রবিবার, ২২শে ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৮ই পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জীবনের মাঝপথে আয়ের পথ খুঁজছেন?

লাইফস্টাইল ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৪:২৭ অপরাহ্ন, ২রা আগস্ট ২০২৪

#

ছবি : সংগৃহীত

বর্তমান যুগে এখনও অনেক পরিবারে উপার্জনকারী ব্যক্তি বাড়ির কর্তা। কারণ অনেক নারীই আছেন, উচ্চশিক্ষা নেওয়ার পরও বিয়ের পর আর চাকরি করা হয়নি। সংসার ও সন্তান নিয়েই বাকি জীবনটা কাটিয়ে দেবেন ভেবেছিলেন। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়, আকস্মিক কোনো দুর্ঘটনায় স্বামীর অবর্তমানে সেই নারীকেই ধরতে হচ্ছে পরিবারের হাল। তিনি হয়তো শিক্ষিত কিন্তু চাকরির কোনো অভিজ্ঞতা নেই। আবার হয়তো এমন একটি বয়সে এসে পৌঁছেছেন যেখান থেকে শুরু করাটা কঠিন। এমন একটি পরিস্থিতিতেও মাথা ঠান্ডা রেখে আয়-রোজগারের একটি পথ খুঁজে নিতে হয়। কীভাবে শুরু করবেন সেই কঠিন পথের লড়াই?

পরিবারের একমাত্র কর্মক্ষম মানুষের মৃত্যু, আকস্মিক দুর্ঘটনা বা বিচ্ছেদ যে কারও জীবনেই ঘটতে পারে। এ ধরনের ঘটনায় শোক-দুঃখ সামলে উঠে সবচেয়ে বড় করণীয় পরিবারের অন্যদের জন্য ঢাল হয়ে দাঁড়ানো। দ্রুত একটা কাজের মধ‌্যে ঢুকে পড়ে আর্থিক সংকট সমাধানের চেষ্টা যেমন করতে হবে, তেমনি এ ধরনের সংকট ভবিষ‌্যতে এলে কী করতে হবে, তারও একটা পরিকল্পনা থাকা উচিত।

স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে সংসারের জন‌্য আয় ও ব‌্যয় করলেও যার যার মতো সঞ্চয় থাকাটা জরুরি। যেকোনো মুহূর্তে বিপদ হতে পারে, একজন আরেকজনকে ছাড়াই জীবনযাপন করতে হতে পারে, এ বিষয়টি মাথায় রেখে আর্থিক পরিকল্পনা করতে হবে। সন্তানদেরও মনে রাখতে হবে, সব সময় মাথার ওপর ছায়া হয়ে অভিভাবকরা থাকবেন না। তাই যেকোনো পরিস্থিতিতে পরিবারকে সহযোগিতা করার জন‌্য প্রস্তুতি থাকতে হবে। পরিবারের প্রতিটি মানুষ মিলে যেমন একটি দলের মতো, আবার প্রত‌্যেকেরই কিছু না কিছু নিজস্বতা রয়েছে। পরিবারকে সহযোগিতা করতে গেলে সবার আগে নিজের অবস্থান শক্ত করে তৈরি করতে হবে। দেশে-বিদেশে চাকরির বাজারে বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের পেশার চাহিদা রয়েছে। তাই পড়াশোনার পাশাপাশি যেকোনো বিষয়ে আলাদা করে দক্ষ হয়ে ওঠাটাও বিপদে কাজে আসবে।

তবে যেকোনো পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন‌্য আমাদের দরকার একটা সুন্দর পরিকল্পনা এবং বিকল্প পরিকল্পনা। সেই সঙ্গে জরুরি শিক্ষাগত যোগ‌্যতা এবং নিজেকে উত্তরোত্তর দক্ষ করে তোলার প্রচেষ্টা।

আরো পড়ুন : খাওয়ার পরে ক্লান্ত লাগে? সমাধান জেনে নিন

বিশেষজ্ঞের পরামর্শ

করপোরেট কোচের প্রধান পরামর্শক যিশু তরফদার বলেন, ‘হঠাৎ যদি এমন কেউ মারা যান, যার আয়ে পরিবারটি চলত, তাহলে বাকিরা তার অবর্তমানে বিপদে পড়ে। এই অবস্থাকে বলে রিঅ্যাকটিভ বিহেভিয়ার। তাই প্রতিটি পরিবারে সব সময় ব্যাকআপ পরিকল্পনা থাকতে হবে। পরিবারের সবার মধ্যে এমন মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে, যাতে যেকোনো পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে। একই সঙ্গে সদস্যদের সময়োপযোগী যেকোনো একটি দক্ষতার দিকে জোর দিয়ে সেটিতে উপযুক্ত হতে হবে। এমন দক্ষতার দিকে নজর দিতে হবে, যেটির বাজারমূল্য আছে, অর্থাৎ সেলেবল। এই অভ্যাস পরিবারের মধ্যে অবশ্যই চালু রাখা প্রয়োজন। আর প্রতিটি পরিবারেরই কিছুটা সঞ্চয় থাকা জরুরি। সেটি শুধু আয় করা মানুষটির অবর্তমানে কাজে লাগবে তা না, জরুরি অবস্থায় এই সঞ্চয় বিপদ থেকে বাঁচাবে।’

এ তো গেল ভবিষ্যতের জন্য সাবধান হওয়ার পরামর্শ। কিন্তু এই মুহূর্তে যদি কেউ এমন অবস্থার মধ্যে পড়েন, তিনি কী করবেন? যিশু তরফদারের পরামর্শ হলো—প্রোঅ্যাকটিভ বিহেভিয়ার থাকতে হবে। আজকাল অনলাইনেই অনেক রকম কোর্স করা যায়। সময়োপযোগী তেমন কিছু বেছে নিয়ে দক্ষ হতে পারেন, এরপর একটু একটু করে সেই দক্ষতা সেল করতে হবে। আর এই সময়টার মধ্যে সঞ্চয় থাকলে সেখান থেকে একটু একটু করে সার্ভাইভ করতে হবে। পরিবারের সবার অবস্থার পরিবর্তনের মতো মানসিক অবস্থা (অ্যাডাপটেশন স্কিল ডেভেলপ) থাকতে হবে। সেই সঙ্গে নিজের দক্ষতা অনুসারে যোগাযোগ বাড়াতে হবে। প্রত্যেকটি মানুষই কোনো না কোনো বিষয়ে দক্ষ। কেউ হয়তো দীর্ঘদিন কাজের মধ্যে না থাকায় সেটি ঢাকা পড়ে থাকে। তাই সময় নিয়ে ভাবতে হবে নিজে কোন বিষয়ে দক্ষ। সেটি কীভাবে কাজে লাগানো যায়। নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতার সঙ্গে বেমানান কাজও করা লাগতে পারে, সেই মানসিকতা থাকতে হবে।’

এস/  আই.কে.জে


টিপস স্বামী-স্ত্রী

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন