শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভারতকে আন্তর্জাতিকভাবে তুলে ধরার কারিগর : নরেন্দ্র মোদী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৬:২০ অপরাহ্ন, ১৭ই সেপ্টেম্বর ২০২৩

#

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি : সংগৃহীত

আজ ৭৩ বছরে পা রাখলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। একজন চা বিক্রেতা থেকে বিশ্বব্যাপী রাষ্ট্রনায়ক হয়ে উঠার তার গল্প সবাইকে অনুপ্রেরণা জোগায়। তার সাহসী নেতৃত্ব ভারতের পরিবর্তন ঘটিয়েছে। 

তিনি এমন এক ব্যক্তিত্ব যিনি কেবল স্বপ্নই দেখেন নি, ঐ স্বপ্ন পূরণও করেছেন।

বৈশ্বিক কূটনৈতিক পরিমণ্ডলে, জি-২০ এর নেতৃত্ব তাকে এক অন্য পরিসীমায় নিয়ে গেছে। তার কূটনৈতিক চিন্তাভাবনা এতোটাই বলিষ্ঠ যে সারাবিশ্বের অনেক রাষ্ট্র ভারতের বন্ধুরাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। 

দিল্লিতে অনুষ্ঠিত জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের সময়, তার কূটনৈতিক দক্ষতা বিশ্ব মঞ্চে ভারতকে পরিচালিত করে।

তিনি পশ্চিম বিশ্ব ও রাশিয়াকে একটি যৌথ ঘোষণায় স্বাক্ষর করতে রাজি করিয়ে অসম্ভবকে সম্ভব করান। একইসাথে জি-২০ এর এবারের থিম "বসুধৈব কুটুম্বকম" এর স্বার্থকতাও সারাবিশ্বের সামনে তুলে ধরেন।

জলবায়ু পরিবর্তন থেকে বিশ্বকে রক্ষা করতে নবায়নযোগ্য শক্তির প্রতি তার যে আস্থা তা আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসনীয় হয়। ২০৭০ সালের মধ্যে ভারতে কার্বন ডাই অক্সাইড ত্যাগের পরিমাণ শূন্যে নেমে আসবে বলে তার এ অঙ্গীকার ভারতকে এক উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যায়।

তাছাড়া ডিজিটাল ইন্ডিয়া প্রচারাভিযানের মাধ্যমে তিনি সরকারি পরিষেবাগুলোকে উন্নত প্রযুক্তির আওতায় নিয়ে আসেন। এ ধরনের চিন্তাভাবনা অনেক বছর ধরেই মানুষের মনে আসলেও মোদী এ চিন্তাভাবনাকে বাস্তবে রূপান্তরিত করেন।

গত নয় বছরে, অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে তিনি অতীতের সমস্ত অপ্রচলিত কাঠামোগুলোকে ভেঙ্গে ফেলেছেন। সরকারকে প্রকৃতভাবে জনগণের সেবায় নিয়োজিত করেছেন তিনি।

সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে দুর্নীতির বেড়াজাল থেকে মুক্ত করে তিনি জনগণের কল্যাণের নিমিত্তে প্রতিষ্ঠানগুলোকে পরিচালিত করেছেন।

একজন চা বিক্রেতা থেকে রাষ্ট্রপ্রধান হয়ে উঠার তার এ গল্প প্রমাণ করে কঠোর পরিশ্রমের দ্বারা মানুষ যেকোন অসম্ভব কাজকে সম্ভব করে তুলতে পারে। শুধু তাই নয়, গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি একজন দক্ষ নেতা হিসেবেও প্রমাণিত, যিনি রাজ্যের উন্নয়নে নিজেকে নিয়োজিত করেছেন। তার অক্লান্ত পরিশ্রমে গুজরাট অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছে।

২০০২, ২০০৭ এবং ২০১২ সালে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে তিনি পরপর তিনটি বিধানসভা নির্বাচনী জয়ী হন।

তবে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তার রাজত্বকালও সমালোচনা বা বিতর্কের উর্ধ্বে ছিল না। ২০০২ সালে গুজরাটের দাঙ্গা এড়াতে ব্যর্থ হন তিনি। এ দাঙ্গায় ১০০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা যায়, যার বেশিরভাগই ছিলেন মুসলমান। এ ঘটনায় মোদীকে দায়ী করা হয়। তবে পরবর্তীতে ২০১২ সালে সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত এক বিশেষ তদন্ত টিম মোদীকে নির্দোষ বলে ঘোষণা দেন।

মোদীর জনপ্রিয়তা ভারতের সীমানা পেরিয়ে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। এর প্রমাণ পাওয়া যায় তার বৈদেশিক সফরের সময়। বৈদেশিক সফরের সময় বিপুল পরিমাণ মানুষ তাকে একটিবার দেখার জন্য ভীড় করে।

বিদেশের মাটিতে তার জনপ্রিয়তা প্রকৃতপক্ষে ভারতের ক্ষমতারই প্রমাণ। বিশাল জনসমাগম এবং আন্তর্জাতিক প্রশংসা বিশ্ব মঞ্চে ভারতের অবস্থানকে উন্নীত করেছে। 

তিনি সরাসরি মন্ত্রী, আমলা এবং জনপ্রতিনিধিদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে যেকোনো দুর্নীতি বা ভুল বুঝাবুঝি রোধ করেন। তিনি সবসময়ই জবাবদিহিতাকে গুরুত্ব দিয়েছেন, যার ফলে তিনি জনগণের কাছে অধিক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন।

যেকোনো ধরনের সাহসী সিদ্ধান্ত নিতেই তিনি অকপট। এ বৈশিষ্ট্যই তাকে সকলের চেয়ে আলাদা করে তোলে। 

সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের প্রতিক্রিয়া স্বরূপ সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হোক কিংবা ভারতের শক্তির চাহিদা সুরক্ষিত করার জন্য রাশিয়ান তেল ক্রয়, তিনি সর্বদাই জাতির স্বার্থকে সবার উপরে রেখেছেন। 

যদিও তার সকল সিদ্ধান্ত প্রশংসিত হয়নি, বরং কিছু কিছু সিদ্ধান্ত সমালোচনার স্বীকারও হয়েছে, তবুও ভারতীয় নাগরিকদের চাহিদাকে সবার উপরে রাখা সত্যিই প্রশংসনীয়। 

টুইটার, ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, ইউটিউব এর মত বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার ফ্যান ফলোয়ারের সংখ্যা অসংখ্য। তাছাড়া মাসিক রেডিও প্রোগ্রাম "মন কি বাতে" তিনি শ্রোতাদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করেন। এসময় তিনি শ্রোতাদের তার নিজস্ব পরিকল্পনার কথা বলেন এবং তাদের কাছে পরামর্শের আমন্ত্রণ জানান।

তবে তার শাসনামলে তিনি এখন পর্যন্ত কোন সংবাদ সম্মেলন করেননি। 

তবে সমালোচনা ছাড়া তারে শাসনামল সফল বলেও বিবেচিত হয় না। অনেকের কাছে তিনি ধর্মীয় উগ্রবাদী, তবে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তিনি ভারতকে এক অনন্য পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছেন।

এসকে/ এএম/

 

ভারত জি-২০ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মুখ্যমন্ত্রী চা বিক্রেতা

খবরটি শেয়ার করুন