ছবি: সংগৃহীত
সম্প্রতি, ব্রিটেনে এক রেস্তোরাঁয় গান পরিবেশনের পর ভক্তদের সঙ্গে ছবি তোলার সময় জনপ্রিয় পাকিস্তানি গায়ক চাহাত ফতেহ আলী খানের দিকে ডিম ছুড়ে মারেন দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনার ভিডিও প্রকাশ করায় এবার ওই রেস্তোরাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন গায়ক।
তার অভিযোগ, ঘটনাটির ভিডিও থাকা সত্ত্বেও শুরুতে তাকে জানানো হয়েছিল কোনো ফুটেজ নেই, অথচ সম্প্রতি সেটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করেছে রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষ। খবর দ্য ডনের।
ঘটনাটি ঘটে গত ১৯শে জুন। সেদিন ইংল্যান্ডের ব্ল্যাকবার্ন শহরের পাকিস্তানি রেস্তোরাঁ ‘পরাঠা স্টপ’-এ গান পরিবেশন শেষে বের হচ্ছিলেন চাহাত ফতেহ আলী খান। রেস্তোরাঁর নিরাপত্তাকর্মীরা তার সঙ্গে ছবি তুলতে চাইলে তিনি বাইরে দাঁড়ান। ঠিক তখনই মুখোশ পরা দুই ব্যক্তি এগিয়ে এসে তার দিকে ডিম ছোড়েন। পরে, তার মাথায়ও আঘাত করেন তারা। কিছু বুঝে ওঠার আগেই হামলাকারীরা পালিয়ে যান।
চাহাত ফতেহ আলী খান জানান, ঘটনার পর তিনি পুলিশে অভিযোগ জানানোর কথা ভাবেন। সে সময় ঘটনার প্রমাণস্বরূপ ওই রেস্তোরাঁর কাছে ভিডিও চান তিনি। কিন্তু তখন তারা জানিয়েছিল, সিসিটিভিতে কিছু ধরা পড়েনি, কোনো কর্মীও ভিডিও করেননি।
অথচ গতকাল বৃহস্পতিবার (১১ই সেপ্টেম্বর) ওই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে ওই ভিডিও প্রকাশ করে রেস্তোরাঁটি। যদিও তারা হামলাকারীদের ব্যাপারে তথ্যই চাচ্ছিল, তবু শুরুতে ভিডিও না থাকার কথা বলে এখন আবার ভিডিও প্রকাশ করায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন চাহাত ফতেহ আলী খান। রেস্তোরাঁর বিরুদ্ধে তিনি মামলা করবেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন। হুমকি দেন ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়ারও। তবে গায়কের অভিযোগ নিয়ে রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষ এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।
নিজের ইনস্টাগ্রাম রিলে গায়ক আরও অভিযোগ করেন, রেস্তোরাঁর মালিক এরুম ও ফায়েজ তাকে গান পরিবেশনের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে কর্মীরা ছবি তোলেন, তারপর নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে বাইরে ছবি তুলতে বলা হয়। সেখানেই হামলার শিকার হন তিনি।
ঘটনার পর থেকে একাধিক অজ্ঞাত নম্বর থেকে হুমকিমূলক ফোন পাচ্ছেন বলেও দাবি করেছেন চাহাত ফতেহ আলী খান। তিনি জানান, সব নম্বর লিখে রেখেছেন এবং কর্তৃপক্ষকে প্রমাণ হিসেবে জমা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন।
এ ঘটনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিনেতা আহমেদ আলী বাট ও গায়ক আসিম আজহার। আহমেদ আলী ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, ‘তাকে পছন্দ করুন বা না করুন, তিনি কখনো কাউকে অসম্মান করেননি। দুঃখের বিষয়, আমরা এমন এক মৃত সমাজে বাস করি, যেখানে ভিউ আর লাইকের জন্য যেকোনো কিছু করা হয়।’
অন্যদিকে আসিম আজহার বলেছেন, ‘এভাবে অশিক্ষিত মানুষদের রাস্তায় ঘুরতে দেখে লজ্জা লাগে। চাহাত ভাই, আপনি সবার মাঝে হাসি ছড়িয়ে যান—আপনার মতো মানুষের খুব অভাব।’
উল্লেখ্য, চাহাত ফতেহ আলী খানের নাম শুনে নিশ্চয়ই, বিখ্যাত ফতেহ আলী খান পরিবারের উত্তরাধিকারী বলে মনে হচ্ছে। কিন্তু না, উপমহাদেশের প্রখ্যাত কাওয়ালি পরিবারের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই। সংগীতে তার অসাধারণ প্রতিভার কথা কয়েক বছর আগেও কেউ জানত না। নুসরাত ফতেহ আলী খানের কাওয়ালি তাকে ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত করেছে এটা সত্য।
সোশ্যাল মিডিয়া সেনসেশন, ওস্তাদ, কিংবদন্তি গীতিকার, সুরকার, কম্পোজার—ধ্রুপদি, কাওয়ালি, পপ, ভাঙড়া, বলিউড—সংগীতের এমন কোনো ধারা নেই, যেখানে তার সরব উপস্থিতি নেই! সোশ্যাল মিডিয়াতে এমন সব বিশেষণেই অভিষিক্ত চাহাত ফতেহ আলী খান। তিনি পাকিস্তানি সেলিব্রিটি। তাকে বলা হয়, পাকিস্তানের 'হিরো আলম'।
জে.এস/
খবরটি শেয়ার করুন