বৃহস্পতিবার, ৪ঠা ডিসেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২০শে অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** নিবন্ধন পাচ্ছে ‘আমজনতার দল’, প্রতীকের বিষয়ে যা জানা গেল *** এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আসতে দেরি হতে পারে, জুবাইদা রহমান ঢাকায় আসছেন *** খালেদা জিয়াকে দেখতে হাসপাতালে আইজিপি ও ডিএমপির কমিশনার *** আগামীকাল লন্ডনে নেওয়া হতে পারে খালেদা জিয়াকে *** তারেক রহমান এসএসএফ নিরাপত্তা পাবেন কিনা, যা জানালেন সৈয়দা রিজওয়ানা *** কিশোরগঞ্জের ইউএনও হিসেবে নিয়োগ পেলেন সাবেক লাক্স সুন্দরী *** ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুখে ‘বর্ণবাদের দুর্গন্ধ’ *** আগামীকাল সকালে দেশে পৌঁছানোর চেষ্টা করবেন জোবাইদা রহমান *** তেলের দাম বাড়ানো ব্যবসায়ীদের ‘কারণ দর্শানোর’ নোটিশ দিয়ে বৈঠকে ডেকেছে সরকার *** ৭ দিন নীরবতার পর ইমরানের টুইট, ভেঙে দিলেন দলের রাজনৈতিক কমিটি

স্ত্রী বেশি আয় করলে স্বামীরা খুশি হন না কেন?

লাইফস্টাইল ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৮:২৮ অপরাহ্ন, ২০শে মে ২০২৫

#

ছবি: সংগৃহীত

সমাজে নারীর অগ্রগতি, বিশেষত কর্মক্ষেত্রে তাদের উপার্জন বৃদ্ধি পারিবারিক সম্পর্কে নতুন মেরুকরণ তৈরি করছে। পুরুষই পরিবারে প্রধান উপার্জনকারী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত ধারণার বিপরীতে যখন স্ত্রীরা স্বামীর চেয়ে বেশি আয় করেন, তখন পুরুষদের মধ্যে একধরনের মানসিক চাপ ও অসন্তোষ তৈরি হচ্ছে, যা তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। 

এটি শুধু ব্যক্তিগত সম্পর্ককেই প্রভাবিত করছে না, বরং পারিবারিক ক্ষমতা কাঠামো ও বৃহত্তর সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির ওপরও ফেলছে সুদূরপ্রসারী প্রভাব। সম্প্রতি এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

গবেষণায় অংশ নেওয়া কয়েক পুরুষ তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন। ডেভ নামের এক ব্যক্তি বাড়িতে থাকেন ও সন্তানদের দেখাশোনা করেন। এ ধরনের পুরুষরা ‘স্টে-অ্যাট-হোম ড্যাড’ হিসেবে পরিচিত। ডেভ বলেন, আপনার স্ত্রী যখন সব টাকা উপার্জন করছেন, তখন আপনার আত্মসম্মানে কিছুটা আঘাত লাগবে।

টম নামের আরেকজন নিজেকে ‘গাইস গাই’ বা প্রথাগত পুরুষালি বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আপনি যখন তাদের (বন্ধুদের) বলেন যে, আপনি বাড়িতে থাকেন, তখন তারা আপনাকে মেয়েলি স্বভাবের ভাববেন। ব্রেন্ডন নামের আরেক ব্যক্তি বলেন, তিনি তার পরিবারের সদস্যদের কাছে ‘হাউস বিচ’ (গৃহস্থালি কাজের জন্য অপমানজনক সম্বোধন) হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।

এ উদাহরণগুলো থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, যেসব পুরুষ কর্মজীবী নন এবং যাদের স্ত্রী পরিবারে মূল উপার্জনকারী, তাদের অনেকে সামাজিক বিচার-বিশ্লেষণের মুখোমুখি হন। কারণ, সমাজে দীর্ঘদিন ধরেই পুরুষদের মূল উপার্জনকারী হিসেবে দেখা হয়। কিন্তু এখন অনেক নারী তাদের স্বামীদের চেয়ে বেশি উপার্জন করছেন। এ পরিবর্তন পারিবারিক শক্তির ভারসাম্য ও সমাজে পুরুষ-নারীর ভূমিকার ওপর গভীর প্রভাব ফেলছে।

পুরুষদের মানসিক স্বাস্থ্যেও এর প্রভাব পড়ছে। কারণ, অর্থের সঙ্গে ক্ষমতার সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ। যখন একজন পুরুষ নিজের স্ত্রী বা সঙ্গীর চেয়ে কম উপার্জন করেন, তখন তিনি সমাজের চাপে নিজের অবস্থান দুর্বল মনে করতে পারেন। এতে মানসিক অস্থিরতা তৈরি হতে পারে, এমনকি সম্পর্কেও টানাপোড়েন বাড়তে পারে।

এর আগে কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, যখন একজন নারী তার সঙ্গীর চেয়ে বেশি আয় করেন, তখন পুরুষের আত্মসম্মান, সুখ ও সম্পর্কের স্থিতিশীলতায় প্রভাব পড়ে। এটি বিশেষত তখনই বেশি হয়, যখন পুরুষটি নিজের কর্মসংস্থান হারিয়ে ঘরে থাকতে বাধ্য হন।

সুইডেনে ১০ বছরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, যখন স্ত্রীরা স্বামীদের চেয়ে বেশি আয় করতে শুরু করেন, তখন পুরুষদের মধ্যে মানসিক রোগ নির্ণয়ের হার ১১ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়। একই অবস্থা নারীদের (৮ শতাংশ) ক্ষেত্রেও দেখা যায়, তবে পুরুষদের ক্ষেত্রে এটি বেশি। ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ডেমিড গেটিক জানান, এ ধরনের মানসিক সমস্যা অনেক সময় সম্পর্কের অসন্তোষেরও কারণ হতে পারে।

অন্য এক গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব পুরুষ স্ত্রীদের চেয়ে কম আয় করেন, তাদের মধ্যে প্রতারণার হারও বেশি, যেন তারা এটা করেই তাদের পুরুষত্বকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চান।

কাজ না থাকলে পুরুষদের মধ্যে বিষণ্নতার হার নারীদের তুলনায় বেশি থাকে। কারণ, নারীদের ঘরের কাজের বাইরে সামাজিক সম্পর্ক বেশি থাকে। অপরদিকে ‘স্টে-অ্যাট-হোম ড্যাড’ অর্থাৎ যারা ঘরে থেকে সন্তান পালন করেন, তাদের মাঝে একাকিত্ব বেশি। অস্ট্রেলিয়ার সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার হ্যারি বানটন জানান, চাকরি হারানোর পর তিনি অনুভব করেন ‘একজন মানুষ, স্বামী ও বাবা হিসেবে তার মূল্যবোধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে’।

এইচ.এস/

গবেষণা

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন

Footer Up 970x250