবন্ধুকে আর আওয়ামী লীগের একক সম্পত্তি হতে দেব না। গত শাসনামলে তার যে ক্ষতি করেছে আওয়ামী লীগ, বঙ্গবন্ধুর চরম বিরোধীরাও তা পারবে না।
আগামীতে যে দলই ক্ষমতায় আসবে, আমাদের প্রস্তাব থাকবে, রাজধানী ঢাকার নাম 'মুজিব সিটি' রাখার পর বাংলাদেশের আর কোথাও বঙ্গবন্ধুর কোনো স্মারক থাকবে না, এক চিলতেও নয়। ভিয়েতনামের সায়গন যেমন এখন হো চি মিন সিটি, আমেরিকার রাজধানী যেমন ওয়াশিংটন ডিসি, এই সূত্রে কোনো বিদেশি বাংলাদেশে প্রবেশ করলে প্রথমেই ঢুকবেন মুজিব সিটিতে।
অদ্ভুত কাণ্ড দেখেছি আমরা। একটা ছোট্ট পাড়া-মহল্লার ক্লাব, যেখানে খাওয়া হতো গাঁজা, তার নাম রাখা হয়েছিল বঙ্গবন্ধু ক্লাব! আসুন, আমরা সবাই বঙ্গবন্ধুকে দেশের সম্পদ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করি, কোনো দলের সম্পত্তি নয়।
লেখক: সাংবাদিক, কলামিস্ট।
খবরটি শেয়ার করুন