রবিবার, ১৯শে অক্টোবর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৪ঠা কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাজায় যুদ্ধ বন্ধের ‘ভালো সুযোগ’ নিয়ে ‘ইতিবাচক’ আলোচনা চলছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০২:৪৯ অপরাহ্ন, ৭ই অক্টোবর ২০২৫

#

ছবি: সংগৃহীত

গাজায় ইসরায়েল আগ্রাসন শেষ করতে আমেরিকার শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে চূড়ান্ত সমঝোতায় পৌঁছানোর লক্ষ্যে পরোক্ষ আলোচনা আজ (৭ই অক্টোবর) মঙ্গলবারও চলবে। মিসরের শারম আল-শেখে চলমান এই আলোচনার প্রথম ধাপ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই আলোচনাকে ‘ভালো সুযোগ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।

ফিলিস্তিনি ও মিসরীয় কর্মকর্তারা বিবিসিকে জানিয়েছেন, বৈঠকগুলো মূলত এমন পরিস্থিতি তৈরির দিকে মনোযোগ দিচ্ছে, যাতে জিম্মি–বন্দী বিনিময়ের পথ খোলে। এতে সব ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়ে বিনিময়ে বহু ফিলিস্তিনি বন্দীকে ছেড়ে দেওয়া হবে।

এদিকে, শারম আল–শেখে বিভিন্ন পক্ষের কর্মকর্তারা গতকাল সোমবার বৈঠকে বসার সময় আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের হাতে এখন সত্যিই ভালো একটা সুযোগ এসেছে। আর এটা দীর্ঘস্থায়ী চুক্তি হবে।’

হামাস বলেছে, তারা আংশিকভাবে শান্তি পরিকল্পনার প্রস্তাবে সম্মত। তবে কয়েকটি মূল শর্তে সাড়া দেয়নি। এর মধ্যে রয়েছে হামাসের নিরস্ত্রীকরণ এবং গাজা শাসনে আর কোনো ভূমিকা না রাখা। এক জ্যেষ্ঠ ইসরায়েলি নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আলোচনার শুরুতে শুধু জিম্মি মুক্তির বিষয়টি নিয়েই অগ্রসর হওয়া হবে এবং হামাসকে কয়েক দিন সময় দেওয়া হবে এ ধাপ শেষ করতে।

দ্বিতীয় দিনের বৈঠকে মিসর ও কাতারের কর্মকর্তারা আলাদা আলাদাভাবে ইসরায়েল ও হামাসের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ‘ধারাবাহিক বৈঠক’ করবেন।

ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমারও একই দিনে এক বিবৃতিতে ট্রাম্পের পরিকল্পনার প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেছেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় আমেরিকার এই উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই। আমাদের সরকার সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করবে, যেন একদিন ইসরায়েলের প্রতিটি শিশু তাদের ফিলিস্তিনি প্রতিবেশীর সঙ্গে শান্তি ও নিরাপত্তায় বসবাস করতে পারে।’

কূটনীতিকদের মতে, এ আলোচনা যুদ্ধ শুরুর পর থেকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো নির্ধারণ করবে যুদ্ধ শেষের পথে কোনো বাস্তব অগ্রগতি আসবে কি না।

এ আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন আমেরিকার বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ, ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনার এবং কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল থানি। ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, গাজা যুদ্ধের অবসানে সবাইকে দ্রুত এগোতে হবে। তার দাবি, শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপ—যার মধ্যে জিম্মি মুক্তির বিষয় আছে—এ সপ্তাহেই সম্পন্ন হওয়ার কথা।

সোমবার হোয়াইট হাউসে তিনি বলেন, ‘হামাস গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে রাজি হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি সত্যিই মনে করি, আমরা একটা চুক্তি করতে যাচ্ছি।’

রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আলোচনার ঘনিষ্ঠ এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সোমবার রাত পর্যন্ত প্রথম বৈঠক চলেছে এবং মঙ্গলবার আবার নতুন করে আলোচনা হবে। মিসরের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আল-কাহেরা নিউজও জানিয়েছে, মঙ্গলবার আলোচনা চলবে এবং সোমবারের বৈঠক শেষ হয়েছে ‘ইতিবাচক পরিবেশে।’

ট্রাম্প ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর মধ্যে হওয়া ২০ দফা পরিকল্পনায় তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি, ৪৮ জন জিম্মি মুক্তির কথা বলা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এদের মধ্যে মাত্র ২০ জন জীবিত আছেন। বিনিময়ে শত শত ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেওয়ার প্রস্তাব রয়েছে।

পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, উভয় পক্ষ সম্মত হলেই গাজায় দ্রুত পূর্ণমাত্রায় ত্রাণ সহায়তা পৌঁছানো হবে। এ ছাড়া, গাজা শাসনে হামাসের কোনো ভূমিকা থাকবে না। ভবিষ্যতে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের সম্ভাবনার পথ খোলা রাখা হয়েছে।

জে.এস/

ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজা উপত্যকা

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন

Footer Up 970x250