ছবি : সংগৃহীত
ছোটখাট সঞ্চয় মধ্যবিত্তের সংসারে হয়ে ওঠে সম্বল। ‘রেইনি ডে ফান্ড’ হলো এমন এক সঞ্চয়, যা আকস্মিক বাড়তি খরচ সামলাতে আপনাকে সাহায্য করবে। দুর্দিনে তো বটেই, সংসারের প্রয়োজনে হঠাৎ বাড়তি খরচ মেটাতেও দারুণ কাজে আসে এই সঞ্চয়। তাই ‘রেইনি ডে ফান্ড’ গড়ে তুলুন ঘরে ঘরে।
জীবনযাপনের ব্যয় বাড়ছে। নৈমিত্তিক প্রয়োজন মেটাতেই হিমশিম খাচ্ছেন অনেকে। এর মধ্যে সঞ্চয় দাঁড় করানো অনেকটাই কঠিন। তারপরও প্রতিটি পরিবারের উচিত এমন একটি সঞ্চয় গড়ে তোলা। কেন এই সঞ্চয় গড়া প্রয়োজন, তা উপলব্ধি করলে অবশ্যই আপনি এ ব্যাপারে আরও উৎসাহী হয়ে উঠবেন। মাসের শুরু থেকেই খানিকটা সঞ্চয়ের প্রচেষ্টা থাকবে আপনার।
মাসকাবারি বাজার, বাড়ি ভাড়া, ইউটিলিটি বিল বা দৈনন্দিন যাতায়াত খরচের বাইরে হুট করেই বাড়তি খরচের বোঝা চেপে বসতে পারে একটি পরিবারের ওপর। এমন কয়েকটি ঘটনার কথা ভেবে দেখুন।
ঘটতেই পারে এমন কিছু
হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন পরিবারের কোনো সদস্য। এমন পরিস্থিতিতে চিকিৎসাব্যায়, পরীক্ষানিরীক্ষা ও ওষুধপথ্যের খরচ—সব মিলিয়ে খরচের পাল্লাটা খুব হালকা না-ও হতে পারে। আকস্মিক দুর্ঘটনায় পড়তে পারেন যে কেউ। সেক্ষেত্রেও শারীরিক এবং মানসিক কষ্টের সঙ্গে যোগ হতে পারে এই বাড়তি খরচের চাপ। সন্তানের পড়ালেখার বাঁধাধরা খরচের বাইরেও হঠাৎ যেকোনো একটা বাড়তি প্রয়োজন দেখা দিতে পারে। হুট করে বাড়ির দৈনন্দিন প্রয়োজনে ব্যবহৃত কোনো ইলেকট্রনিক সামগ্রী মেরামত করার প্রয়োজন দেখা দিতে পারে। জরুরি প্রয়োজনে বাড়ির দূরে কোথাও যাতায়াত করতে হলে এর সঙ্গেও আসতে পারে খরচের ধাক্কা।
আরো পড়ুন : গরমে ফুরফুরে থাকতে খান আমলকি!
প্রয়োজন মেটাতে গিয়ে পিছিয়ে পড়বেন না তো?
এমন যেকোনো কারণে যদি হঠাৎ বাড়তি খরচ করতে হয়, তা সামলাতে মুশকিলে পড়তেই পারেন আপনি। এমন মানুষের দলে আপনি একা নন। পৃথিবীজুড়েই বহু মানুষ আছে এই দলে। প্রয়োজনের মুহূর্তের জন্য প্রস্তুত থাকা আপনার জীবনযুদ্ধেরই একটা অংশ। লড়াই করে টিকে থাকার আরেক নামই তো জীবন। এই লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুতি না থাকলে আপনি যেভাবে বিপদে পড়তে পারেন—
আপনি হয়তো ভাবতে পারেন, প্রয়োজন হলে ধার নিয়ে কাজ চালাবেন। কিন্তু এটি ভালো সমাধান নয়। ধারকর্জ করে চলতে গেলে জীবন আরও কঠিন হয়ে পড়ে। সুদের ভিত্তিতে ধার নিতে হলে ধার শোধ করতে করতেই জেরবার হয়ে পড়বেন আপনি। কাছের মানুষের থেকে বিনা সুদে ধার নেবেন? বিপদে পড়লে অমন উদার মানুষ খুঁজে পাওয়াও কিন্তু মুশকিল হয়ে দাঁড়ায়। কারও কারও আবার ধার দেওয়ার ইচ্ছা থাকলেও সামর্থ্য থাকে না। আবার কাছের মানুষের থেকে ধার নিতে পারলেও তা শোধ করতে দেরি হলে মনোমালিন্যের আশঙ্কা থাকে।
সঞ্চয় না থাকলে বিপদের মুহূর্তে মানসিকভাবেও পিছিয়ে পড়বেন আপনি। বাড়তি চাপ অনুভব করবেন। কোথায় যাবেন, কাকে বলবেন, কী করবেন—এমন বহু প্রশ্নে জর্জরিত হয়ে পড়বে আপনার অন্তর। দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না। এমন পরিস্থিতিতে বিপদ কাটানোর উপায় খুঁজতে গিয়েই দ্বিধান্বিত হয়ে পড়তে পারেন আপনি।
তাই চাই সঞ্চয়
এমন বিপর্যয় এড়াতে চাইলে প্রতি মাসেই কিছু টাকা জমিয়ে রাখুন। পরিবারের প্রয়োজন বুঝে টাকার অঙ্কটা নির্ধারণ করুন। প্রতিজ্ঞা করুন, যথার্থ প্রয়োজন ছাড়া কখনোই এই সঞ্চয়ে হাত দেবেন না। এমন কোথাও সঞ্চয় করুন, যাতে প্রয়োজন হলেই আপনি তা ব্যবহার করতে পারেন। যিনি বা যারা পরিবারের অর্থনৈতিক চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেন, সঞ্চয়ের ভার কিন্তু কেবল তাদের ওপরেই বর্তায় না। পরিবারের বাকিদেরও খরচের বিষয়ে সচেতন হয়ে ওঠা প্রয়োজন। নইলে পরিবারের জন্য সঞ্চয় গড়ে তোলা আরও কঠিন হয়ে ওঠে।
সূত্র: ফোর্বস অ্যাডভাইজর
এস/ আই.কে.জে/