রবিবার, ২৩শে ফেব্রুয়ারি ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১১ই ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মানুষের জীবনকে সহজ করছে ডিজিটাল ব্যাংকিং

উপ-সম্পাদকীয়

🕒 প্রকাশ: ০২:১৭ অপরাহ্ন, ২৩শে ফেব্রুয়ারি ২০২৫

#

ছবি - সংগৃহীত

বর্তমান সময়ে টাকা-পয়সা লেনদেনের ক্ষেত্রে অনলাইন মাধ্যমগুলো অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সব ব্যাংক এখন প্রযুক্তিনির্ভর। ডিজিটাল ব্যাংকিং শুধু মোবাইল, কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট ব্যবহার করেই করা যাচ্ছে। ব্যাংকে গিয়ে শ্রম ব্যয় করতে হচ্ছে না। খুব বেশি দিন আগের কথা নয়, আর্থিক লেনদেন ঘরে বসে করা যাবে, তা কল্পনাই করা যেতো না। সময় বদলে গেছে, এখন মুহূর্তে লেনদেন করা যাচ্ছে দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গাইডলাইনে বলা হয়েছে, প্রচলিত সব ব্যাংকের মতো এসব ডিজিটাল ব্যাংককেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সব বিধিবিধান, নির্দেশনা মেনে চলতে হবে এবং এরা নজরদারির মধ্যে থাকবে। তাদেরকেও আমানতের একটা অংশ বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা রাখতে হবে। শাখা না থাকলেও এসব ব্যাংকের একটি প্রধান শাখা থাকতে হবে। গ্রাহকের অভিযোগ বা অসন্তুষ্টির ব্যাপারে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে।

ব্যাংকে না গিয়ে কম্পিউটার বা মোবাইলের মাধ্যমে সমগ্র ব্যাংকিং সুবিধার ব্যবহারকেই ডিজিটাল ব্যাংকিং বলা হয়। বর্তমানে সব ব্যাংক প্রযুক্তিনির্ভর হওয়ার কারণে মানুষ এখন ডিজিটাল জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে উঠছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাব মতে, দেশে এখন ২৫ শতাংশ মানুষের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আছে। এর মধ্যে সব ধরনের কার্ড মিলিয়ে গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় তিন কোটির মতো। তাই ডিজিটাল ইন্টারনেট ব্যাংকিং গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে নিয়েছে। সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানই নড়েচড়ে বসছে। গ্রাহকদেরকে আকৃষ্ট করতে ব্যাংকে ব্যাংকে প্রতিযোগিতা বাড়ছে। ব্যাংকের সঙ্গে অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে। ফলে আর্থিক সেবার মান উন্নত হচ্ছে।

ডিজিটাল লেনদেন নানামুখী ব্যবস্থায় হয়ে থাকে। ব্যাংকের ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড ছাড়াও রয়েছে বিকাশ, রকেট, নগদ ও উপায়। কার্ডের বদলে অ্যাপস ও কিউআর কোডের ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। মোবাইল ফোনই হয়ে উঠছে লেনদেনের সবচেয়ে বড় মাধ্যম। ব্যাংকে যেতে না হওয়ায় গ্রাহকদের সময় ও অর্থ সাশ্রয় হচ্ছে। অনেক সময় সেবা নিতে গ্রাহকদের ব্যাংকে গিয়ে সিরিয়ালে বসে থাকতে হতো। কিন্তু এখানে সেটি করতে হয় না।  যেকোনো প্রান্ত থেকে গ্রাহক অ্যাকাউন্ট খুলতে এবং ব্যাংকিং সেবা নিতে পারেন। রাত-দিন  চব্বিশ ঘণ্টার যেকোনো সময় এই ব্যাংকের সেবা নেয়া যায়। মোবাইল বা অ্যাপ ব্যবহার করে গ্রাহকরা এই ব্যাংকে লেনদেন করতে পারেন। তাদের সশরীরে ব্যাংকের কোনো শাখায় যেতে হবে না। জাতীয় পরিচয়পত্রসহ নিজস্ব তথ্যাদি আপলোড করে একজন হিসাব খুলতে পারেন।

মোবাইল ব্যাংকিং সেবার সঙ্গে মানুষ ধীরে ধীরে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে। অনেকেই কেনাকাটায় নগদ টাকার পরিবর্তে মোবাইল ফাইন্যান্সিং সার্ভিস ব্যবহার করে থাকেন। মোবাইল ফোনের কিউআর কোড স্ক্যান করে পেমেন্ট করা যায়। ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার করে পেমেন্ট করা যায়। আবার অনেক কোম্পানি ডিজিটাল পেমেন্টকে উৎসাহ দিতে বিক্রয়ের উপর ছাড় দিচ্ছে। ব্যবসায়ী এবং উদ্যোক্তারা ডিজিটাল মার্কেটিং, ই-কমার্স ও অনলাইন পেমেন্টের মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম উন্নত করেছেন।

ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের সব কার্যক্রম অ্যাপ বা ওয়েবসাইটের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। গ্রাহকরা সশরীরে ব্যাংকের শাখায় যাওয়া ছাড়াই ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লেনদেন ও ঋণসহ সব ধরনের ব্যাংকিং সেবা পেতে পারেন। ডিজিটাল ব্যাংকের কোনো কার্যক্রমের জন্য সশরীরে ব্যাংকে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। যে কারণে ডিজিটাল ব্যাংকিং দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের আরেকটি সম্ভাবনাময় দিক হচ্ছে ক্যাশ টাকার ব্যবহার এড়িয়ে চলা। পুরোপুরি ক্যাশলেস সমাজ গঠনে ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের সহজলভ্যতা অপরিহার্য। ডিজিটাল ব্যাংকিং একটি নতুন ধরনের সেবা। সেজন্য স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা জরুরি। তাহলেই মানুষের আস্থা আরো বাড়বে।

আই.কে.জে/   

ডিজিটাল ব্যাংকিং

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন