ছবি : সংগৃহীত
গ্রামের তুলনায় শহরে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেশি। তবে আমাদের বসবাস গ্রামে হোক কিংবা শহরে– ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতন থাকতে হবে। কারণ সচেতনতা ও সতর্কতার মাধ্যমে ডেঙ্গু থেকে বেঁচে থাকা যায়। যেহেতু এডিস মশার মাধ্যমে এ রোগটি ছড়িয়ে পড়ে, তাই অবশ্যই এডিস মশা থেকে সাবধানে থাকতে হবে। সাবধানে থাকার জন্য বসবাসের স্থান, ঘরের আশপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা জরুরি। একইসঙ্গে ঘর কিংবা ছাদে লাগানো গাছের যত্নও নিতে হবে।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে ঘরের যত্ন
ডেঙ্গু প্রতিরোধে বাড়ির আশপাশ, ঘর পরিষ্কার রাখুন। ঘর যেন এডিস মশার বসবাসের স্থান না হয় সেদিকে নজর দিতে হবে।
• ঘরের পরিবেশ যেন স্যাঁতসেঁতে না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তার জন্য ঘরে যেন পর্যাপ্ত আলো, বাতাস প্রবেশ করতে পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে।
• ঘরের আশপাশে কোথাও যেন পানি না জমে থাকে আর থাকলেও তা দ্রুত নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে। এতে মশা বংশবিস্তার করতে পারবে না।
• দিনের শুরু এবং দিনের শেষাংশে ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে রাখতে হবে। কারণ এ সময় এডিস মশা সক্রিয় হয়ে ওঠে।
• ঘরের আশপাশে ময়লা জমতে দেওয়া যাবে না। সবসময় পরিষ্কার রাখতে হবে।
• ফ্রিজের পেছনের অংশের ড্রেনেজ ট্রে, এসির পানি এবং ঘরে যদি মাছের অ্যাকুয়ারিয়াম থাকে তবে সেখানে থাকা পানি দুই-তিন দিন পরপর পরিষ্কার করতে হবে।
• ঘরের কোনাগুলো বিশেষ করে ফ্রিজের পেছনের অংশ, টেবিল এবং বিছানার নিচের অংশ নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে।
আরো পড়ুন : থাইরয়েডের জন্য ৫টি স্বাস্থ্যকর অভ্যাস
• ঘরে যেন মশা প্রবেশ করতে না পারে সে জন্য জানালায় পর্দা কিংবা নেট ব্যবহার করতে হবে। এতে মশার চলাচলের পথ বন্ধ হবে।
• জানালার কাছে বা ঘরের অন্ধকার কোনায় মশা নিধনের বৈদ্যুতিক ফাঁদ ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে মশা কমে যাবে।
• শহরে বসবাস করা অনেকেই ওয়াশরুমে বড় ড্রাম কিংবা বালতিতে পানি ভরে রেখে দেন। তা করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
• এ ছাড়া বাজারে মশা নিধনের বিভিন্ন কীটনাশক পাওয়া যায়, যা ঘর কিংবা ঘরের আশপাশে ব্যবহার করলে মশা মারা যাবে এবং বংশবিস্তার করতে পারবে না। তবে অবশ্যই কীটনাশক ব্যবহারে সতর্ক থাকতে হবে, প্রয়োজনে অভিজ্ঞদের পরামর্শ নিতে হবে।
• মশার কামড় থেকে বাঁচতে মশা নিরোধক লোশন কিংবা ক্রিমও ব্যবহার করা যেতে পারে। ঘুমানোর সময় মশারি টাঙিয়ে ঘুমানোর অভ্যাস করতে হবে।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে গাছের যত্ন
আজকাল অনেকেই ঘরবাড়ি, ব্যালকনির সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য গাছ লাগিয়ে থাকেন। ছাদবাগানেও অনেকে আকৃষ্ট হচ্ছেন। এটা অবশ্যই ভালো বার্তা বহন করে। কিন্তু ডেঙ্গুর মৌসুমে এ গাছগুলোর নিতে হবে বাড়তি যত্ন।
গাছের যত্নে যা করবেন
• গাছের টবগুলোয় যেন পানি জমে না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। কারণ জমে থাকা পানিতে মশা বংশবিস্তার করে।
• ছাদ, ব্যালকনি কিংবা ঘরে যাদের জলজ গাছ রয়েছে তারা সম্ভব হলে দু’তিন দিন পর পানি পরিবর্তন করতে পারেন। তা সম্ভব না হলে ১০-১২ দিন অন্তর অন্তর তুঁতে দিতে হবে। ২৫০ গ্রাম তুঁতে ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে রেখে আধা ড্রামে ২ মিলি করে দিলেই মশা জন্মাতে পারবে না। অন্যান্য পোকাও দূরে থাকবে।
• গাছে পানি দেওয়ার সময় অসাবধানতাবশত পানি ছাদে কিংবা ব্যালকনিতে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে পরিষ্কার করে ফেলুন। এতে স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ তৈরি হবে না।
• ডেঙ্গু মৌসুমে সম্ভব হলে নিয়মিত গাছের টব রাখার স্থানগুলো সরিয়ে ব্লিচিং পাউডার দিয়ে পরিষ্কার করে নিন। এতে ডেঙ্গু বংশবিস্তার করতে পারবে না।
• তুলসী, পুদিনা, ল্যাভেন্ডার, গাঁদা, রোজমারি, সাইট্রোনেলা ইত্যাদি গাছগুলোকে মশার জম বলা হয়। তাই এ গাছগুলো অন্যান্য গাছের পাশাপাশি বারান্দা কিংবা ছাদে লাগাতে পারেন। এগুলো মশা তাড়াতে ভূমিকা রাখবে।
এস/ আই.কে.জে