ছবি: সংগৃহীত
সাম্প্রতিক অস্থিরতায় সরকার পতনের প্রেক্ষাপটে নেপালে অন্তর্বর্তী সরকারে প্রধানের দায়িত্ব পেয়েছেন সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি। তাকে নিয়ে এখন চলছে নানা আলোচনা। তবে একটি চমকপ্রদ তথ্য অনেকেই জানেন না। অর্ধশত বছর আগে আলোচিত একটি বিমান ছিনতাইয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তার স্বামী। তবে সেটা ছিল সশস্ত্র রাজনৈতিক সংগ্রামের অংশ হিসেবে। খবর এনডিটিভির।
সুশীলা কার্কির স্বামীর নাম দুর্গা প্রসাদ সুবেদী। ১৯৭৩ সালে নেপালি কংগ্রেসের সশস্ত্র আন্দোলনের অর্থ সংগ্রহের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বিমান ছিনতাইয়ের নেতৃত্ব দেন তিনি। সেটির পুরো পরিকল্পনার মূল নকশা করেছিলেন গিরিজা প্রসাদ কৈরালা, যিনি পরে চারবার নেপালের প্রধানমন্ত্রী হন। এর প্রধান উদ্দেশ্য ছিল রাজা মহেন্দ্রের শাসন ও নেপালের পঞ্চায়েত ব্যবস্থা উৎখাত করে বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার সশস্ত্র আন্দোলনের জন্য অর্থ সংগ্রহ করা।
সেটিই নেপালের ইতিহাসে প্রথম বিমান ছিনতাই। ‘বিরাটনগর প্লেন হাইজ্যাক’ নামে পরিচিত ঘটনাটি ঘটে ১৯৭৩ সালের ১০ই জুন। সেদিন ভারতের বিহার থেকে ৩০ লাখ ভারতীয় রুপি দেশে নিচ্ছিল নেপাল রাষ্ট্র ব্যাংক। মুদ্রাগুলো প্রথমে স্থলপথে নেপালের সীমান্তবর্তী বিরাটনগরে নেওয়া হয়। সেখান থেকে রয়্যাল নেপাল এয়ারলাইনসের ডিএইচসি-৬ বিমানে রাজধানী কাঠমান্ডুতে নেওয়ার পরিকল্পনা ছিল।
১৯টি আসনের ছোট বিমানটির যাত্রীদের মধ্যে ছিলেন নেপালি অভিনেতা সিপি লোহানি এবং নেপালি বংশোদ্ভূত ভারতীয় চলচ্চিত্র তারকা মালা সিনহা। পরিকল্পনা অনুযায়ী, বিরাটনগর থেকে বিমানটিতে উঠে পড়েন সুবেদী। তার সঙ্গে ছিলেন দুই সহযোগী—নগেন্দ্র ধুঙ্গেল ও বসন্ত ভট্টরাই।
স্বল্প সময়ের মধ্যে ক্রুদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে তারা পাইলটকে ভারতে নিয়ে বিহারের ফরবেশগঞ্জে বিমান অবতরণ করাতে বাধ্য করেন। সেখানে অপেক্ষা করছিলেন পাঁচ সহযোগী। বিমানের ভেতর থেকে তারা তিন বাক্সভর্তি রুপি নামিয়ে নেন। পরে যাত্রীদের নিয়ে বিমান আবার উড়াল দেয় কাঠমান্ডুর উদ্দেশে।
পরের এক বছর ছদ্মবেশে ভারতের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করেন সুবেদী ও তার সহযোগীরা। তবে একে একে সবাই ধরা পড়েন, শুধু নগেন্দ্র ধুঙ্গেল ছাড়া। পরবর্তীকালে জামিনে মুক্তি পেয়ে ১৯৮০ সালের গণভোটের আগে তারা নেপালে ফিরে আসেন।
আজ সেই সুবেদীই আলোচনায়, কারণ তার স্ত্রী সুশীলা কার্কি এখন নেপালের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী।
খবরটি শেয়ার করুন