বৃহস্পতিবার, ২০শে নভেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৫ই অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** নভেম্বরের ১৮ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১৯০৪ মিলিয়ন ডলার *** ফেসবুকে তারেক রহমানকে ‘কটূক্তি’র অভিযোগে মামলার আবেদন *** কারাগারে পছন্দের খাবার না পেয়ে বন্দির মামলা *** আন্তর্জাতিক কার্ড দিয়ে কেনা যাবে বিমান টিকিট *** সিপিবির মনোনয়ন ফরম বিতরণ শুরু আগামীকাল *** শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনে সামরিক বাহিনীর সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা *** আমরা ট্রানজিশনাল পিরিয়ডে আছি, একটা দোলাচল চলছে: মির্জা ফখরুল *** ‘খাসোগি হত্যার বিষয়ে' কিছুই জানতেন না সৌদি যুবরাজ: ট্রাম্প *** সাংবাদিক মিজানুরকে তুলে নেওয়া প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা: ‘তদন্তের পর জানতে পারব’ *** 'ছাত্র উপদেষ্টারা যাতে কোনোভাবেই দেশ ছেড়ে পালাতে না পারেন'

গরুর নেহারি খেলে কি সত্যিই শরীরে ক্যালসিয়াম বাড়ে?

লাইফস্টাইল ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৩:৩৫ অপরাহ্ন, ৫ই জুলাই ২০২৪

#

ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের খুবই জনপ্রিয় একটি খাবার গরুর নেহারি। দেশের আনাচে-কানাচে ফুটপাতে কিংবা নামিদামি রেস্তোরাঁয় এটি বিক্রি হয় প্রচুর পরিমাণে। এই খাবারটি অষ্টাদশ শতাব্দীতে ভারতীয় উপমহাদেশে মুঘল সাম্রাজ্যের মাধ্যমে বিস্তার লাভ করে। খাবারটি মূলত গরু, ভেড়া কিংবা ছাগলের পা প্রক্রিয়াজাত করে বিভিন্ন ধরনের মসলার সমন্বয়ে রান্না করে তৈরি করা হয়। অনেকের মতে, গরুর নেহারি খেলে শরীরে ক্যালসিয়াম বৃদ্ধি পায়। তবে গরুর নেহারি খেলে কি সত্যিই শরীরে ক্যালসিয়াম বাড়ে?

আমাদের দেশে নেহারি তৈরি করা হয় গরুর পা প্রক্রিয়াজাতকরণ করে। গরুর পায়ের যে হাড় সেটির মাঝখানে নরম তুলতুলে স্পঞ্জের মত যে অংশ বিদ্যমান সেটিকে বোন ম্যারো বা অস্থিমজ্জা বলা হয়। মূলত গরুর অস্থিমজ্জা খাওয়ার জন্য এভাবে নেহারি রান্না করা হয়।

আরো পড়ুন : মায়ের স্মার্টফোন আসক্তিতে বাধাগ্রস্ত হতে পারে শিশুর ভাষার বিকাশ

গরুর অস্থিমজ্জা সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে একটি হলো—লাল অস্থিমজ্জা (রেড বোন ম্যারো) আরেকটি হলো—হলুদ অস্থিমজ্জা (ইয়োলো বোন ম্যারো)। আমাদের দেশে যেসব গরুর পায়ের হাড় সংগ্রহ করে নেহারি তৈরি করা হয় সেগুলো সাধারণত পূর্ণবয়স্ক হয়ে থাকে। আর পূর্ণবয়স্ক গরুর পায়ের হাড়ে সাধারণত হলুদ অস্থিমজ্জা থাকে এবং লাল অস্থিমজ্জার পরিমাণ খুবই কম থাকে।

হলুদ অস্থিমজ্জার মোট ওজনের অন্তত ৮০ শতাংশ অ্যাডিপোজ টিস্যু দিয়ে পরিপূর্ণ থাকে। এই টিস্যুতে রয়েছে ফ্যাট সেল বা অ্যাডিপোসাইটস, যা সাধারণত ট্রাইগ্লিসারাইড হিসেবে শক্তি সঞ্চয় করে। মূলত এই কোষগুলোই অস্থিমজ্জাকে হলুদ রঙে রঞ্জিত করে। এ ছাড়া এই টিস্যুতে রয়েছে ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড (যেমন—কনজুগেটেড লিনোলেয়িক অ্যাসিড) ও মনোআনসেচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড (যেমন—অলেয়িক অ্যাসিড)। স্নেহে দ্রবণীয় ভিটামিন যেমন—এ, ডি, ই, কে ইত্যাদি সঞ্চিত থাকে ও শোষিত হয় এই কোষের মাধ্যমে। 

গরুর অস্থিমজ্জার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো কোলাজেন। এটি হলো এক ধরনের প্রোটিন বা আমিষ। গরুর অস্থিমজ্জায় সাধারণত টাইপ-১ এবং টাইপ-২ কোলাজেন পাওয়া যায়। রান্না করার পর সাধারণত কোলাজেন জিলাটিনে রূপান্তরিত হয়। জিলাটিনের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ অ্যামাইনো অ্যাসিড থাকে যেমন—গ্লাইসিন, প্রোলিন, হাইড্রোক্সিপ্রোলিন ও গ্লুটামিক এসিড ইত্যাদি।  

গরুর অস্থিমজ্জার মধ্যে আরো রয়েছে আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, জিংক, গ্লুকোসামিন ও কনড্রয়টিন সালফেট‌। মজার ব্যাপার হলো, গরুর অস্থিমজ্জায় ক্যালসিয়ামের মাত্রা খুবই কম। প্রতি ১০০ গ্রাম গরুর অস্থিমজ্জায় মাত্র ১৭ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়, যা অন্যান্য ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবারের তুলনায় খুবই কম।

সুতরাং এটি থেকে স্পষ্ট প্রমাণিত যে, নেহারি খেলে দেহে ক্যালসিয়ামের মাত্রা বৃদ্ধি পায় না, বরং কিছু উপকারী স্নেহ (লিপিড) ও কোলাজেনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়, যা আমাদের সুস্থ থাকতে সহায়তা করে। তাই আমাদের দেশে প্রচলিত যে ধারণাটি রয়েছে তা ভুল। সুতরাং এই খাবারটি আমাদের প্রয়োজনীয় পরিমাণে গ্রহণ করা উচিত।

এস/ আই.কে.জে

ক্যালসিয়াম গরুর নেহারি

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন

Footer Up 970x250