বৃহস্পতিবার, ২রা অক্টোবর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৭ই আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** হোগলাপাতার নান্দনিক সাজে পরিবেশবান্ধব পূজামণ্ডপ, মুগ্ধ দর্শনার্থীরা *** গ্রেটা থুনবার্গসহ গাজামুখী নৌবহরের বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে ইসরায়েল *** গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজন সুষ্ঠু নির্বাচন: আবদুল আউয়াল মিন্টু *** ইসরায়েলি যুদ্ধজাহাজ কাছাকাছি এলাকায়, গাজামুখী নৌবহরে হস্তক্ষেপের শঙ্কা *** বিমানবন্দরে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি, এম এ মালিককে সতর্ক করল বিএনপি *** অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চনের চিকিৎসা চলছে লন্ডনে *** ভারতে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টাকে অসুর রূপে উপস্থাপন নিন্দনীয় ও অসম্মানজনক: ধর্ম উপদেষ্টা *** স্বস্তি ফিরছে খাগড়াছড়িতে, যান চলাচল শুরু *** পুলিশের হাতে কামড় দিয়ে পালানো আসামি অবশেষে... *** ইসলামাবাদে বাংলাদেশ হাইকমিশনের নিজস্ব ভবনে কার্যক্রম শুরু

পুরুষের চেয়ে নারীরা বেশি ধর্মপ্রাণ, তারা ধর্মীয় কুসংস্কার মানবেন না

নিজস্ব প্রতিবেদক

🕒 প্রকাশ: ১২:৫৮ পূর্বাহ্ন, ২৮শে সেপ্টেম্বর ২০২৫

#

ফাইল ছবি

‘জামায়াত-শিবির বহুরুপী রাজনীতি করে। শেখ হাসিনার সরকারেও তারা ছাত্রলীগ করেছে। এখন দেশের সব সেক্টর তাদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। তাদের কারণে সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান ঘটছে। ফ্যাসিবাদের চেয়ে সাম্প্রদায়িক শক্তি বেশি খারাপ’—এসব কথা বলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। চ্যানেল আইয়ের ‘স্ট্রেইট কাট’ শিরোনামের একটি টকশো অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটির উপস্থাপক দীপ্তি চৌধুরী।

জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে বিএনপির তুলনা করে গয়েশ্বর রায় বলেন, ‘ওরা যখন যেখানে যে রূপ ধারণ করার দরকার, সেই রূপ ধারণ করতে পারে, যেটা আমরা (বিএনপি) পারি না। এটি ওদের কৌশল। ওরা ছাত্রলীগের পদ নিয়েও শিবির করেছে, এখন তো দেখছেনই সব। আমরা ডাকসুতে স্বনামে নির্বাচন করেছি। তাতে আমরা বুঝতে পারলাম যে, ছাত্রদলের গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু আছে। ছাত্রদল গত ১৬ বছর ক্যাম্পাসে যেতে পারেনি, ক্লাস করতে পারেনি, কিছুই করতে পারেনি।'

তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক শক্তি যদি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে, তাহলে আমাদের দেশ নিরাপদ থাকবে না, সমাজটা নিরাপদ থাকবে না, সেখানে নারী সমাজ নিরাপদ নয়। এমনকি সার্বভৌমত্ব নিরাপদ নয়। ফ্যাসিবাদের চেয়ে সাম্প্রদায়িক শক্তি বেশি খারাপ। অনেক বেশি খারাপ। জামায়াতের রাজনীতি বোরকা পরে থাকা, হিজাব পরে থাকা। ধর্মীয় কুসংস্কার নারীর প্রতিভা ও অধিকারকে বাধাগ্রস্ত করে, যা দেশের নারীরা মানবেন না।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান মনে করেন, 'জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন ও অন্যান্য ইসলামী দলগুলোর বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় অংশগ্রহণ করার অধিকার আছে কি না, তা একটি জরুরি প্রশ্ন। প্রশ্নটি রেডিক্যাল শোনালেও এ নিয়ে খোলামেলা ও যুক্তিপূর্ণ বিতর্ক প্রয়োজন। কিছু ইসলামী দল কোরআন‑সুন্নাহভিত্তিক শরিয়া আইন কায়েমের কথা বলছে। কেউ কেউ খেলাফত কায়েমের কথাও বলেন। এর মানে বিদ্যমান রাজনৈতিক ও নির্বাচনী কাঠামোকে তারা মেনে নেন না।'

তিনি বলেন, 'যদি কোনো দল গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় এসে নির্বাচনী ব্যবস্থা বাতিল করে একদলীয় শাসন কায়েম করে, তাহলে সেই দল কি জনগণের পক্ষ থেকে ক্ষমতা দখল করার ন্যায্যতা রাখে? উত্তর হবে- না। কারণ, নির্বাচনীব্যবস্থা নষ্ট করে ফেলা হলে জনগণের ভবিষ্যতে আর কোনো রকম সমন্বয় থাকবে না। যে দলগুলো শরিয়া প্রতিষ্ঠার কথা বলছে, তাদের স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে তারা কোন শরিয়া কায়েম করবেন, তা কীভাবে সংবিধান ও মানবাধিকার বিবেচনার সঙ্গে ফিট করে এবং নারীর অধিকার, দণ্ডবিধি ও অন্যান্য মানবাধিকারগত খুঁটিনাটি সম্পর্কে তাদের অবস্থান কী। শরিয়া কার্যকর অনেক রাষ্ট্রে নিরপেক্ষ, সর্বজনীন ভোটাধিকার ও মানবাধিকার‑সম্মত নির্বাচনব্যবস্থা নেই।'

