ছবি: সংগৃহীত
আন্দোলন যখন তীব্র হচ্ছিল, আমাদের ভাইয়েরা যখন মারা যাচ্ছিল একের পর এক—এসব দেখে বাসায় বসে থাকতে পারিনি। আমাদের স্কুলের সামনে আন্দোলন করেছি। এরপর অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে পরীক্ষাও দিয়েছি। প্রত্যাশা অনুযায়ী জিপিএ-৫ পেয়েছি।
এইচএসসির ফলাফল প্রকাশের পর রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে নিজের অনুভূতির কথা গণমাধ্যমকে জানান জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী ঐশ্বর্য।
সদ্য পাস করা এই শিক্ষার্থী গণমাধ্যমকে বলেন, অনেক শিক্ষার্থী এই আন্দোলনে হতাহত হয়েছে। অনেকে পরীক্ষায় বসতেও পারেনি, তারা থাকলে এখন আনন্দ করতে পারতো। তাদের জন্য খুবই খারাপ লাগছে। আমাদের এক ক্লাসমেটের পায়ে গুলি লেগেছিল।
ঐশ্বর্য বলেন, এই রেজাল্টের পেছনে আমার মা আর ভাইয়ের অবদান অনেক বেশি। আমার বাবা নেই। মা-ভাই সবসময় গাইড করেছে। এখন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। বুয়েটে পড়ার আশা আছে।
এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৫ই অক্টোবর) বেলা ১১টায় স্ব স্ব বোর্ডের ওয়েবসাইট ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একযোগে এ ফল প্রকাশ করা হয়।
গত ৩০শে জুন এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয়। প্রথম প্রকাশিত রুটিন অনুযায়ী ৮ দিন পরীক্ষা হওয়ার পর কোটাসংস্কার আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ১৮ই জুলাইয়ের সব পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। এরপর তিন দফায় পরীক্ষা স্থগিত করে সরকার।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ই আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ১১ই আগস্ট থেকে নতুন সময়সূচিতে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তবে স্থগিত পরীক্ষাগুলো না নিতে আন্দোলনে নামেন একদল পরীক্ষার্থী।
তাদের দাবি ছিল, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরীক্ষা বন্ধ থাকার বিষয়টি তাদের মানসিক চাপে ফেলেছে। তাই অবশিষ্ট পরীক্ষাগুলো বাতিল করতে হবে। একপর্যায়ে পরীক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে স্থগিত পরীক্ষাগুলো বাতিল করা হয়।
বাতিল পরীক্ষাগুলোতে এসএসসি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীর প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে এইচএসসিতেও একই নম্বর দিয়ে ফল তৈরি করেছে শিক্ষা বোর্ড। তাছাড়া বিভাগ ও বিষয়ে মিল না থাকলে সেক্ষেত্রে সাবজেক্ট ম্যাপিং নীতিমালা অনুসরণ করা হয়েছে।
ওআ/ আই.কে.জে/