বৃহস্পতিবার, ২০শে নভেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৫ই অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** নভেম্বরের ১৮ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১৯০৪ মিলিয়ন ডলার *** ফেসবুকে তারেক রহমানকে ‘কটূক্তি’র অভিযোগে মামলার আবেদন *** কারাগারে পছন্দের খাবার না পেয়ে বন্দির মামলা *** আন্তর্জাতিক কার্ড দিয়ে কেনা যাবে বিমান টিকিট *** সিপিবির মনোনয়ন ফরম বিতরণ শুরু আগামীকাল *** শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনে সামরিক বাহিনীর সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা *** আমরা ট্রানজিশনাল পিরিয়ডে আছি, একটা দোলাচল চলছে: মির্জা ফখরুল *** ‘খাসোগি হত্যার বিষয়ে' কিছুই জানতেন না সৌদি যুবরাজ: ট্রাম্প *** সাংবাদিক মিজানুরকে তুলে নেওয়া প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা: ‘তদন্তের পর জানতে পারব’ *** 'ছাত্র উপদেষ্টারা যাতে কোনোভাবেই দেশ ছেড়ে পালাতে না পারেন'

শেখ হাসিনার রায় কী আন্তর্জাতিক চাপ বাড়াবে

বিশেষ প্রতিবেদক

🕒 প্রকাশ: ১১:০৭ অপরাহ্ন, ১৯শে নভেম্বর ২০২৫

#

ফাইল ছবি

চব্বিশের জুলাই-আগস্টে অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন। রায়কে সরকার, অধিকাংশ রাজনৈতিক ও অনেক বিশ্লেষক স্বাগত জানিয়েছেন। তবে ভিন্ন কথাও শোনা যাচ্ছে অনেক বিশ্লেষকের কণ্ঠে। তারা বলছেন, বিষয়টকে আন্তর্জাতিকভাবে যারা বাইরে থেকে দেখছেন, তারা কীভাবে মূল্যায়ন করছেন, তা বিবেচনায় নেওয়া নানা কারণে খুব জরুরি।

তাদের মতে, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যুদণ্ডের রায় দেশের রাজনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে। রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ তৈরি হবে। দেশের রাজনীতির পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রের নানা বিবেচনায় এই রায় প্রভাব ফেলতে পারে। দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে অনেক সময় আন্তর্জাতিক প্রভাব বড় ধরনের ভূমিকা রাখে। ফলে রায়কে ঘিরেও আন্তর্জাতিক মহলের চাপ, তাপ এবং প্রভাব থাকবে। এই রায় আন্তর্জাতিক চাপ বাড়াতে পারে।

তারা বলছেন, স্বাধীন দেশে বহু গুরুত্বপূর্ণ রায় ও বিচার হলেও শেখ হাসিনার মামলার মতো আন্তর্জাতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে কোনো বিচার আগে দেখা যায়নি। একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের ট্রাইব্যুনালে দীর্ঘ সময় ধরে এবং উন্মুক্তভাবে হওয়ায় বিশ্বব্যাপী নিয়মিত আলোচনা হয়েছিল। বর্তমান পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনার বিচার আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরো ব্যাপক গুরুত্ব পাচ্ছে। তার বিচারকে ঘিরে আন্তর্জাতিক মহলের বাড়তে থাকা আগ্রহ এবং দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির জটিলতার ইঙ্গিত দিচ্ছে বলেও কেউ কেউ আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

অনেকের মতে, দেশে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কৌশল ও টিম দক্ষতার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে প্রভাবিত করতে যতটা সক্ষম হয়েছে; অথবা বিশ্ব সম্প্রদায় কোনো কারণে বাংলাদেশ ও শেখ হাসিনাকে পরস্পরের জন্য যতটা অপরিহার্য হিসেবে বিবেচনা করছে, সরকার রায়ের বিষয়ে ততটা প্রচারণা বহির্বিশ্বে চালাতে পারেনি। এতে সরকার পিছিয়ে পড়ছে, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নানা বিভ্রান্তির জন্ম হচ্ছে। বিশেষ করে, ভারতীয় প্রভাবশালী গণমাধ্যমগুলো একচেটিয়া আওয়ামী লীগের ভাষ্য প্রচার করছে।

গত ১৭ই নভেম্বর শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। এই রায় নিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স, এএফপি, বিবিসি, সিএনএন, আল-জাজিরা, গার্ডিয়ানসহ অনেক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। বিবিসি, আল জাজিরা এবং ভারতের বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম এই রায়ের খবর সরাসরি প্রচার করেছে।

কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ বলেন, আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোর বিবৃতি ও অবস্থানের কারণেও বহির্বিশ্ব থেকে অনেকে শেখ হাসিনার রায়কে কীভাবে দেখছেন, তারা এটাকে কীভাবে মূল্যায়ন করছেন, তা বিবেচনায় নেওয়া জরুরি। শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের অনুপস্থিতিতে বিচার এবং মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো। আলাদা বিবৃতিতে মানবাধিকার নিয়ে এমন উদ্বেগ প্রকাশ করেছে তারা।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুজনের অনুপস্থিতিতে বিচার করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে এবং তাদের পছন্দের আইনজীবী দেওয়ার সুযোগ ছিল না, যেটি গুরুতর মানবাধিকার উদ্বেগ তৈরি করেছে। অন্যদিকে, জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়, এই মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরোধিতা করেছে, কেননা দীর্ঘদিন ধরেই এই ধরনের সাজা বাতিলের আহ্বান জানিয়ে আসছে জাতিসংঘ। একইসাথে তারা বাংলাদেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্বারোপ করেছে। তবে এই রায়কে 'ভুক্তভোগীদের জন্য একটি মুহূর্ত' বলে উল্লেখ করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল দুজনের অনুপস্থিতিতে বিচারের 'নজীরবিহীন গতি' এবং রায় এই মামলার ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে 'উল্লেখযোগ্য উদ্বেগ' তৈরি করে বলে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। অবশ্য কোনো কোনো আন্তর্জাতিক সংগঠন এমনটাও বলছে, চব্বিশের জুলাই-আগস্টে অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে প্রথম মামলার রায় নিশ্চিতভাবে বাংলাদেশের সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য একটি বড় শিক্ষা। যারা রাষ্ট্রক্ষমতায় রয়েছেন বা ভবিষ্যতে যাবেন, তাদের সবাইকে মনে রাখতে হবে, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন।

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিশ্ব শক্তিগুলোর এই আগ্রহ কেন, সুখবর ডটকমের এমন প্রশ্নে একাধিক বিশেষজ্ঞ যুক্তি দেখিয়েছেন, এটি তাদের অর্থাৎ বৃহৎ শক্তিবর্গের, ভূরাজনৈতিক সমীকরণের অংশ। এসব শক্তি নিজেকে গণতান্ত্রিক বিশ্বের অভিভাবক মনে করে, ফলে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রশ্নে বিভিন্ন দেশকে লক্ষ্য করে পরামর্শ দিয়ে থাকে ও সহযোগিতা করে। বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার সমুন্নত করার লক্ষ্যেই তারা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার লঙ্ঘন দেখলে আপত্তি প্রকাশ করে থাকে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জোবায়দা নাসরীনের মতে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে অনেক সময় আন্তর্জাতিক প্রভাব বড় ধরনের ভূমিকা রাখে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শাসন ব্যবস্থা পরিবর্তনে যুক্তরাষ্ট্র ভূমিকা রাখার নীতিতে তারা পরিবর্তন এনেছে। এই জায়গা থেকে আমেরিকা, ভারত, মিয়ানমার, চীন, রাশিয়ার মতো শক্তিগুলো কীভাবে তাদের মনোযোগ এবং কার্যকারিতা রাখছে, সেটার ওপর বাংলাদেশের রাজনীতি নির্ভর করছে।

তিনি বলেন, বিশেষ করে শেখ হাসিনার রায়কে ঘিরেও আমরা দেখব, আন্তর্জাতিক মহলের চাপ, তাপ এবং প্রভাব থাকবে। এই রায় ঘিরে ভারতের অবস্থানে কোনো পরিবর্তন হয় কিনা, সেটার ওপরেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির অনেক কিছু নির্ভর করবে বলে তিনি মনে করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাব্বির আহমেদ বলছেন, রায়ের ওপর নির্ভর করে দেশে আওয়ামী লীগ ও অ্যান্টি আওয়ামী লীগ, এই রাজনীতিটা আরো নিষ্ঠুরতার দিকে যাবে। রায়টা যদি যথার্থ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে হয়, তবে দেশের আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ও ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। কিন্তু যদি রায়ের মধ্যে কোনো ফাঁকফোকর থেকে থাকে, তাহলে যা হবে, তা আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোতে দূরত্ব তৈরি করবে।

তিনি বলেন, বিচারে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড যদি না মানা হয়, তাহলে এ দেশের রাজনৈতিক যে বিভেদ তা আরো বাড়াবে। একদিকে আওয়ামী লীগ আরেকদিকে বাকিরা এই পোলারাইজেশনের রাজনীতি, এটা চলমান থাকবে। এটা ভাবার কোনো কারণ নেই যে, আওয়ামী লীগ বিলুপ্ত হয়ে যাবে। বরং এই ধারাটা বিলুপ্ত হবে এবং দেশের মধ্যে এক ধরনের রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হবে।

