ছবি: সংগৃহীত
সৌদি আরব সম্প্রতি বিদেশি কর্মী নিয়োগে একটি নতুন ওয়ার্ক পারমিট শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতি চালু করেছে। এটির লক্ষ্য হলো, দেশটির শ্রমবাজারে নমনীয়তা আনা এবং উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন আন্তর্জাতিক জনশক্তিকে আকৃষ্ট করা। খবর দ্য ন্যাশনালের।
দেশটির মানবসম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয় ঘোষিত এ নতুন ব্যবস্থা অনুযায়ী, বিদেশি কর্মীদের ওয়ার্ক পারমিট এখন থেকে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা হবে। এগুলো হলো, যথাক্রমে—উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন, দক্ষ ও সাধারণ কর্মী। একাধিক মানদণ্ডের ভিত্তিতে এ শ্রেণিবিন্যাস নির্ধারিত হবে—যেমন শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশাগত অভিজ্ঞতা, নির্দিষ্ট দক্ষতা, বেতন ও বয়স।
নতুন ব্যবস্থাটি দুই ধাপে কার্যকর হচ্ছে। প্রথম ধাপে, সৌদি আরবে বর্তমানে কর্মরত বিদেশি কর্মীদের ক্ষেত্রে ৫ই জুলাই থেকে এ শ্রেণিবিন্যাস ইতিমধ্যে কার্যকর হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে আগামী ৩রা আগস্ট থেকে নতুন করে সৌদি আরবে প্রবেশ করতে চাওয়া বিদেশি কর্মীদের ক্ষেত্রেও এটি কার্যকর হবে।
এ পদক্ষেপকে অনেকে ইতিবাচক হিসেবে দেখলেও বাস্তবায়নের ধরন নিয়ে কিছু উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কর্মী সরবরাহকারী সংস্থা তথা নিয়োগদাতারা। বিশেষ করে, যারা কম দক্ষ বা মোটামুটি চালিয়ে নেওয়ার মতো কর্মী, তাদের জন্য ঝুঁকি বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
কম দক্ষতাভিত্তিক পেশাগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রশাসনিক সহকারী, ড্রাইভার, হেলপার, জুনিয়র হিসাবরক্ষক, খুচরা বিক্রয়কর্মী ও কল সেন্টার কর্মী। তবে এ ধরনের পেশাগুলো প্রথমেই ‘সৌদিকরণ’ বা স্থানীয় নাগরিকদের মাধ্যমে প্রতিস্থাপনের চাপে পড়বে বলে ধারণা করছেন নিয়োগ বিশেষজ্ঞরা।
এর পাশাপাশি মধ্যপর্যায়ের কিছু কাজ, যেমন—জুনিয়র সুপারভাইজার বা টেকনিশিয়ানদের চাকরিও ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। তবে যারা প্রকৌশল, প্রযুক্তি, উচ্চপর্যায়ের আর্থিক দায়িত্ব কিংবা সিনিয়র ব্যবস্থাপনা পর্যায়ে কাজ করেন, তাদের জন্য এখনো সুযোগ উন্মুক্ত থাকবে।
আজ বুধবার (৯ই জুলাই) আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনাল জানিয়েছে, এ নতুন ব্যবস্থার পেছনে সৌদি আরবের একটি কৌশলগত লক্ষ্য রয়েছে। আর তা হলো—বিদেশি দক্ষ জনশক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশীয় কর্মীদের দক্ষ করে তোলা এবং তাদের মধ্যে বিশেষায়িত জ্ঞান হস্তান্তর করা।
বর্তমানে সৌদি সরকার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, স্বাস্থ্যসেবা ও প্রযুক্তির মতো খাতে ব্যাপকভাবে দক্ষ জনবল উন্নয়নে মনোযোগ দিচ্ছে। এ খাতে এখনো দেশীয় জনশক্তির অভাব রয়েছে, ফলে বিদেশি বিশেষজ্ঞদের চাহিদা এখনো প্রবল।
নিয়োগদাতারা মত দিয়েছেন, নতুন ব্যবস্থাটি আগের তুলনায় অনেক বেশি বাস্তবতানির্ভর ও নমনীয়। যেমন, কেউ যদি ডিগ্রিবিহীন হয়েও দীর্ঘ অভিজ্ঞতাসম্পন্ন হন, তাহলে এখন সেটিও বিবেচনায় আসবে।
অর্থাৎ দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা—দুয়ের ভারসাম্য বিবেচনায় নিয়ে ওয়ার্ক পারমিট দেওয়া হবে। ফলে অনেক অভিজ্ঞ কিন্তু ডিগ্রি না থাকা কর্মীও এখন সৌদি আরবে কাজের সুযোগ পেতে পারেন।
খবরটি শেয়ার করুন