ছবি: সংগৃহীত
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশে জুলাই চার্টার বাস্তবায়নের পর চলতি বছরের ডিসেম্বরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন হতে পারে।
বৃহস্পতিবার (১৩ই ফেব্রুয়ারি) সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে ‘ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্টস সামিটে’ (বিশ্ব সরকার সম্মেলন- ডব্লিউজিএস) যোগ দিয়ে সিএনএনের সাংবাদিক বেকি অ্যান্ডারসনের সঞ্চালনায় এক অধিবেশনে তিনি এসব কথা জানান।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আমরা ১৫টি খাতের জন্য সংস্কার কমিশন গঠন করেছি। আইন-শৃঙ্খলা, পুলিশ, সংবিধান ও নির্বাচনসহ অন্যান্য সংস্কার কমিশনগুলো প্রতিবেদন তৈরি করেছে। তারা বিভিন্ন ধরনের সুপারিশ করছে। এখন আমরা যেটা করবো, সেটা হলো ঐকমত্য গঠন।
তিনি বলেন, আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসছি। যেসব সুপারিশের বিষয়ে সবাই একমত পোষণ করবে, সেগুলো নিয়ে আমরা একটা সনদ তৈরি করবো। আমরা সেগুলো বাস্তবায়ন করে নির্বাচন দেবো। যত দ্রুত সম্ভব আমরা নির্বাচন দেবো। এটা এ বছরের ডিসেম্বরেও হতে পারে।
ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশের সবকিছু ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। আমরা একটু একটু করে সব গুছিয়ে নিচ্ছি। এই হলো আমাদের অবস্থা। অর্থনীতি, সমাজ ও প্রশাসন সবকিছু ভেঙে পড়েছিল। আমাদের কাজ এই সবকিছু পুনর্গঠন। যেমন, ব্যাংকিং ব্যবস্থা পুরোপুরি ধসে গিয়েছিল। ব্যাংকগুলো থেকে ১৬ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়ে গেছে। আমাদের রিজার্ভ তলানিতে চলে গেছে। প্রথমত অর্থনীতি, দ্বিতীয়ত আইন-শৃঙ্খলা, এরপর প্রতিষ্ঠানগুলো ঠিক করতে হবে।
নির্বাচন শেষে আরও কিছু সময় নেতৃত্বে থাকার ইচ্ছা সম্পর্কে জানতে চাইলে ড. ইউনূস বলেন, আমি এটা আগেও স্পষ্ট করে বলেছি। নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের পর আমি যে কাজে ছিলাম, সেখানেই ফিরে যাব। কারণ আমি সে কাজেই আনন্দ পাই।
বিশ্বব্যাপী শীর্ষস্থানীয় সরকারি নেতাদের মর্যাদাপূর্ণ এই বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দেওয়ায় প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনার উপস্থিতি এই সমাবেশকে আরও উজ্জ্বল করেছে।’
ইউএই’র স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আপনার মতো বরেণ্য ব্যক্তির কাছ থেকে শিখি।’ এ সময়ে উভয় নেতা ডব্লিউজিএসের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন।
মোহাম্মদ আল ওয়াইস বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ এ সময়ে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে অভিনন্দন জানান। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদে বাংলাদেশ ও সংযুক্ত আরব-আমিরাতের সম্পর্ক আরও গভীর হবে এবং আগামী বছরগুলোতে উভয় দেশ ব্যবসা-বাণিজ্য ও স্বাস্থ্য খাতে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়াবে।
হা.শা./কেবি