ছবি: সংগৃহীত
নয়টি যানবাহন নিয়ে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ায় ডুবে যাওয়া ফেরি রজনীগন্ধা সাত দিন পর নদীর তলদেশ থেকে ওপরে তোলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৩শে জানুয়ারি) বিকেলে উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয়ের সাহায্যে ফেরিটিকে পানির ওপর দৃশ্যমান করা হয়। ফেরিটি এখন আংশিক দৃশ্যমান।
দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, এয়ার লিফটিং ব্যাগে বাতাস দিয়ে ফেরিটি হালকা করার চেষ্টা করেন নৌবাহিনী ও বিআইডব্লিউটিএর উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা। এর পাশাপাশি বিআইডব্লিউটিএ ও ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল নদীতে ডুবে যাওয়া মালবাহী যানবাহন উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করে।
বিআইডব্লিউটিসির আরিচা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার সকালে নয়টি মালবাহী যান নিয়ে ফেরিটি পদ্মা নদীতে ডুবে যাওয়ার সময় উল্টে যায়। এরপর গত শুক্রবার নারায়ণগঞ্জ থেকে উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয়কে ঘটনাস্থলে আনা হয়। গত শনিবার থেকে এয়ার লিফটিং ব্যাগে বাতাস দিয়ে নদীর তলদেশ থেকে ডুবে যাওয়া ফেরিটি হালকা করার চেষ্টা করা হয়। তবে ফেরিটির তলা ফেটে যাওয়ায় এই কাজে ব্যর্থ হয় কর্তৃপক্ষ। এরপর রোববার উদ্ধার অভিযানে যুক্ত হয় অনুসন্ধানী জাহাজ ঝিনাই-১।
পরবর্তী সময়ে আবার এয়ার লিফটিং ব্যাগে বাতাস দিয়ে ফেরিটি হালকা করার চেষ্টা চলে। গতকাল সোমবার উদ্ধারকারী জাহাজ দিয়ে ফেরিটির এক পাশ সামান্য উঁচু করা হয়। তবে এ পর্যায়ে ফেরিটি পলিমাটিতে ভরে যাওয়ার ফলে এর ওজন অত্যধিক হওয়ায় সে অবস্থায় পানির নিচে একপাশ উঁচু করে রাখা হয়। এরপর আজ বিকেলে ডুবে যাওয়া ফেরিটি নদীর তলদেশ থেকে ওপরে ওঠানো হয়। এখন ফেরিটির তলার অংশ পানির ওপরে দৃশ্যমান হয়েছে।
ফেরি উদ্ধারকারী নৌবাহিনীর ডুবুরি দলের প্রধান লেফটেন্যান্ট শাহ পরান ইমন বলেন, ফেরিটিকে নদীর তলদেশ থেকে ওপরে ওঠানো হয়েছে। আগামীকাল বুধবার সকালে উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয়ের সাহায্যে ফেরিটিকে টেনে ভাসিয়ে নদীর তীরে নেওয়া হবে।
এদিকে ডুবে যাওয়া নয়টি মালবাহী যানবাহনের মধ্যে আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত সাতটি উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি দুটি যান এখনো নদীতে রয়েছে।
আরও পড়ুন: স্বাভাবিক হয়েছে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুটে ফেরি চলাচল
এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিসির আরিচা কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) শাহ মোহাম্মদ খালেদ নেওয়াজ বলেন, এ দুটি যান দুর্ঘটনাস্থলের আশপাশে রয়েছে বলে উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা চিহ্নিত করেছেন। আগামীকাল এ দুটি যান নদী থেকে উদ্ধার করা সম্ভব হবে।
১৬ জানুয়ারি রাত ১২টার পর রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া প্রান্ত থেকে পাটুরিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে আসে ইউটিলিটি (ছোট) ফেরি রজনীগন্ধা। ফেরিটিতে নয়টি মালবাহী যান ছিল। রাত দেড়টার দিকে ঘন কুয়াশার কারণে পাটুরিয়ার ৫ নম্বর ঘাটের অদূরে পদ্মা নদীতে আটকা পড়ে ফেরিটি। পরদিন ১৭ জানুয়ারি সকাল সাড়ে আটটার দিকে ফেরিটি ডুবে যায়। উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা ২০ জনকে উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় নিখোঁজ ছিলেন ফেরির দ্বিতীয় ইঞ্জিন মাস্টার হুমায়ূন কবির (৪৫)। গতকাল বিকেলে দুর্ঘটনাস্থলের প্রায় ১৩ কিলোমিটার ভাটিতে হরিরামপুর উপজেলার বাহাদুরপুর এলাকায় পদ্মা নদী থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল।
এসকে/
খবরটি শেয়ার করুন