ছবি: সংগৃহীত
দীর্ঘ ২০ বছর ধরে সৌদি নাগরিক শেখ হামুদ আলী আল খালাফের অধীনে কাজ করে আসছিলেন বাংলাদেশি কর্মী মোক্তার ঢালী (৪০)। তার কর্মনিষ্ঠা ও সততায় মুগ্ধ মালিকও।
এমন বিশ্বস্ততার প্রতিদান হিসেবে বাংলাদেশে কর্মীর নিজ বাড়িতে চার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করে দিলেন দৃষ্টিনন্দন মসজিদ। এমনকি সেই মসজিদে এসে মুসল্লিদের সঙ্গে নামাজও আদায় করেছেন তিনি।
স্থানীয়রা জানান, শরীয়তপুরের ডামুড্যা পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কুলকুড়ি এলাকায় মৃত জমসেদ ঢালীর ছেলে মোক্তার ঢালী। তার বয়স যখন ২০ বছর তখন পারিবারিক স্বচ্ছলতা ফেরাতে সৌদি আরবে চলে যান তিনি। সেখানে জেদ্দা শহরের ধনকুবের শেখ হামুদ আলী আল খালাফ নামের এক ব্যক্তির অধীনে দোকান দেখাশোনার কাজ করতেন।
দীর্ঘদিনের কর্মজীবনে মালিকের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে মোক্তারের। কাজের ফাঁকে একদিন মালিককে তাদের নিজবাড়ির ভাঙা মসজিদটিকে নতুন করে নির্মাণ করে দিতে বলেন। মালিকও মোক্তারের কথায় না করেননি। প্রস্তাবে রাজি হয়ে অন্তত ৪ কোটি টাকা খরচ করে দেড় বছর সময়ে কুলকুড়ি কবিরাজ বাড়ি জামে মসজিদটি নির্মাণ করে দেন।
মসজিদটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে গত শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সৌদি এয়ারলাইনসের একটি বিমানে চার মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশে আসেন সৌদি নাগরিক শেখ হামুদ আলী আল খালাফ। পরে বিমানবন্দর থেকে তিনটি গাড়ি নিয়ে শরীয়তপুরের ডামুড্যায় আসেন। এ সময় তিনি কুলকুড়ি এলাকায় পৌঁছালে তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন এলাকাবাসী। নিজের টাকায় নির্মিত মসজিদ দেখে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করেন খালাফ ও তার পরিবার।
খালাফের আগমন উপলক্ষে কুলকুড়ি এলাকায় এদিন উৎসবের আমেজ তৈরি হয়। তাদেরকে এক নজর দেখতে ভিড় করেন শিশু, বৃদ্ধ ও নারীসহ সকল বয়সের মানুষ।
স্থানীয় বাসিন্দা হারুন-অর রশিদ বলেন, আমাদের এলাকার এই মসজিদটি একসময় জরাজীর্ণ ছিল। আল্লাহর কুদরত হিসেবে এমন একটি দৃষ্টিনন্দন মসজিদ তৈরি করে দিলেন শেখ সাব। আমরা তার প্রতি এলাকার সবাই কৃতজ্ঞ।
কর্মী মোক্তার ঢালী বলেন, আমরা সত্যিই অনেক আনন্দিত। আমার মালিক অনেক বেশি আন্তরিক এবং কর্মীবান্ধব। আমি মসজিদের কথা বলার পরই রাজি হয়ে যান। সবাই আমার মালিকের জন্য দোয়া রাখবেন। তিনি যেন দীর্ঘজীবী হন।
সৌদি নাগরিক শেখ হামুদ আলী আল খালাফ বলেন, বাংলাদেশে মসজিদ নির্মাণ করতে পেরে আমি অনেক আনন্দিত। মহান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করছি। আমি এ মসজিদটি নিজের চোখে দেখার জন্য আমার চার মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশে এসেছি। সবার সঙ্গে জুম্মার নামাজ আদায় করলাম।
তিনি বলেন, এলাকার মানুষ অনেক বেশি আন্তরিক। মসজিদটি অনেক সুন্দর হয়েছে। আমি আগামীতে এরকম সুন্দর আরও মসজিদ নির্মাণ করবো ইনশাআল্লাহ।
ওআ/