সাংবাদিক মাসুদ কামাল বলেন, এই মামলার বিচার যে আদালতে পরিচালিত হয়েছে, সেই আদালতের স্বাধীনতার ঘাটতি ও বিচার কার্যক্রমের জন্য এই অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল দীর্ঘদিন ধরে সমালোচনা করে আসছে। মানে এই ট্রাইবুনালের বিচার কার্যক্রম নিয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল অনেক আগে থেকে প্রতিবাদ করে আসছে। এই ট্রাইবুনালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছিল। তখন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছিল, বিচারটা ঠিক হচ্ছে না। এখনও সে একই কথা বলল। তাদের বিবৃতির মূল যে পয়েন্টটা সেটা হলো যে, আসামিদের অনুপস্থিতিতে এই বিচারের কার্যক্রম নজিরবিহীন দ্রুত গতিতে করা হয়েছে।

সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি বলেন, শেখ হাসিনার বিচারকে ঘিরে আন্তর্জাতিক মহলের বাড়তে থাকা আগ্রহ এবং দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির জটিলতা ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, পানি এখানেই থামবে না, আরো বহুদূর গড়াবে। স্বাধীন দেশে বহু গুরুত্বপূর্ণ রায় ও বিচার হলেও শেখ হাসিনার মামলার মতো আন্তর্জাতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে কোনো বিচার আগে দেখা যায়নি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দীর্ঘ সময় ধরে এবং উন্মুক্তভাবে হওয়ায় বিশ্বব্যাপী নিয়মিত আলোচনা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনার বিচার আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরো ব্যাপক গুরুত্ব পাচ্ছে।

তিনি বলেন, গত ১৫ দিনে শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে যেভাবে আলোচনায় এসেছেন, তা সাম্প্রতিক ইতিহাসে কোনো নেতাকেই দেখা যায়নি। বিশ্ব গণমাধ্যম অর্থের বিনিময়ে কাজ করলেও কেবল টাকা দিয়ে এমন প্রচার পাওয়া সম্ভব নয়। জামায়াত বা বিএনপি অতীতে বিশ্ব মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণে ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর মাত্র ১৪ মাসে শেখ হাসিনা ও সজীব ওয়াজেদ জয় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছেন।

তিনি আল জাজিরা ও বিবিসির উদাহরণ টেনে বলেন, এসব গণমাধ্যম অতীতে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেও এখন তার সাক্ষাৎকার প্রচার করছে। এর অর্থ শেখ হাসিনা তার ব্যক্তিগত সক্ষমতা, রাজনৈতিক কৌশল ও টিমের দক্ষতার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে প্রভাবিত করতে সক্ষম হয়েছেন; অথবা বিশ্ব সম্প্রদায় কোনো কারণে বাংলাদেশ ও শেখ হাসিনাকে পরস্পরের জন্য অপরিহার্য হিসেবে বিবেচনা করছে।

ব্রিটিশ সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যান মনে করেন, শেখ হাসিনার এই বিচারে দুটি গুরুতর সমস্যা আছে। প্রথমত, আদালতের নিযুক্ত আসামিপক্ষে যে আইনজীবী ছিলেন, তিনি প্রসিকিউশনের গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণগুলো নিয়ে একেবারে সাধারণ যে প্রশ্নগুলো তোলা উচিত ছিল, সেগুলোও তুলতে ‘ব্যর্থ’ হয়েছেন। দ্বিতীয় সমস্যা হলো, বিচারকেরা নিজেদের উদ্যোগেও প্রমাণগুলো কঠোরভাবে খতিয়ে দেখেননি, সব ক্ষেত্রে না হলেও অন্তত কয়েকটি ক্ষেত্রে তা হয়েছে।

তার মতে, প্রসিকিউশনের পেশকৃত চিত্র এবং তাদের দেওয়া সাক্ষী-প্রমাণ দ্বারা কী প্রতিষ্ঠিত হয়, সে বিষয়ে আদালত প্রসিকিউশনের অবস্থানটাই মেনে নিয়েছেন বলে মনে হয়েছে। আসামিপক্ষের দুর্বল আইনি লড়াইয়ের কারণে বিষয়টা আরও বেশি সমস্যাজনক হয়ে উঠেছে। এই দুই সমস্যার ফলে আদালত বিচারের রায়ে যেসব যুক্তি নিয়ে এসেছেন, তার ভেতর কিছু ত্রুটি দেখা যাচ্ছে। 

শেখ হাসিনা

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন

Footer Up 970x250