ছবি: সংগৃহীত
শীতে তাপমাত্রা যত কমতে থাকে অসুস্থতা তত বাড়তে থাকে। জ্বর, সর্দি-কাশি, গলা ব্যথা এসময় হয় নিত্যসঙ্গী। আগে মানুষ এসবের সঙ্গে সহজে লড়াই করতে পারলেও, করোনার পর তা কিছুটা কঠিন হয়েছে বলা চলে। কেননা কোভিডের পর মানুষের সার্বিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমেছে।
সাধারণত সর্দি-কাশি হলে রোগীকে ওষুধের পাশাপাশি ফল খাওয়ারও পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু পুষ্টিবিদ ও চিকিৎসকরা বলছেন, ফল খাওয়া ভালো হলেও সর্দিকাশি হলে কিছু ফল এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। কেননা কিছু ফল সুস্থ হওয়ার প্রক্রিয়া দীর্ঘ করতে পারে, বাড়াতে পারে অসুস্থতাজনিত অস্বস্তিও।
বাজারে হরেকরকম ফল রয়েছে। কিছু ফল হঠাৎ করেই আমাদের শরীর ঠান্ডা করে দিতে পারে। গরমে এসব ফল খেলে স্বস্তি মিললেও সর্দি-কাশির সময় না খাওয়াই ভালো। এমনটাই বলছেন পুষ্টিবিদরা।
তরমুজ
তরমুজে পানির পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। জ্বর বা সর্দি-কাশি হলে শরীরের আর্দ্রতা বজায় রাখা জরুরি ঠিকই। কিন্তু শরীর অতিরিক্ত ঠান্ডা হলে তা পাকস্থলীর অ্যাসিডক্ষরণ প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে। এতে বাড়তে পারে শ্লেষ্মা জমার পরিমাণ। বিলম্বিত হতে পারে সুস্থ হয়ে ওঠার প্রক্রিয়া। তাই তরমুজ এড়িয়ে চলুন। খেতে হলেও ঠান্ডা তরমুজ খাবেন না।
আরও পড়ুন: কিভাবে অতিরিক্ত খাওয়ার অভ্যাস বাদ দেবেন?
কলা
ঠান্ডা খাবারের তালিকায় আছে কলা। আয়ুর্বেদ চিকিৎসকের মতে, কলা খেলে জ্বর, সর্দি বাড়তে পারে। কলা থেকে শ্লেষ্মাও বাড়তে পারে। তবে এসব সমস্যা হবে অতিরিক্ত কলা খেলে। অল্প পরিমাণে এই ফল খেতে পারেন।
লেবু জাতীয় ফল
হালকা গরম পানিতে লেবুর রস দিয়ে খাওয়া ভালো। এটি উপকারিও। কিন্তু ঠান্ডা লাগলে লেবুর শরবত, কমলালেবু বা মুসম্বি এড়িয়ে চলাই ভালো। পুষ্টিবিদরা বলছেন, লেবুতে আছে সাইট্রিক অ্যাসিড নামক উপাদান যা গলায় প্রভাব ফেলতে পারে। সর্দিকাশি হলে কিংবা ঠান্ডা লাগলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে সবার আগে গলায় সংক্রমণ হয়। লেবুর অ্যাসিড গলার অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই লেবু খেলেও অল্প পরিমাণে খাওয়াই ভালো।
আঙুর
লেবুর মতোই আঙুরেও রয়েছে টক রস। এটি গলায় সমস্যা তৈরি করতে পারে। এছাড়া আঙুরে আছে হিস্টামিনও যা অ্যালার্জিকে আরও শক্তিশালী করে দেয়। চিকিৎসকরা বলছেন, আঙুর খেতে খুব ইচ্ছে হলে ফ্রিজ থেকে সরাসরি খাবেন না। ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় থাকা আঙুর অল্প পরিমাণে খাওয়া যেতে পারে।
সর্দি-কাশি হলে যেসব ফল খাবেন
বেদানা
বেদানায় আছে অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট ফ্ল্যাভোনয়েড। যা ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে দেয় না। একটি গবেষণা অনুযায়ী, নিয়মিত বেদানা খেলে সর্দি-কাশি হওয়ার ঝুঁকিও অন্তত ৪০ শতাংশ কমে যায়।
আপেল
আপেলেও আছে ফ্ল্যাভোনয়েড। এই উপাদানটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করে তোলে বলে মনে করেন চিকিৎসকরা। তাই সর্দি-কাশি, জ্বর থেকে দ্রুত সেরে উঠতে এই ফল খেতে পারেন।
বেরি জাতীয় ফল
ব্লু বেরি, স্ট্রবেরিতে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট। বেরি জাতীয় ফলও সর্দিকাশিতে ভোগা রোগীর জন্য উপকারী। খাদ্যতালিকায় এমন ফল রাখতে পারেন।
কিউই
কিউইতে রয়েছে মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টস যা শরীরে শ্বেত রক্তকণিকাকে সক্রিয় করতে সাহায্য করে। শ্বেত রক্তকণিকা মানবদেহকে জীবাণু সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচায়। পাশাপাশি, সর্দিকাশি হলে গলাব্যথা থেকে মুক্তিও মিলতে পারে কিউই খেলে।
ফল শরীরের জন্য উপকারি। একেক সময় একেক ফল শরীরের উপকার করে। প্রয়োজন অনুযায়ী ফল খান, সুস্থ থাকুন।
এসি/কেবি
খবরটি শেয়ার করুন