ছবি: সংগৃহীত
ঝলমলে, মসৃণ, নরম চুলের জন্য চলতি ট্রেন্ডে হেয়ার স্পা–ই ভরসা। হাতে যাদের একেবারেই সময় নেই, তারা তো সপ্তাহান্তে একবার পারলারে গিয়ে হেয়ার স্পা করছেন। কিন্তু সেখানে খরচাটাও বেশি। সপ্তাহে একবার না হলেও মাসে দুই বার অন্তত ঘরে বসে যদি স্পা করার কাজটা সেরে নেওয়া যায় নিজের হাতে, তাহলে বাড়তি খরচ আর চুলের স্বাস্থ্য কোনোটা নিয়েই ভাবতে হয় না। এই ভরা বর্ষায় চুলের দেখভালের জন্য বাড়িতেই না হয় একটু সময় করে হেয়ার স্পা করে নিন। তথ্যসূত্র আরবান কোম্পানির।
হেয়ার স্পার ধাপ
মূলত চারটি ভাগে হেয়ার স্পা করা হয়। এগুলো হলো, অয়েল ম্যাসাজ, স্টিম, ক্লিনজিং ও ফাইনাল ট্রিটমেন্ট। এর মধ্যে স্টিম নেওয়ার ব্যাপারটা সব ধরনের চুলের জন্য একই রকম। তবে চুলের ধরন ও অবস্থা অনুযায়ী অয়েল ম্যাসাজ, ক্লিনজার ও ট্রিটমেন্ট বেছে নিতে হবে। চুলের ধরনের সঙ্গে মিলিয়ে উপকরণ ব্যবহার করলে রুক্ষতা ও নিষ্প্রভ ভাব দূর হবে। পাশাপাশি খুশকি, চুল পড়া ও চুলের আগা ফাটার মতো সমস্যাও ধীরে ধীরে কমে যাবে।
বাড়িতে হেয়ার স্পা যেভাবে করবেন
মোটা দাঁতের চিরুনি ব্যবহার করে প্রথমে চুলের জট ছাড়িয়ে নিয়ে বেশ কিছুক্ষণ ভালোভাবে আঁচড়ে নিন। এরপর চুলের ধরন বুঝে আমন্ড, নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করতে হবে ১০ থেকে ১৫ মিনিট। যদি পাতলা চুল হয় বা চুল পড়ার সমস্যা থেকে থাকে, তাহলে চুলে ও মাথার ত্বকে তেল মালিশ করে রেখে দিন। সে ক্ষেত্রে খুব বেশি ম্যাসাজ না করাই ভালো।
চুলের ধরন অনুযায়ী তেল বাছাই করতে হবে। যেমন, শুষ্ক ও রুক্ষ চুলে নারকেল তেল, অলিভ অয়েল, ক্যাস্টর অয়েল বা আমন্ড অয়েল ব্যবহার করা যেতে পারে। এই তেলগুলো চুল ময়েশ্চারাইজ করে ও শুষ্কতা দূর করতে সাহায্য করে। অন্যদিকে তৈলাক্ত চুলে জোজোবা তেল, অর্গান তেল ও নিম তেল ব্যবহার করা যেতে পারে। এই তেলগুলো হালকা ও সহজে মাথার ত্বকে মিশে যায় এবং অতিরিক্ত তেলতেলে ভাব দূর করে।
স্টিম বা ভাপ নেওয়ার পদ্ধতি
তেল ম্যাসাজ করে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রাখার পর চুলে গরম ভাপ দিন। গরম পানিতে তোয়ালে ডুবিয়ে জল নিংড়ে চুলে জড়িয়ে রাখতে পারেন। অথবা একটু উঁচু টুলের ওপর বসে মাথা হেলিয়ে ধোঁয়া ওঠা জলের পাত্রের ওপর চুল রেখে তোয়ালে দিয়ে ঢেকে দিন। খেয়াল রাখবেন, যেন বাষ্প তোয়ালের বাইরে বেরিয়ে না যায় বা চুল সরাসরি জলের সংস্পর্শে না আসে। অন্তত ১০ থেকে ১৫ মিনিট এভাবে স্টিম নেওয়ার পর চুল ধুয়ে নিতে হবে।
প্রথমে হাতে অল্প শ্যাম্পু নিয়ে মাথার ত্বকে ভালোভাবে ম্যাসাজ করে ধুয়ে নিন। এরপর আবার শ্যাম্পু নিয়ে পুরো চুলে লাগান। ২ মিনিট আলতো হাতে ম্যাসাজ করে ধুয়ে নিন। সবশেষে বেশি পরিমাণে কন্ডিশনার নিয়ে লাগান চুলের ডগায়। যত বেশি সময় রাখতে পারেন, ততই ভালো।
টাটকা ট্রিটমেন্ট
এবার মূল কাজ। সবেমাত্র চুল পরিষ্কারের কাজ শেষ হলো। এবার চুলের সুস্থতা নিশ্চিত করতে ট্রিটমেন্ট দিতে হবে। চুলের সমস্যা ও চুলের ধরন বুঝে ট্রিটমেন্টের উপাদান বেছে নিতে হবে। শুষ্ক চুলের ক্ষেত্রে দেড় টেবিল চামচ আপেল সিডার ভিনেগারে ২ টেবিল চামচ মধু ও ১ চা-চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে মাথার ত্বকে ও চুলে লাগান। ১০ থেকে ১৫ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে নিন।
এরপর একটা পাকা কলা চটকে সঙ্গে মধু মিশিয়ে চুলে লাগালে উপকার মিলবে। চুলে খুশকির সমস্যা থাকলে কয়েকটা স্ট্রবেরি থেঁতো করে তাতে কয়েক ফোঁটা টি-ট্রি অয়েল মিশিয়ে চুলে ও মাথার ত্বকে লাগিয়ে রাখুন আধা ঘণ্টা। তারপর ধুয়ে নিন।
চুলের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় তৈলাক্ত, শুষ্ক ও স্বাভাবিক ওয়েভি চুলে যথাক্রমে ডিমের সাদা অংশ, টক দই ও দুধ ব্যবহার করা যেতে পারে। শ্যাম্পু করে ফের কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। এরপর চুল ধুয়ে সেরাম ব্যবহার করুন। এরপর ফ্যানের বাতাসে চুল শুকিয়ে নিন। চুল শুকানোর জন্য ড্রায়ার ব্যবহার না করাই ভালো।
জে.এস/
খবরটি শেয়ার করুন