ছবি: সংগৃহীত
বিশ্বজুড়ে মেডিটেরানিয়ান অর্থাৎ ভূমধ্যসাগরের আশপাশের এলাকার প্রচলিত খাদ্যাভ্যাসকে স্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই ডায়েট মেনে চলা সম্ভব আমাদের দেশেও। তবে ওজন কমাতে কি মেডিটেরানিয়ান ডায়েট কাজে দেবে?
এই ডায়েটে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয় উদ্ভিজ্জ উপাদানে। এই ডায়েট গ্রহণ করতে হলে যে আপনাকে পুরোপুরি নিরামিষাশী হয়ে যেতে হবে, ব্যাপারটা কিন্তু তেমন নয়। বরং এটি এমন এক ভারসাম্যপূর্ণ খাদ্যাভ্যাস, যা আপনি নিজের সুবিধা অনুযায়ী সাজিয়ে নিতে পারবেন। ধরাবাঁধা কিছু খাবারের মধ্যে আপনাকে সীমাবদ্ধ থাকতে হবে না। এই ডায়েটে যে বৈচিত্র্যময় খাবার রয়েছে, তা থেকে নানা কিছু বেছে নিতে পারবেন।
মেডিটেরানিয়ান ডায়েটে যা খেতে পারেন
ফলমূল, সবজি, নানা রকম ডাল, বীজ আর বাদাম খাওয়া যায়। গোটা শস্য অর্থাৎ যা পরিশোধিত বা রিফাইনড নয়, সেসবও এই ডায়েটের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যেমন ওটস, যব, লাল চাল কিংবা লাল আটার তৈরি খাবার খাওয়া যায়। ডিম, দুধ ও মুরগির মাংসও খাওয়া যায় পরিমিত পরিমাণে। মাছ ও সামুদ্রিক খাবার খাওয়া হয় সপ্তাহে অন্তত দুই দিন। নাশতা হিসেবে বেছে নেওয়া যায় বাহারি সালাদ। খাবারকে সুস্বাদু করতে নানা ধরনের পাতা ও মসলার ব্যবহার হয় এ ধরনের ডায়েটে। ফলের রস ও চা-কফি খেতেও বারণ নেই। জলপাই তেলের মতো স্বাস্থ্যকর তেল ব্যবহার করা হয় রান্নাবান্নায়।
মেডিটেরানিয়ান ডায়েটে যা এড়িয়ে চলতে হবে
লাল মাংস (যেমন গরু বা খাসির মাংস) এড়িয়ে চলা আবশ্যক। চর্বি, মাখন, মেয়নেজ, ডালডাও বর্জনীয়। রিফাইনড বা পরিশোধিত শস্যদানা ও প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলা হয় যতটা সম্ভব। বাড়তি লবণ খাওয়া বারণ। সালাদ বা ফল মাখানোর সময়ও লবণ ব্যবহারের চল নেই। চিনি মেশানো যেকোনো পানীয় এড়িয়ে চলতে হয়।
আরো পড়ুন : বিকেলে ঘুমানো স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নাকি খারাপ
ওজন কমাতে মেডিটেরানিয়ান ডায়েট কি কার্যকর
এটি এমন এক খাদ্যাভ্যাস, যেখানে অস্বাস্থ্যকর বহু খাবার এড়িয়ে স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করা হয়। এই ধারায় জীবনযাপন করলে উচ্চ ক্যালরি-সম্পন্ন খাবার গ্রহণ থেকে নিজেকে বিরত রাখা সহজ। লাল মাংস, চর্বিজাতীয় খাবার, চিনি, পরিশোধিত শস্য, প্রক্রিয়াজাত খাবার—এসবই তো ওজন বাড়ার জন্য অধিকাংশ ক্ষেত্রে দায়ী। এসব এড়িয়ে যদি আপনি গ্রহণ করেন শাকসবজি, ফলমূল বা গোটা শস্যের তৈরি খাবার, তাহলে পাবেন পর্যাপ্ত আঁশ। এই আঁশ হজম হতে বেশ সময় লাগে। তাই আঁশসমৃদ্ধ খাবার খেলে আপনার সহজে ক্ষুধা পাবে না। উচ্চ ক্যালরিসম্পন্ন নাশতার বদলে এখানে রয়েছে বাদাম কিংবা বীজের মতো খাবার, ফলমূল ও সালাদ। বুঝতেই পারছেন, সব মিলিয়ে এই ধারায় ওজন বাড়ার ঝুঁকি কম। অর্থাৎ আপনি একটা নির্দিষ্ট ওজন বজায় রাখতে পারবেন।
শুধু তা–ই নয়, আপনি যদি ক্যালরি গ্রহণের মাত্রা সীমিত রাখতে পারেন, তাহলে ওজনও কমাতে পারবেন এই খাদ্যাভ্যাসে।
এস/ আই.কে.জে/