ছবি : সংগৃহীত
প্রাণিজগতের মধ্যে মানব মস্তিষ্কই সবচেয়ে জটিল। প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মস্তিষ্কের আয়তন পুরুষের প্রায় ১৫০০ সিসি ও নারীদের প্রায় ১৩০০ সিসি। নারী-পুরুষের মধ্যে কার মস্তিষ্ক বড়? এ বিষয়ে উত্তর দিয়েছেন ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা।
ক্যামব্রিজ ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এমআরআই-এর মতো পরীক্ষা ব্যবহার করে নারী ও পুরুষের মস্তিষ্কের আকার তুলনা করেছেন। তারা দেখেছেন, পুরুষদের মস্তিষ্ক নারীদের তুলনায় ৮-১৩ শতাংশ বেশি।
মস্তিষ্কের গঠনে লিঙ্গের পার্থক্য নিয়ে ২০ বছরেরও বেশি নিউরোসায়েন্স গবেষণা পর্যালোচনা করে ক্যামব্রিজ মনোরোগবিদ্যা বিভাগের ডক্টরাল প্রার্থী অ্যাম্বার রুইগ্রোক, অধ্যাপক জন সাকলিং ও সাইমন ব্যারন-কোহেনের নেতৃত্বে দলটি মোট ও আঞ্চলিক মস্তিষ্কের পরিমাণে সামগ্রিক লিঙ্গের পার্থক্য পরীক্ষা করে মস্তিষ্কের ইমেজিং সাহিত্যের একটি পরিমাণগত পর্যালোচনা করেছে।
তারা ১৯৯০-২০১৩ সালের মধ্যে প্রকাশিত সব নিবন্ধও পর্যালোচনা করেন। মোট ১২৬টি নিবন্ধ এই গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল, যার মধ্যে জন্ম থেকে ৮০ বছর বয়সী ব্যক্তিদের মস্তিষ্কের কার্যক্রম সম্পর্কেও তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
গবেষকরা দেখেন, পুরুষদের গড় মস্তিষ্কের পরিমাণ নারীদের তুলনায় বেশি (৮-১৩ শতাংশ)। গড় হিসাবে, পুরুষদের ইন্ট্রাক্রানিয়াল স্পেস (১২ শতাংশ; >১৪০০০ মস্তিষ্ক), মোট মস্তিষ্ক (১১ শতাংশ; ২৫২৩ মস্তিষ্ক), সেরিব্রাম (১০ শতাংশ; ১৮৫১ মস্তিষ্ক), ধূসর পদার্থ (৯ শতাংশ; ৭৯৩৪ মস্তিষ্ক) নারীদের তুলনায় বড় পরম আয়তন ছিল)।
আরো পড়ুন : স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণ করুন মাত্র ৫ মিনিটে
সাদা পদার্থ (১৩ শতাংশ; ৭৫১৫ মস্তিষ্ক), সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড (১১.৫ শতাংশ; ৪৪৮৪ মস্তিষ্ক) ও সেরিবেলাম (৯ শতাংশ; ১৮৪২ মস্তিষ্ক) দিয়ে ভরা অঞ্চল।গবেষণায় দেখা গেছে, নারী ও পুরুষের মস্তিষ্কের আকারের পার্থক্য শারীরিক গঠনের কারণে। সাধারণভাবে পুরুষের উচ্চতা নারীর তুলনায় বেশি হয়, যার কারণে তাদের মস্তিষ্কের আকারও প্রভাবিত হয়।
তবে নারীদের মস্তিষ্ক ছোট হলেও গবেষণায় দেখা গেছে, তাদের ইনসুলার কর্টেক্স পুরুষদের তুলনায় বড়। মস্তিষ্কের এই অংশ আবেগ, দৃষ্টিভঙ্গি, যুক্তি ও আত্ম-সচেতনতার সঙ্গে জড়িত। এটিও নারীদের বেশি আবেগপ্রবণ হওয়ার পেছনে কারণ হতে পারে।
অন্যদিকে পুরুষদের অ্যামিগডালে বড় হয়। মস্তিষ্কের এই অংশ মোটর দক্ষতা ও বেঁচে থাকা-ভিত্তিক আবেগের জন্য দায়ী বলে মনে করা হয়। যার কারণে পুরুষদের মধ্যে উপভোগ করার ক্ষমতা, শারীরিক পরিশ্রম, শেখা ও মনে রাখার ক্ষমতা বেশি দেখা যায়।
তবে নর্থওয়েস্টার্ন মেডিসিনের তথ্য বলছে, নারীদের মধ্যে বিষণ্নতা, আলঝেইমার, মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি। এজন্য তাদের এসব রোগ সম্পর্কে আরও সচেতন হতে হবে।
অন্যদিকে পুরুষদের মুখোমুখি হওয়া স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি পরিবর্তিত হয়। তারা অ্যালকোহল আসক্তি, অসামাজিক ব্যক্তিত্বের ব্যাধি, অটিজম ও পারকিনসন্সের উচ্চ ঝুঁকিতে আছে।
সূত্র: এনসিবিআই/ প্রেসওয়্যার ১৮
এস/ আই. কে. জে/
খবরটি শেয়ার করুন