ছবি- সংগৃহীত
বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় ও সংস্কৃতির সর্ববৃহৎ উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। শাস্ত্র অনুসারে, দেবী দুর্গা ভক্তের ডাকে প্রতিবছর মর্ত্যলোকে আসতে এবং নিজ বাসস্থান কৈলাসে ফিরে যেতে বিশেষ বাহন ব্যবহার করেন। দেবী দুর্গা ও তার সন্তানদের নিজস্ব বাহন থাকলেও দুর্গাপূজায় দেবীর আগমন ও গমন আলাদা বাহনে হয়ে থাকে। সনাতন ধর্ম মতে, সপ্তমী তিথিতে দেবী দুর্গার শক্তি মর্ত্যলোকে অবস্থান করে। আর দশমী পূজার দিন এই শক্তি মর্ত্যলোক থেকে স্বর্গলোকে ফিরে যায়। একেই প্রতীকী অর্থে দেবীর আগমন ও গমন বলা হয়। এই সময় দেবী যে বাহন ব্যবহার করেন তার উপর মর্ত্যলোকের শুভ – অশুভ নির্ধারিত হয়।
সারা বছর মর্ত্যলোক কেমন কাটবে তা দেবী দুর্গার আগমন ও গমনের বাহনের উপরে নির্ভর করে। প্রকৃতির নিয়ম অনুযায়ী, প্রতি বছর দুর্গার আগমন ও গমনের বাহন একই থাকে না। আর সে কারণে প্রতিবছর মর্ত্যলোকের পরিস্থিতিও একই থাকে না।
শাস্ত্র অনুযায়ী, সপ্তমী তিথি রবি বা সোমবার হলে দেবীর বাহন হবে গজ বা হাতি। শনি বা মঙ্গলবার হলে দেবীর বাহন ঘোটক বা ঘোড়া। বৃহস্পতি বা শুক্রবার হলে দেবীর বাহন দোলা বা পালকি। বুধবার হলে দেবীর বাহন নৌকা। অন্যদিকে, বিজয়া দশমী রবি বা সোমবার হলে দেবীর গমনের বাহন হবে গজ বা হাতি। শনি বা মঙ্গলবার হলে বাহন হবে ঘোড়া বা ঘোটক। বৃহস্পতি বা শুক্রবার হলে দেবীর গমন হবে দোলা বা পালকিতে। আর বুধবার হলে বাহন হবে নৌকা।
এবার দেবীর আগমন অর্থাৎ সপ্তমী তিথি ছিল ১০ই অক্টোবর, সোমবার। শাস্ত্র অনুসারে আগমন দোলা বা পালকিতে। অন্যদিকে ১২ই অক্টোবর শনিবার ছিল বিজয়া দশমী। দেবী ঘোড়া বা ঘোটকে চড়ে সন্তানদের নিয়ে কৈলাসে গমন করেছেন।
শাস্ত্র মতে, দেবী দুর্গা যদি পালকি করে আগমন কিংবা গমন করেন, তাহলে ফলাফল ‘দোলায়াং মকরং ভবেৎ 'অর্থ্যাৎ মহামারী, ভূমিকম্প, খরা, যুদ্ধ ও অতিমৃত্যু। দেবী যদি ঘোড়ায় চড়ে গমন করেন কিংবা আগমন করেন তার ফলাফল ‘ছত্র ভঙ্গ স্তরঙ্গমে' অর্থাৎ সামাজিক, রাজনৈতিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পায়, রাষ্ট্রে রাষ্ট্রে যুদ্ধ হয়। এবার দেবীর আগমন ও গমনের ফলাফলে বিশ্ব পরিস্থিতির অশুভ বার্তা দেয়।
আই.কে.জে/