ছবি - সংগৃহীত
শিক্ষকদের নিরাপত্তা প্রদান ও হেনস্থা বন্ধের দাবিতে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় মাধ্যমিক পর্যায়ের ৭৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি। তারা বলেছেন, কিছু অসাধু চক্র স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ফুঁসলিয়ে ও ব্যবহার করে উপজেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের ওপর অন্যায়, নির্যাতন, অপমান, হেনস্থা এবং জোরপূর্বক পদত্যাগের চেষ্টা করেছেন। কোনো প্রতিকার না পেয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি। এসব অভিযোগ শুধু সংশ্লিষ্ট এলাকায়ই সীমাবদ্ধ নয়, সারা দেশেই এখন এই চিত্র।
ক্ষমতার পটপরিবর্তনের সাথে সাথেই দেশের শিক্ষাঙ্গনে অস্থিরতার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রতিষ্ঠান প্রধানসহ টার্গেট করে ভালো শিক্ষকদের জোরপূর্বক পদত্যাগ করার ঘটনা অহরহ ঘটছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান কিংবা কোনো শিক্ষক যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করে থাকেন, তাহলে পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করতেই পারেন। কিন্তু তারা জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করতে পারেন না। একজন শিক্ষক যদি অপরাধ করে থাকেন তাহলে তাকে পদত্যাগ কিংবা চাকরিচ্যুতির জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষ কিংবা দেশের প্রচলিত আইন আছে। কিন্তু জোরজবরদস্তি ও অপমান করে পদত্যাগে বাধ্য করার বিষয়টি সম্পূর্ণরূপে বেআইনি। অথচ বিগত এক মাস যাবৎ এই ধরনের অঘটনই ঘটে চলছে। যা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কলেজ-স্কুল পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ছে।
দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দখলদারিত্বকে চর দখলের সাথে তুলনা করে শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন,‘আমরা লক্ষ করছি, স্কুল–কলেজ থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে চর দখলের মতো দখলদারি প্রতিষ্ঠার একটা অরাজকপূর্ণ বা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। শিক্ষকরা অপমানিত ও লাঞ্ছিত হচ্ছেন। তাদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। জোর করে তাদের পদত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষকরা ব্যক্তিগত স্বার্থে ছাত্রদের ব্যবহার করছেন, সেটা খুবই দুঃখজনক। এটা খুবই অনভিপ্রেত একটি বিষয় এবং এটা যে শুধু শিক্ষাঙ্গনের পবিত্রতা ও ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর তা–ই নয়, কোনো কোনো ক্ষেত্রে এটা ফৌজদারি অপরাধও।’
বিগত সরকারের সময়ে অনেকেই মেধা ও যোগ্যতা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন, আবার কিছু লোক হয়তো রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে নিয়োগ পেয়েছেন। কিন্তু উভয় শ্রেণিকে একই কাতারে ফেলে ব্যক্তিগত আক্রোশে পদত্যাগে বাধ্য করা মোটেও কাম্য নয়। এ ধরনের ঘটনা বন্ধ ও দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে গোটা শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে।
শিক্ষা একটি জাতির অত্যাবশ্যকীয় বিষয়। শিক্ষা ছাড়া কোনো জাতির অগ্রগতি সম্ভব নয়। শিক্ষার মাধ্যমে একটি পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র আলোকিত হয়ে ওঠে। শুধু ক্রোধের বশবর্তী হয়ে শিক্ষকদের অপমান কিংবা পদত্যাগে বাধ্য করা জাতির জন্য অশনিসংকেত।
আই.কে.জে/
খবরটি শেয়ার করুন
ক্ষমতার পটপরিবর্তনের সাথে সাথেই দেশের শিক্ষাঙ্গনে অস্থিরতার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রতিষ্ঠান প্রধানসহ টার্গেট করে ভালো শিক্ষকদের জোরপূর্বক পদত্যাগ করার ঘটনা অহরহ ঘটছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান কিংবা কোনো শিক্ষক যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করে থাকেন, তাহলে পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করতেই পারেন। কিন্তু তারা জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করতে পারেন না। একজন শিক্ষক যদি অপরাধ করে থাকেন তাহলে তাকে পদত্যাগ কিংবা চাকরিচ্যুতির জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষ কিংবা দেশের প্রচলিত আইন আছে। কিন্তু জোরজবরদস্তি ও অপমান করে পদত্যাগে বাধ্য করার বিষয়টি সম্পূর্ণরূপে বেআইনি। অথচ বিগত এক মাস যাবৎ এই ধরনের অঘটনই ঘটে চলছে। যা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কলেজ-স্কুল পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ছে।
দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দখলদারিত্বকে চর দখলের সাথে তুলনা করে শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন,‘আমরা লক্ষ করছি, স্কুল–কলেজ থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে চর দখলের মতো দখলদারি প্রতিষ্ঠার একটা অরাজকপূর্ণ বা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। শিক্ষকরা অপমানিত ও লাঞ্ছিত হচ্ছেন। তাদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। জোর করে তাদের পদত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষকরা ব্যক্তিগত স্বার্থে ছাত্রদের ব্যবহার করছেন, সেটা খুবই দুঃখজনক। এটা খুবই অনভিপ্রেত একটি বিষয় এবং এটা যে শুধু শিক্ষাঙ্গনের পবিত্রতা ও ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর তা–ই নয়, কোনো কোনো ক্ষেত্রে এটা ফৌজদারি অপরাধও।’
বিগত সরকারের সময়ে অনেকেই মেধা ও যোগ্যতা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন, আবার কিছু লোক হয়তো রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে নিয়োগ পেয়েছেন। কিন্তু উভয় শ্রেণিকে একই কাতারে ফেলে ব্যক্তিগত আক্রোশে পদত্যাগে বাধ্য করা মোটেও কাম্য নয়। এ ধরনের ঘটনা বন্ধ ও দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে গোটা শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে।
শিক্ষা একটি জাতির অত্যাবশ্যকীয় বিষয়। শিক্ষা ছাড়া কোনো জাতির অগ্রগতি সম্ভব নয়। শিক্ষার মাধ্যমে একটি পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র আলোকিত হয়ে ওঠে। শুধু ক্রোধের বশবর্তী হয়ে শিক্ষকদের অপমান কিংবা পদত্যাগে বাধ্য করা জাতির জন্য অশনিসংকেত।
আই.কে.জে/