প্রতীকী ছবি
ভারতের মহারাষ্ট্রে চলন্ত বাসে সন্তান প্রসব করেন ১৯ বছর বয়সী এক তরুণী। এরপর নবজাতক সেই শিশুকে ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয় বাস থেকে। সেখানেই শিশুটি মারা যায়। তবে ওই তরুণী ও বাসে থাকা এক ব্যক্তির দাবি, শিশুটির বাবা তাকে বাইরে ফেলে দিয়েছে। খবর এনডিটিভির।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, পুলিশ জানিয়েছে—মহারাষ্ট্রের পরবনিতে চলন্ত স্লিপার কোচের ভেতরে ১৯ বছরের এক তরুণী সন্তান প্রসব করেন। কিন্তু পরে ওই তরুণীর স্বামী শিশুটিকে জানালা দিয়ে বাইরে ছুড়ে ফেলেন বলে দাবি করেছেন ওই তরুণী এবং বাসের আরেক ব্যক্তি। ফেলে দেওয়ার পরপরই শিশুটি মারা যায়।
স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার (১৫ই জুলাই) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে পাটরি-সেলু সড়কে এ ঘটনা ঘটে। এক প্রত্যক্ষদর্শী পথচারী লক্ষ করেন, বাস থেকে কাপড়ে মোড়া কিছু একটা ফেলা হয়েছে। সন্দেহ হলে তিনি পুলিশে খবর দেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই নারীর নাম ঋত্বিকা ধোরে। তার সঙ্গে থাকা ও স্বামী পরিচয় দেওয়া ব্যক্তির নাম আলতাফ শেখ। তারা পুনে থেকে পরবনির উদ্দেশে সান্ত প্রয়াগ ট্রাভেলসের স্লিপার কোচে ভ্রমণ করছিলেন। পথে গর্ভবতী ঋত্বিকার প্রসব বেদনা শুরু হয় এবং তিনি একটি পুত্রসন্তান প্রসব করেন। এরপর নবজাতকটিকে একটি কাপড়ে জড়িয়ে জানালা দিয়ে বাইরে ছুড়ে ফেলা হয়।
বাসচালক জানান, বাসটি স্লিপার কোচ এবং ওপরে-নিচের বার্থগুলো আলাদা। তাই ভেতরে কী হয়েছে তিনি জানেন না, কিন্তু তিনি জানালা দিয়ে কিছু একটা পড়তে দেখেন। জিজ্ঞেস করলে আলতাফ শেখ বলেন, তার স্ত্রী বাসযাত্রার ধকল সহ্য করতে না পেরে বমি করেছেন।
এদিকে রাস্তায় থাকা এক ব্যক্তি বাস থেকে ছোড়া বস্তুটি পরীক্ষা করে দেখেন, সেটি একটি শিশু। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশে ফোন করে জানান। তৎক্ষণাৎ টহলরত স্থানীয় পুলিশ বাসটি থামিয়ে তদন্ত শুরু করে এবং ঋত্বিকা ও আলতাফকে আটক করে। তারা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানান, শিশুটিকে লালন-পালনের সক্ষমতা না থাকায় তারা তাকে ফেলে দিয়েছেন।
পুলিশ জানায়, ঋত্বিকা ও আলতাফ দুজনই পরবনির বাসিন্দা, তবে গত দেড় বছর ধরে পুনেতে থাকছিলেন। তারা নিজেদের স্বামী-স্ত্রী দাবি করলেও এর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। আটকের পর ঋত্বিকাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার পর পাটরি থানায় ভারতীয় দণ্ডবিধির বিএনএস ধারার ৯৪ (৩), ৯৪ (৫) ধারায় (গোপনে নবজাতককে ফেলে দেওয়ার মাধ্যমে জন্ম গোপন করা) মামলা করা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে নোটিশ জারি করা হয়েছে এবং তদন্ত চলমান বলে জানিয়েছে পুলিশ।
জে.এস/
খবরটি শেয়ার করুন