ছবি : সংগৃহীত
বিমান ভ্রমণ আরও বেশি উপভোগ্য করতে পাওয়া যায় নানা উপদেশ। তবে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি পরামর্শ হচ্ছে বিমানে আপনি কোন আসনটিতে বসবেন, সেটি সতর্কতার সঙ্গে বাছাই করা। মাঝ আকাশে হঠাৎ যদি জরুরি পরিস্থিতি তৈরি হয়, তাহলে কোন সিটটি আপনাকে বেশি সুরক্ষা দেবে, সেটা কখনো ভেবে দেখেছেন?
আকাশপথে চলাচলকারী অধিকাংশই যাত্রীই সম্ভবত এটা নিয়ে ভাবেন না। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বসতে বা টয়লেটে যেতে সুবিধা হবে, এমন পজিশনে সিট বুক করেন যাত্রীরা। অনেকে আবার সামনের দিকের সিট বুক করেন যাতে তাড়াতাড়ি নামতে পারেন।
পৃথিবীতে প্রচলিত সব পরিবহন ব্যবস্থার মধ্যে আকাশপথে চলাচল সবচেয়ে নিরাপদ। এক পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৯ সালে বিশ্বজুড়ে প্রায় ৭ কোটি ফ্লাইট পরিচালিত হয়েছে। এ সময় মাত্র ২৮৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সেফটি কাউন্সিলের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্লেন দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সম্ভাবনা ২ লাখ ৫ হাজার ৫৫২ বারে একবার, যেখানে গাড়ির ক্ষেত্রে এই সম্ভাবনা ১০২ বারে একবার।
আরো পড়ুন : পিঠের ব্যথা কমাতে এসেনশিয়াল অয়েল
৩৫ বছরের বিমান দুর্ঘটনার তথ্য-উপাত্ত ঘেঁটে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরি করেছে টাইম ম্যাগাজিন। ওই প্রতিবেদনে বিমানের ভেতর সবচেয়ে নিরাপদ সিট কোনগুলো, তা বের করা হয়েছে।
সেখানে বলা হয়েছে, বিমানের মাঝের সারিতে বসা যাত্রীদের তুলনায় পেছনের দিককার মাঝামাঝি সিটগুলোতে বসাদের মধ্যে মৃত্যুর হার তুলনামূলক কম। এটা যৌক্তিকও বটে। কেননা এক্সিটের কাছাকাছি বসা ব্যক্তিরাই তো আগে বের হতে পারবেন!
আবার সামনের দিককার কাছাকাছি বসার অর্থ হচ্ছে যারা পেছনে আছেন, তাদের চেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন তারা। এমনকি ইমার্জেন্সি এক্সিটের ক্ষেত্রেও তার পিছিয়ে থাকেন। তবে কী ধরনের জরুরি অবস্থা এসে পড়ে, তার ওপর বেঁচে ফেরার বিষয়টা নির্ভর করে। পাহাড়ে গিয়ে বিমান আঘাত করলে বাঁচার সম্ভাবনা কমে আসে। ১৯৭৯ সালে নিউজিল্যান্ডের একটি বিমান অ্যান্টার্কটিকার মাউন্ট এরিবাসে আঘাত হানলে সব আরোহী নিহত হয়েছিল।
আবার বিমান যদি সমুদ্রে নাক ডুবিয়ে দেয়, তাহলেও বাঁচার সম্ভাবনা কম আছে। ২০০৯ সালে এমন ঘটনার সাক্ষী হয়েছিল এয়ার ফ্রান্সের একটি ফ্লাইট। তখন সেই দুর্ঘটনায় ২২৮ জন যাত্রী এবং ক্রুর সবাই নিহত হয়েছিল।
তবে জরুরি পরিস্থিতি সম্ভাব্য ঝুঁকি কমাতে পাইলটদের ট্রেনিং দেওয়া হয়। পাহাড়-পর্বত এড়িয়ে সমতলে অবতরণ বা পানিতে অবতরণের সময় ঢেউয়ের হিসাব বিবেচনায় নেওয়ার মতো বিষয় শেখানো হয় তাদের।
ফ্লাইটের ভেতর স্ট্রেস কমানোর লক্ষ্যে অনেক বেশি কম্পোজিট মেটেরিয়াল ব্যবহার করে নতুন বিমান বানাচ্ছে প্রস্তুতকারকরা। এসব নকশায় বিমানের পাখা ফিক্সড নয় বরং চরম মুহূর্তে স্ট্রাকচারাল ফেইলর ঠেকানোর মতো করে প্রস্তুত করা হচ্ছে। কিছু বিষয় এদিক-সেদিক থাকলেও প্রায় সব প্লেনের ফিজিক্স অব ফ্লাইট প্রায় একই।
সাধারণত বড় বিমানগুলোতে বেশি পরিমাণ স্ট্রাকচারাল মেটেরিয়াল থাকে, তাই বেশি উচ্চতায় এগুলোর চাপ নেওয়ার ক্ষমতাও বেশি।
এস/ আই.কে.জে/
খবরটি শেয়ার করুন