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ‘স্ট্রেইট কাট’ অনুষ্ঠানে বলেন, 'এখন প্রশ্ন হচ্ছে, যে দলটা (বিএনপি) ১৬ বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘাসের ওপর পা বাড়াতে পারেনি, সেই দলের ছাত্রসংগঠন ছাত্রদল স্বনামে নির্বাচন করেছে। সুতরাং আমি মনে করি না যে আমরা ফেইল। কারণ ডাকসুর নির্বাচনের ৪৭ বছরে বিএনপি একবার জয় লাভ করেছে। তাতে বিএনপির ক্ষমতায় আসা আটকে থাকেনি।'

তিনি বলেন, 'জামায়াত দেশজুড়ে নিজেদের অবস্থান শক্ত করার চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত তারা সফল হবে না, এমনকী দেশের নারীরাও তাদের মানবেন না। আমি মনে করি, আমাদের নারী সমাজ সতর্ক। ধর্মীয় কুসংস্কারের কারণে নারীরা যে আবদ্ধ ছিলেন, অনেক কিছুতে যেতে পারেননি, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সাহস করে এসব থেকে নারী সমাজকে বের করে এনেছেন। পৃথিবীতে প্রথম পাইলট বাংলাদেশের নারী হয়েছেন জিয়াউর রহমানের আমলে। তিনি নারীদের সেনাবাহিনীতে নিয়েছেন, তিনি পুলিশে নিয়েছেন।'

তিনি বলেন, 'জামায়াতের রাজনীতি বোরকা পরে থাকা, হিজাব পরে থাকা। নারী পুলিশ অফিসার কি হিজাব পরে পুলিশে চাকরি করছেন? তারা পুরুষের মতো রাস্তায় হাঁটছেন না? আজকে নারীরা সব জায়গায় তাদের মেধা ও যোগ্যতা দিয়ে পুরুষদের হার মানাচ্ছেন না? অনেক জায়গায় তাদের প্রতিভার বিকাশ ঘটছে। ধর্মীয় কুসংস্কার দিয়ে নারীর প্রতিভা, অধিকারকে বাধাগ্রস্ত করা, এটা তো নারীরা মানবেন না। আমাদের দেশের নারী সমাজ যেই ধর্মেরই হোক, পুরুষের চেয়ে তারা বেশি ধর্মপ্রাণ। এই নারীরা রোজার মধ্যে রান্না করেন, ইফতার তৈরি করেন, রোজাও রাখেন। নিষ্ঠার সঙ্গে এসব তারা করেন। সেই নারীকে আপনি নানা অধিকার থেকে বঞ্চিত করবেন, এটা কি নারী সমাজ মানবে?’

গয়েশ্বর রায় আরো বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক শক্তি যদি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে, তাহলে আমাদের দেশ নিরাপদ থাকবে না, সমাজটা নিরাপদ থাকবে না, সেখানে নারী সমাজ নিরাপদ নয়। এমনকি সার্বভৌমত্ব নিরাপদ নয়। ফ্যাসিবাদের চেয়ে সাম্প্রদায়িক শক্তি বেশি খারাপ। অনেক বেশি খারাপ।'

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের ব্যাপারে গয়েশ্বর বলেন, ‘কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করে সমস্যার সমাধান হয় না। রাজনৈতিক দল প্রাণবন্ত হয়, শক্তি সঞ্চয় করে জনগণের ইচ্ছায়। একসময়ের দাপুটে দল ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির এখন কোথাও সাইনবোর্ড পাওয়া যায় না। ইউনাইটেড পিপলস পার্টিকে এখন হারিকেন দিয়ে খুঁজে পাওয়া যায় না। তাই নয় কি? সুতরাং সবচেয়ে বড় জিনিস হলো সঠিকভাবে গণতান্ত্রিক চর্চা থাকলে পিপলস উইল ডিসাইড, যে কে দেশের জন্য প্রয়োজন, কে প্রয়োজন না।'

তিনি বলেন, 'জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করেনি আওয়ামী লীগ? জামায়াত কি চলে গেছে? জামায়াত তো দাপটে আছে, মনে হয় ক্ষমতায় আছে ওরাই। যেকোনো প্রশাসনে যাবেন, যেখানেই যাবেন, রদবদলে যাবেন- জামায়াতের কথার বাইরে নড়েচড়ে না। স্বাস্থ্য খাত নড়েচড়ে না। শিক্ষা খাত নড়েচড়ে না। সব ভিসি জামায়াতের। এই ১৭ বছর এত জামায়াত শেখ হাসিনার আচলের ছায়ায় কিভাবে থাকল?’

গয়েশ্বর চন্দ্র রায়

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন

Footer Up 970x250