ছবি: সংগৃহীত
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, প্রবাসী সাংবাদিক ও কিছু বাঙালি নাগরিক ষড়যন্ত্রে নেমেছে। তারাই জোর করে যুক্তরাষ্ট্রকে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে কথা বলতে বাধ্য করছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে প্রতিদিনই যুক্তরাষ্ট্রের মন্তব্য আসছে, কারণ কিছু বাংলাদেশি সাংবাদিকরা জোর করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মার্কিন কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করছেন।
আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভা চলছে। শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) সকালে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে এসব কথা বলেন মোমেন।
জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক বক্তব্যগুলোর প্রসঙ্গে টেনে মোমেন বলেন, তাদের সেসব পরামর্শ বিবেচনা করে গ্রহণযোগ্য হলে আমরা নেব।
গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশে সহিংসতার বিষয়টি উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সেদিন বিএনপির উদ্দেশ্যই ছিল জ্বালাও-পোড়াও। তারা হাসপাতালেও আক্রমণ করেছে। সাধারণ মানুষের জানমাল নষ্ট করেছে।
এ সময় বিএনপিকে উপনিবেশিক আচরণ বাদ দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনে আসার আহ্বান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন।
নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতা কমছে, সহিংসতা বন্ধে সব দলকে ইচ্ছা ও আন্তরিকতা প্রদর্শন করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
তিনি বলেন, আমরা কাউকে নির্বাচনে বাধা দিতে দেব না। সহিংসতা বন্ধে সব দলের ইচ্ছা ও আন্তরিকতা থাকতে হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, আওয়ামী লীগ কখনো সংলাপে পিছপা হয়নি। আওয়ামী লীগ নির্বাচনমুখী দল।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা নির্বাচন চাই। আর এই নির্বাচনে যদি কোনো বন্ধু রাষ্ট্র সহায়কের ভূমিকা পালন করে, তাহলে তাদেরকে আমরা স্বাগত জানাব।
ড. মোমেন বলেন, আমাদের বিরোধী দল বিএনপি ২৮ অক্টোবর শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করার ঘোষণা করেছিল। কিন্তু সেখানে তাদের মূল লক্ষ্যই ছিল জ্বালাও-পোড়াও করা। তারা বিচারকদের বাসভবনে জ্বালাও-পোড়াও করল, হাসপাতালেও জ্বালাও পোড়াও করল, সাধারণ জনগণের প্রায় ১৫৪টি বাস পোড়াল। বাসের মালিক তো সরকার না।
তিনি বলেন, আমরা আশা করব, যে বিপদগামী দলগুলো আছে তারা পরিপক্কতা অর্জন করে নির্বাচনমুখী হবে। যাতে আমরা শান্তিপূর্ণ মডেল নির্বাচন করতে পারি।
এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায় এবং বাংলাদেশেরও একই প্রতিশ্রুতি রয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে প্রতিদিনই যুক্তরাষ্ট্রের মন্তব্য আসছে, কারণ কিছু বাংলাদেশি সাংবাদিকরা জোর করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মার্কিন কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করছেন।
মোমেন বলেন, এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে তারা নিজেদের দেশকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে।
ড. মোমেন বলেন, আওয়ামী লীগ সবসময় নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে, পেছনের দরজা দিয়ে আসেনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের মানবাধিকার নিয়ে কেনো কথা বলে না? শুধু বাংলাদেশ নিয়ে কথা বলে কেন? যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আমাদের ৫০ বছরের সম্পর্ক। বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। এ জন্য তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে থাকে।
এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ফরেন সার্ভিস স্পাউজ অ্যাসোসিয়েশন (এফওএসএ) আয়োজিত 'ইন্টারন্যাশনাল চ্যারিটি বাজার'-এ প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন। এ সময় ঢাকায় অবস্থানরত কূটনীতিক এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এসকে/
খবরটি শেয়ার করুন