বাড়িতেই স্পা করা যায়। ছবি: পেক্সেলস
পুরো সপ্তাহে নানান ধকল যায় শরীরের ওপর দিয়ে। সারাদিন অফিসের কাজ, রাতে ফিরে ঘরের দেখাশোনার ব্যাপার তো রয়েছেই। রাতদিন এক করে কত কাজই না করতে হয়। আর এসবের সঙ্গে খেয়ালে–বেখেয়ালে নানা অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া তো আছেই।
এত সবের মাঝে যদি পর্যাপ্ত ঘুমও বাদ পড়ে যায়, তাহলে এর প্রভাব তো ত্বক আর চুলে পড়বেই। যারা পারলারে গিয়ে সাধ্যমতো খরচা করতে পারেন, তাদের বাড়তি ভাবনা হয়তো নেই। তবে যাদের পক্ষে তা সম্ভব নয়, এই লেখা তাদের জন্য।
বর্ষার মৌসুম এককথায় উপভোগ্য। কিন্তু এ সময় ত্বক ও চুলের যে বাড়তি যত্নের প্রয়োজন অনস্বীকার্য। ত্বকের পরিপূর্ণ আরাম ও যত্নের জন্য স্পার ভূমিকা অনেক। এই স্পা করতে যারা স্যালন বা পারলারে যেতে পারেন না, তারা ঘরে বসে নিজের মতো যত্ন নিতে পারেন। এর জন্য প্রয়োজন ইচ্ছা ও সময়। ঠিকমতো স্পা করতে পারলে ত্বক আর চুলের ইতিবাচক বদলটা নিজেই দেখতে পাবেন।
স্পার জন্য গোসলের সময়টিই সেরা। এ সময়ে সহজে পুরো শরীরের ত্বকের যত্ন নেওয়া যায়। পুরো শরীরে যেহেতু প্যাক বা স্ক্রাবের ব্যবহার করবেন, তাই গোসলের সময়টাই ভালো। ত্বকের গভীর থেকে ময়লা বের করে ত্বকের পেলব ভাব ফিরিয়ে আনতে গোসলের আগে কয়েকটি মিশ্রণ মুখ ও পুরো শরীরে ব্যবহার করতে পারেন।
শসা, পুদিনা ও চিনির বডি স্ক্রাব
শসার রস ত্বক ঠাণ্ডা রাখে। পাশাপাশি এটি মৃত কোষ ঝরাতেও কার্যকরী। এর সঙ্গে যখন পুদিনাপাতা থেঁতো করে দেওয়া হয়, তখন তা ত্বক সতেজ করে তোলে। এই দুই উপকরণের সঙ্গে আরও মিশিয়ে নিন অল্প নারকেল তেল ও চিনি। সব কটি উপকরণের মিশ্রণে একটি ঘন দানাদার পেস্ট তৈরি হবে।
এই মিশ্রণ চাইলে এয়ারটাইট জারে ভরে ফ্রিজে রাখতে পারেন। এক সপ্তাহ ভালো থাকবে। এই স্ক্রাব গোসলের আগে ত্বকে মেখে ১০ মিনিট ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন। তাহলে ত্বক হবে মখমলের মতো মসৃণ, সঙ্গে ফিরবে লাবণ্য।
পাকা পেঁপে ও মধুর ফেসপ্যাক
এই ঘরোয়া ফেসপ্যাক ত্বক গভীর থেকে পরিষ্কার করে। পাশাপাশি ত্বকের পিএইচের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে। এক কাপের ৪ ভাগের ১ ভাগ পাকা পেঁপের সঙ্গে ২ টেবিল চামচ মধু মেশান। এবার মুখ ক্লিনজার দিয়ে পরিষ্কার করে ত্বকে এই প্যাকের প্রলেপ দিন। শুকিয়ে গেলে ঠাণ্ডা পানির ঝাপটায় ধুয়ে ময়শ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। সপ্তাহে অন্তত দু'বার এ প্যাক ব্যবহার করুন।
গোসলের পানিতে ল্যাভেন্ডার এসেনশিয়াল অয়েল মেশান
যেদিন খুব ক্লান্তি নিয়ে বাড়ি ফিরবেন, সেদিন লুফা ও বডিওয়াশ দিয়ে শরীর ভালোভাবে স্ক্রাব করে কুসুম গরম পানিতে গোসল সেরে নিন। শেষ ধোয়ার জন্য পানিতে কয়েক ফোঁটা ল্যাভেন্ডার এসেনশিয়াল অয়েল ফেলে দিন। ল্যাভেন্ডারের সুবাস ক্লান্তি দূর করে শরীর ঝরঝরে করে তোলে। ভালো ঘুমের জন্যও সহায়ক এই সুবাস।
গোলাপের পাপড়ি ও ওটমিল মেশানো পানিতে গোসল
এ মৌসুমে যাদের ত্বকে চুলকানি, র্যাশ ও লালচে ভাবের সমস্যা দেখা দেয়, তারা সপ্তাহে একদিন ওটমিল বাথ নিতে পারেন। ত্বকের লালচে ভাব ও র্যাশের সমস্যা সমাধানে জাদুকরী ভূমিকা রাখে ওটস। এর পুষ্টি যদি পুরো শরীর পায়, তাহলে বডি স্পার মতো ফল পাওয়া যায়।
ওটমিল বাথের জন্য ১ কাপ ওটস গুঁড়া করে নিতে হবে। এর সঙ্গে শুকিয়ে রাখা গোলাপের পাপড়ি মিশিয়ে নিন ১ কাপ পরিমাণ। এই মিশ্রণ বাথটাবের কুসুম গরম পানিতে মিশিয়ে গোসল করুন।
ওটস ত্বকের মরা কোষ ঝরিয়ে উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনবে। সঙ্গে ত্বকের লালচে ভাবও দূর করবে। গোলাপের পাপড়ি ব্যথানাশক ও জীবাণুনাশক হিসেবে কাজ করবে। এই বর্ষার রূপ রুটিনে ওটমিল ও গোলাপের পাপড়ির মিশ্রণ তৈরি করে জারে ভরে রাখুন। প্রয়োজনমতো ব্যবহার করলে ফলটা নিজেই টের পাবেন।
জে.এস/
খবরটি শেয়ার করুন