ফাইল ছবি
বঙ্গোপসাগরে ফের একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হতে যাচ্ছে। এরই মধ্যে লঘুচাপটি ক্রমে শক্তিশালী হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) সকালে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়ে বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।
আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান জানান, শুক্রবার সকালের দিকে গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। এটি উত্তর ও উত্তর-পূর্বে বাংলাদেশের দিকেই এগোচ্ছে। এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী এটি শনিবার (১৮ নভেম্বর) শেষ রাত থেকে সকাল নাগাদ বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে।
তবে এটি কখন আঘাত হানবে তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি তিনি।
এই আবহাওয়াবিদ আরও জানান, এটি খুলনা ও বরিশালের মাঝখান দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। তবে এটি যে কোনো সময় গতিপথ পরিবর্তনও করতে পারে।
এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে এর নাম হবে ‘মিধিলি’। এটি একটি সাধারণ সাইক্লোন হবে। এটি খুব দ্রুত ঘনীভূত হয়েছে।
এদিকে আবহাওয়া অফিসের চার নম্বর বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তার কাছাকাছি এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে একই এলাকায় গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) সকালে আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক স্বাক্ষরিত বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (ক্রমিক নম্বর: ৪) এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নিম্নচাপটি সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৮৫ ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৫৫ ও পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে।
এ ছাড়া গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিমি পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের কাছাকাছি এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চলনশীল মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তার কাছাকাছি বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
এ জন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। সেইসঙ্গে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার সব নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া তাদেরকে গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।
গত মাসে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ এর সৃষ্টি হয়। এটি গত ২৪ অক্টোবর কুতুবদিয়ার কাছ দিয়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করে।