ছবি : সংগৃহীত
শীতের পরই আগমন হলো বসন্তের। আর এই ঋতুরাজ বসন্তে ফুটে পলাশ। ফাগুনকে বরণ করে নেয় এ ফুল। গান কিংবা সাহিত্যে পলাশের রূপের বন্দনা উঠে এসেছে বিভিন্ন সময়। বসন্তের এ সময়ে পলাশের ডালে পাখি আর মৌমাছির আনাগোনা বেড়ে যায়।
বিভিন্ন পলাশের ডালে দেখা মিলে কোকিল। শুধু কি বসন্তের কোকিল এই পলাশের প্রেমে পড়ে? তা কি করে হয়। লম্বা লেজের সবুজ টিয়ারও দর্শন মেলে পলাশ চূড়ায়। পাখিদের মত মানুষের মন ও পলাশের প্রেমে পড়ে।
আরো পড়ুন : নিজের জন্য থাক একটু সময়
কবি নজরুল তাঁর গানে লিখেছেন-
‘হলুদ গাঁদার ফুল, রাঙা পলাশ ফুল
এনে দে এনে দে নইলে বাঁধব না, বাঁধব না চুল’
পলাশ ফুলের রুপ আর গুণের কোনো কমতি নেই। দেশাত্মবোধক একটি গানেও উল্লেখ পাওয়া যায় পলাশের।
“আমায় গেঁথে দাওনা মাগো একটি পলাশ ফুলের মালা” সেই বিখ্যাত গানের চরণ।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অনেক কবিতা আর গানেও পলাশ ফুলের উল্লেখ আছে। যেমন - দোলের গান,
ওরে গৃহবাসীতে ‘রাঙা হাসি রাশি রাশি,
অশোকে পলাশে' বা ফাগুন হাওয়ায় হওয়ায় গানে
‘তোমার অশোকে কিংশুকে, অলক্ষ্য রঙ লাগল আমার অকারণের সুখে’।
পলাশের সৌন্দর্যের বর্ণনায় হয়তো দিনরাত ফুরিয়ে ভোর হবে, মহাকাব্য রচিত হবে। কিন্তু বর্ণনা শেষ হবে না। শুধু সৌন্দর্যে নয়, এটির রয়েছে নানান গুণ-
১. খাবার খাওয়ার ফলে অনেকেরই হজমের সমস্যাসহ পেটের নানা সমস্যা দেখা দেয়। আবার অনেকে ঘুমের মধ্যে ঘামে। চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতে যাকে নাড়ি প্রদাহ থেকে সৃষ্টি সমস্যা বলা হয়। এক চামচ পলাশ পাতার রস আধা গ্লাস পরিমাণ মতো পানিতে মিশিয়ে সকাল-বিকাল দুইবার পান করলেই মুক্তি পাওয়া যায় এসব সমস্যা থেকে।
২. ফিতা বা সুতাকৃমির উপদ্রবে এক চামচ ছালের রসের সাথে আধা কাপ পানি মিশিয়ে অথবা এক গ্রাম বীজ গুঁড়া পানিসহ প্রতিদিন সকালে খেলে যে কোনো কৃমির উপদ্রব কমে যাবে।
৩. অনেকের বারবার প্রস্রাবে যেতে হয়, আয়ুর্বেদশাস্ত্রে একে বলে সোম রোগ। এক্ষেত্রে পলাশ পাতার এক চামচ রস ৭/৮ চামচ পানি মিশিয়ে সকাল-বিকাল খেলে উপকার পাওয়া যায়।
৪. খাওয়াদাওয়া ভালো কিন্তু দেহে লাবণ্য নেই, সেক্ষেত্রে তিনটি কচি পাতার রস ৭/৮ চামচ পানিতে মিশিয়ে খেলে রসবহ স্রোত পরিস্কার হয়ে ত্বকের স্বাভাবিক ক্রিয়া হতে থাকলেই দেহে লাবণ্য ফিরে আসবে।
৫.যে কোনো রকম বিছায় কামড়ালে পলাশ বীজ আকন্দের আঠার সাথে বেটে সেখানে লাগালে উপশম হয়।
এস/ আই.কে.জে/
খবরটি শেয়ার করুন