ছবি: সংগৃহীত
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলায় গোহালা নদীর আড়াই কিলোমিটার এলাকা এক ব্যবসায়ীর কাছে ইজারা দিয়েছে স্থানীয় একটি মসজিদ কমিটি। এতে অসন্তোষ ও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন জেলেরা। গত বৃহস্পতিবার (২রা অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার 'উধুনিয়া বাজার জামে মসজিদ' কমিটি উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, উধুনিয়া বাজারে একদল ব্যক্তি টেন্ডারে অংশ নেন। এক লাখ ৬০ হাজার টাকায় নদীর আড়াই কিলোমিটার এলাকা এক বছরের জন্য লিজ দেওয়া হয়।
মসজিদ কমিটির সভাপতির মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে কমিটির সহসভাপতি হাজি আব্দুল হামিদ স্থানীয় এক সাংবাদিককে নদীর একটি অংশ লিজ দেওয়ার তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
হামিদ বলেন, মসজিদের উন্নয়নের স্বার্থে গোহালা নদীর একটি অংশ লিজ দেওয়া হয়েছে। এভাবে লিজ দেওয়া বৈধ কি না জানতে চাইলে তিনি কোনো জবাব দিতে পারেননি।
উধুনিয়া বাজার এলাকার বাসিন্দা ও স্থানীয় দোকানি মো. সোহেল রানা জানান, উন্মুক্ত দরপত্রে স্থানীয় ব্যবসায়ী ইউসুফ আলী মোল্লা নদীটির লিজ পান।
তিনি বলেন, এর আগে এলাকায় মাইকিং করে দরপত্র আহ্বান করা হলে অনেকে অংশ নেন। চার-পাঁচজন দরদাতা ৩৫ হাজার টাকা থেকে দর ডাকেন। সোহেলের দাবি, লিজগ্রহীতা পেশায় জেলে নন।
নদী লিজ দেওয়ার ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় জেলেরা। তাদের অভিযোগ, নদীতে মাছ ধরতে পারছেন না তারা।
উধুনিয়া গ্রামের জেলে মো. আব্দুল মান্নান বলেন, 'গত চার দশক ধরে আমরা গোহালা নদীতে মাছ ধরছি, কখনো কেউ বাধা দেয়নি। এখন মাছ ধরতে হলে লিজগ্রহীতাকে টাকা দিতে হচ্ছে।' 'আমার মতো গ্রামের শতাধিক জেলে জীবিকা নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন,' বলেন তিনি।
মান্নান আরও বলেন, 'বর্ষার পানি কমে আসার সঙ্গে সঙ্গে প্রভাবশালীরা বাঁশের বেড়া বসিয়ে মাছ ধরছে, ফলে গরিব জেলেরা বঞ্চিত হচ্ছে।'
চলনবিল আন্দোলনের সংগঠক এসএম মিজানুর রহমান বলেন, 'গোহালা নদী চলনবিলের অন্যতম প্রধান নদী। এই নদী দিয়ে বিলে পানি প্রবেশ করে এবং বের হয়। এভাবে নদী লিজ দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই, কারণ এতে পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হতে পারে।'
উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু সালেহ মো. হাসনাত বলেন, 'নদী লিজ দেওয়ার কোনো নিয়ম নেই। এটা অবশ্যই অবৈধ।' তিনি আরও বলেন, 'বিষয়টি আমি শুনেছি। এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিচ্ছি।'
জে.এস/
খবরটি শেয়ার করুন