শনিবার, ১৫ই মার্চ ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৩০শে ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নির্বিচারে গণহত্যা

বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রথম বার্তা পাঠান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

🕒 প্রকাশ: ০৪:২১ অপরাহ্ন, ৬ই মার্চ ২০২৫

#

বাংলাদেশে পাকিস্তানি সামরিক জান্তার নির্বিচারে গণহত্যা শুরু হলে সর্বপ্রথম বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বহির্বিশ্বে বার্তা পাঠান বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।

ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের স্বাক্ষরযুক্ত একটি বার্তা একাত্তরের ৪ঠা এপ্রিল ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকদের কাছে পাঠানো হয়। এতে কীভাবে বাংলাদেশের শিক্ষক ও ছাত্রদের  ঢালাওভাবে পাকিস্তানি সৈন্যরা হত্যা করেছে তার বিবরণ এবং নিহত শিক্ষকদের তালিকা  প্রেরণ করে তার বিরুদ্ধে বিশ্ব জনমত গড়ে তোলার আহবান জানানো হয়। 

স্বাধীনতার দলিল চতুর্থ খণ্ডের ১৫ পৃষ্ঠায় এ সম্পর্কিত বিস্তারিত বিবরণ আছে। দলিলের ২৫ পৃষ্ঠায় বলা হয়, একাত্তরের ১৮ই এপ্রিল ব্রিটেনের ‘সানডে টেলিগ্রাফ’ পত্রিকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আবু সাঈদ চৌধুরীর একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়। এতে তিনি বাংলাদেশের নিহত ছাত্র-শিক্ষকসহ গণহত্যার একটি বিবরণ দেন। এই বিবরণ ঢাকা, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এবং এর এফিলেটেড কলেজগুলোর শিক্ষকদের। যারা স্কটল্যান্ডে উচ্চশিক্ষারত ছিলেন, তারা তা বিশ্বের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্যের কাছে প্রেরণ করেন।

অন্যদিকে স্কটল্যান্ডে উচ্চশিক্ষারত বাংলাদেশের শিক্ষকদের এই একই গ্রুপ ২৩শে এপ্রিল একই বার্তা গ্রেট ব্রিটেনের সব ছাত্র-শিক্ষকের কাছে প্রেরণ করে এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তাদের সক্রিয় সমর্থন কামনা করে (দলিল, পৃষ্ঠা -২৯)। 

বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এ আর মল্লিক একাত্তরের ১লা জুলাই ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে (কলকাতা) দুনিয়ার সব বিদ্যোৎসাহী সমাজের কাছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের জন্য সাহায্য প্রার্থনা করে বার্তা প্রেরণ করেন।

এ ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, যে কোনো জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের অগ্রভাগে থাকেন, সেই জাতীয়তাবাদ আদর্শের নেতারা। সাধারণত এর নির্মাতারা হন বুদ্ধিজীবী।

বাংলাদেশেও তার ব্যতিক্রম হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, একাত্তরে  সেই কারণেই পাকিস্তানি সামরিক জান্তাদের ক্রোধের বিষয়বস্তু ছিলেন তারা। আর এটার প্রমাণ পাওয়া গেছে দুই ভাগে। প্রথমত, একাত্তরের ২৫শে মার্চ অপারেশন সার্চ লাইটের নামে যে নৃশংস হত্যাকাণ্ড শুরু করেছিল পাকিস্তানি বাহিনী, সেই হত্যাকাণ্ড যেমন ছাত্রদের হলে হয়েছে, তেমনি হয়েছে শিক্ষকদের আবাসিক স্থানেও। সেদিন হত্যা করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষককে। দ্বিতীয়টি প্রসঙ্গে তিনি বিজয়ের মাত্র দু’দিন আগে একাত্তরের ১৪ই ডিসেম্বর জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবী হত্যার কথা উল্লেখ করেন।

এম এম আকাশ বলেন, সেদিন পাকিস্তানিরা হিটলারের পোড়ামাটির নীতি গ্রহণ করেছিল। তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল জাতিকে মেধাশূন্য করা।

কেসি/এইচ.এস


অ‌গ্নিঝরা মার্চ

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন