ছবি : সংগৃহীত
লিপস্টিক ছাড়া মেকআপ করা আর লবণ ছাড়া তরকারি রান্না ব্যাপারটা একই রকম। কারণ লিপস্টিক ছাড়া মেকআপ অসম্পূর্ণ। যারা মেকআপ করতে পছন্দ করেন না তারাও নিজেদের সাজান পছন্দের শেডের লিপস্টিকে। তবে এই প্রসাধনীটি কিন্তু আধুনিক নয়। বরং আজ থেকে প্রায় হাজার হাজার বছর আগেও নারীরা লিপস্টিক ব্যবহার করতেন। সম্প্রতি ইরানের প্রত্নতাত্ত্বিকরা খুঁজে পেয়েছেন এমনই এক পুরনো লিপস্টিক।
ইরানের কেরমান প্রদেশের জিরোফ্ট এলাকায় বিশ্বের প্রাচীনতম এই লিপস্টিক আবিষ্কার করেছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা। ৪০০০ বছর আগে এটি ব্যবহার করা হয়েছিল।
একটি কবরস্থানে এই লিপস্টিকটি পড়ে ছিল বলে জানা গিয়েছে। বন্যার পানি ঢুকে কবরস্থানের ভেতরে পুঁতে রাখা অনেক জিনিসপত্র বেরিয়ে আসে। স্থায়ীয় লোকেরা এসব জিনিস কুড়িয়ে নিয়ে যেত। ওই জায়গায় কেবল লিপস্টিকটি রয়ে গিয়েছিল। বর্তমানে ইরানের একটি জাদুঘরে লিপস্টিকটি রাখা হয়েছে।
ইরানের প্রত্নতাত্ত্বিকদের দ্বারা পাওয়া এই প্রাচীন লিপস্টিকটি কোনো সাধারণ লিপস্টিক নয়। বিশ্বের প্রাচীনতম লিপস্টিক এটি। ২০০১ সালে এটি খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল।
আরো পড়ুন : বাজেটের মধ্যেই গয়না গড়াবেন যেভাবে
যেভাবে এই লিপস্টিকটি তৈরি করা হয়েছিল
লিপস্টিকটি তৈরি করা হয়েছিল হেমাটাইটের মতো খনিজ থেকে। হেমাটাইট একটি লাল পদার্থ, যা ম্যাঙ্গানিজ ও ব্রাউনাইট দিয়ে গাঢ় করা হয়েছে। এতে অল্প পরিমাণে গ্যালেনা ও অ্যাঙ্গলেসাইট রয়েছে। ৪০০০ বছরের পুরানো এই লিপস্টিকের রঙ এবং মোমের টেক্সচার সমসাময়িক লিপস্টিকের মতো।
সায়েন্টিফিক রিপোর্টে প্রকাশিত গবেষণা অনুযায়ী এই লিপস্টিকের মালিক খুব সম্ভবত এটি একইভাবে ব্যবহার করেছেন, ঠিক যেভাবে আধুনিক যুগের মানুষ এখন লিপস্টিক ব্যবহার করেন।
সায়েন্টিফিক রিপোর্টে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, অতীতেও আজকের মতোই লিপস্টিক ব্যবহার করা হতো। শিশিটির সরু আকৃতি এবং পুরুত্ব দেখে বোঝা যায় যে এটি অন্য হাতে আরামে ধরে রেখে তামা/ব্রোঞ্জের ডিক্যানটার দিয়ে সহজেই ব্যবহার করা যেতে পারে।
কখন লিপস্টিকটি তৈরি হয়েছিল কিংবা কোথায় থেকে তৈরি হয়েছিল তা বলা খুব কঠিন। গবেষকদের মতে, এটি প্রাচীন মার্সাসি, ব্রোঞ্জ যুগের সভ্যতা থেকে এসেছে। তবে লিপস্টিকের মালিক ও উদ্ভাবন সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
লিপস্টিকের উৎপত্তি হয়েছিল কবে?
এই আবিষ্কার প্রাচীন ইরানের ব্রোঞ্জ যুগের মানুষের কথা বলে। তখন মানুষ কীভাবে সৌন্দর্য পণ্য ব্যবহার করতেন, তার একটি আভাস দেয়। নারীদের ঠোঁটে রঙ ব্যবহার করার প্রথম প্রমাণ পাওয়া যায় খ্রিস্টপূর্ব ১২ শতকের দিকে। মিশর ও এখন ইরানে পাওয়া তুরিন প্যাপিরাস দেখিয়েছে যে ব্রোঞ্জ যুগেও মেকআপের চল ছিল।
এস/ আই. কে. জে/
খবরটি শেয়ার করুন