বুধবার, ২রা এপ্রিল ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৮ই চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে নতুন বাংলাদেশে উগ্রবাদ উত্থানের প্রসঙ্গে যা বলা হয়েছে *** নিউইয়র্ক টাইমসের আলোচিত নিবন্ধ নিয়ে যা বলছে সরকার *** সবাই মিলে ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে: খালেদা জিয়া *** শুল্ক নিয়ে কাল কী ঘোষণা দিতে যাচ্ছেন ট্রাম্প *** চীন সফরে সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের বক্তব্যে যা হচ্ছে ভারতে *** তাপপ্রবাহের মধ্যে দেশজুড়ে বৃষ্টির কথা জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর *** প্রধান উপদেষ্টাকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে শাহবাজ শরিফের ফোন *** অধ্যাপক ইউনূসকে নরেন্দ্র মোদির ঈদের শুভেচ্ছা *** দেশে এখন শান্তি ফিরিয়ে আনা জরুরি: প্রধান উপদেষ্টা *** এনসিপির সঙ্গে কাজ করার ইঙ্গিত বিএনপির!

নিরাপত্তাকর্মী থেকে বিসিএস ক্যাডার মোত্তালিব

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০১:২৭ অপরাহ্ন, ২৮শে ডিসেম্বর ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

বিসিএস (শিক্ষা) ক্যাডার সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী মোত্তালিব মিহির। তবে এই সফলতার পথ এতোটা মসৃণ ছিল না। জীবন যুদ্ধে অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে তাকে। জীবিকার তাগিদে নিরাপত্তাকর্মী হিসেবেও কাজ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সাবেক এই শিক্ষার্থী।

শিক্ষাজীবনের বন্ধুর পথ পড়ি দিতে মিহির যুক্ত ছিলেন বিভিন্ন পেশায়। কখনো টিউশনি, কখনো কোচিং-এ শিক্ষাকতা, কখনো প্রুফ রিডারের মতো কাজেও করেছেন।

বগুড়ার শিবগঞ্জের মহাবুল ইসলাম ও জামিলা বিবির একমাত্র সন্তান মোত্তালিব মিহির। বাবা গ্রামে বর্গাচাষি এবং মা গৃহিণী। বাবার স্বল্প আয় চলত সংসার। তার একমাত্র স্বপ্ন কেবল সন্তান মিহিরের ভবিষ্যৎ।

আর্থিক দুরাবস্থার কারণে এক সময় চাচার বাড়িতে ছিলেন মিহির। পরিবার থেকে পড়াশোনার খরচ চালিয়ে নেওয়া প্রায় অসম্ভব হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছিল। এত বাধা-বিপত্তির মাঝেও তিনি এসএসসিতে জিপিএ-৫ এবং এইচএসসিতে জিপিএ- ৪.৫০ পেয়ে উত্তীর্ণ হন।

মোত্তালিব মিহির জানান, এইচএসসি পড়াশোনা শেষে ২০১২ সালে ঢাকায় এসে আর্থিক অভাব অনটনের জন্য আবারও পড়াশোনা প্রায় বন্ধ। একটি সিকিউরিটি কোম্পানিতে চাকরি নেন তিনি। সারাদিন গেইটে বসে ডিউটির মাঝে ছিল তার পড়াশোনার সময়। ছুটি নিয়ে বন্ধুর সঙ্গে দেখা করে বিশ্ববিদ্যালয় কোচিং সম্পর্কে জানতেন। বন্ধুর কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি সম্পর্কে জেনে পড়াশোনার সেই উদ্দীপনা আবারও জাগে মিহিরের। সিকিউরিটি চাকরির বেতন হতে কিছু টাকা জমিয়ে ভর্তি হয়ে যান একটি কোচিংয়ে।

এভাবে চাকরির পাশাপাশি কোচিং করে ২০১৩ সালে ছয়টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পান তিনি। সিকিউরিটি চাকরিটি ছেড়ে দিলে পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাবে এই ভয়ে ঢাকাতেই থেকে যান এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন বলে জানান মিহির।

গ্রাজুয়েশন শেষ করে বিসিএস’সহ চাকুরির পরিক্ষায় ব্যর্থ হয়ে অবশেষে ৪৩তম বিসিএসে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি) তাঁকে শিক্ষা ক্যাডারে নিয়োগের সুপারিশ করেছে।

সফলতা নিয়ে মিহির বলেন, ‘শত বাধা পেরিয়ে আমাকে এই পর্যন্ত আসতে হয়েছে। তবে কখনো হাল ছাড়িনি। আমি এমন একটা গ্রাম থেকে উঠে এসেছি যেখানে ছেলেমেয়েদের নাম লেখা শেখার পরে স্বপ্নই থাকত বিদেশ চলে যাবে। এরকম একটা পরিবেশে আমি স্বপ্ন দেখতাম একদিন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় পড়াশোনা করে সরকারি চাকরি করব। তবে কখনো ভাবিনি বিসিএসের মতো এত প্রতিযোগিতাপূর্ণ একটা পরীক্ষা দিয়ে দেশের প্রথম শ্রেণির একটা চাকরি করব।’

‘জীবনে দরিদ্রতার সঙ্গে সংগ্রাম করে আল্লাহর অশেষ রহমতে আজকে আমি ৪৩তম বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছি। আশা করি নিজের উপর অর্পিত সব দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে দেশের মানুষের সেবা দিতে পারব।’

ভবিষ্যৎ বিসিএস পরীক্ষার্থীদের উদ্দেশে মিহির বলেন, ‘বিসিএস ক্যাডার হওয়া যতটা না কষ্টের তার থেকে বেশি কষ্টসাধ্য কাজ হচ্ছে লেগে থাকা। তাই ধৈর্য ধরে শেষ পর্যন্ত লেগে থাকলে সফলতা আসবেই।’

ওআ/

বিসিএস ক্যাডার নিরাপত্তাকর্মী

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন