ছবি: সংগৃহীত
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিতে যাওয়ার লড়াইয়ে অস্ট্রেলিয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশ, আফগানিস্তানও ছিল। কিন্তু সব কিছুই নির্ভর করছিল কঠিন সব সমীকরণে। আফগানদের ১১৫ রানে থামিয়ে সেই লক্ষ্য ১২.১ ওভারে টপকালে শেষ চারে যাওয়ার সুযোগ ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু সাকিব-শান্তরা সেটি পারেনি। একপ্রান্ত আগলে রেখেও বাংলাদেশকে জেতাতে পারল না লিটন। বরং রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে বৃষ্টি আইনে বাংলাদেশকে ৮ রানে হারিয়েছে আফগানিস্তান।
এতে প্রথমবারের মতো সেমিফাইনালে যাওয়ার গৌরব অর্জন করেছে রশিদ খানের দল। বাংলাদেশের হারে সেমিফাইনালের আগেই ছিটকে গেল অস্ট্রেলিয়াও। আগামী ২৭ তারিখ ভোরে প্রথম সেমিফাইনালে ত্রিনিদাদে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে আফগানিস্তান।
অথচ রান তাড়া করতে নেমে সেমিফাইনালে যাওয়ার সমীকরণ মেলানোর মতো ব্যাটই করছিল বাংলাদেশ। তানজিম তামিম শুরুতে ফিরে গেলেও লিটনের কার্যকরী ব্যাটিংয়ে নাগালের মধ্যেই ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু শান্ত-সাকিবের আউটের পর মাহমুদউল্লাহর খামখেয়ালি ব্যাটিংয়ে ভুগতে হয়েছে দলকে। যার চাপ এসে পড়ে পরের ব্যাটারদের কাঁধে। তাওহিদ হৃদয়ও চেষ্টা করেছিলেন সেমির সমীকরণ মাথায় রেখেই। তবে টাইমিং গড়মিলে ৯ বলে ১৪ রান করে হৃদয় আউট রশিদ খানের বলে বাউন্ডারির কাছে ক্যাচ দিয়ে।
এর পরপরই সেমির দৌড় থেকে ছিটকে যায় বাংলাদেশ। নূর আহমেদের ১০ম ওভারে এক বাউন্ডারি মেরে পাঁচটি ডট দেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। যদিও টিকতে পারেননি তিনি। জেতা ম্যাচ কঠিন করে বাংলাদেশকে বিপদে ফেলে সাজঘরে ফিরেছেন তিনি। রশিদের এক ওভারে মাহমুদউল্লাহর পর রিশাদের বিদায়ে পরাজয়ের শঙ্কা ভর করে বাংলাদেশের শিবিরে। এক প্রান্তে লিটন দাস দাঁড়িয়ে থাকলেও আরেক প্রান্তে ছিল ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মিছিল। তাতে কোনোরকমে একশ পেরিয়ে অলআউট হয় টাইগাররা। লিটন শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ৫৪ রান করে।
বৃষ্টির পর খেলা শুরু, ওভার কাটা যায়নি
বৃষ্টিতে ২৮ মিনিট খেলা বন্ধ থাকার পর আবার শুরু হয়েছে। কোনো ওভার কাটা হয়নি। ২০ ওভারে ১১৬ রানের লক্ষ্যেই আবার ব্যাটিং শুরু করল বাংলাদেশ। তবে এরপর আবার বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হলে ওভার কাটা শুরু হবে। ৩.২ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৩১ রান। ৮ বলে ১৩ রানে খেলছেন লিটন কুমার দাস। ৩ বলে ৬ রান করেছেন সৌম্য সরকার।
শান্ত-সাকিবের আউটের পর বৃষ্টি, ওভার কমলে যেমন হবে লক্ষ্য
২৩ রানে তিন উইকেট হারানোর পর ৩.২ ওভারে বৃষ্টির কারণে বন্ধ হয় খেলা। যদি বৃষ্টির কারণে ওভার কমে যায় তাহলে কার্যকর হবে ডিএলএস পদ্ধতি। এমনটা হলে ৩ উইকেট হারানো বাংলাদেশের সমীকরণ আরও কঠিন হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে বৃষ্টিতে ম্যাচের দৈর্ঘ্য ৫ ওভার কমলে অর্থাৎ ১৫ ওভারের ম্যাচ হলে সেমিতে উঠতে বাংলাদেশের লক্ষ্য দাঁড়াবে ৭.২ ওভারে ৯৪ রান।
২৩ রানে তিন উইকেট নেই বাংলাদেশের
সেমির লক্ষ্যে খেলতে নেমে ২৩ রানেই তিন উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তৃতীয় শূন্যর দেখা পান তানজিদ। এরপর দ্রুতই শান্ত-সাকিবকে হারায় বাংলাদেশ। শান্ত করেন ৫ রান। সাকিব ফেরেন খালি হাতেই। শান্ত-সাকিব দুজনকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন নাভিন। হ্যাটট্রিক বলটা ঠেকালেন সৌম্য। ৩.২ ওভার যেতেই আবারও বৃষ্টির কারণে বন্ধ আছে খেলা। বৃষ্টির আগে ৩ উইকেট হারিয়ে ৩১ রান সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ। লিটনের সঙ্গে আছেন সৌম্য সরকার।
আরো পড়ুন: অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে আফগানিস্তানের ইতিহাস
সেমিতে যেতে ১২.১ ওভারে জিততে হবে বাংলাদেশকে
বাংলাদেশকে ১১৬ রানের লক্ষ্য দিয়েছে আফগানিস্তান। আগে ব্যাটিং করতে নেমে ৫ উইকেটে ১১৫ রান করেছে রশিদ খানের দল। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৩ রান করেছেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ। রান রেটে এগিয়ে সেমিফাইনালে যেতে হলে বাংলাদেশকে ১২.১ ওভারে এই লক্ষ্য ছুঁতে হবে।
স্কোর লেভেল করে যদি চার মারতে পারে বাংলাদেশ, তাহলে সময় পাবে ১২.৩ ওভার। কিংবা স্কোর লেভেল করে যদি ছক্কা মারতে পারে বাংলাদেশ, তাহলে সময় পাবে ১২.৫ ওভার।
এদিন শুরুতে আফগানিস্তানের ব্যাটারদের উইকেট নিতে না পারলেও রানের গতি ভালোভাবেই নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলেন বাংলাদেশের বোলাররা। চাপের মধ্যে রেখে ৫৯ রানে উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন রিশাদ। এরপর ৮৪ রানের মাথায় দ্বিতীয় উইকেটের পতন ঘটান মুস্তাফিজুর রহমান। আউট হন আজমতউল্লাহ ওমরজাই।
এরপর নিজের তৃতীয় ওভার বল করতে এসে এবার আরো বেশি বিধ্বংসী রিশাদ হোসেন। এক ওভারেই নিলেন ২ উইকেট। ফেরালেন দুই মারকুটে ব্যাটার রহমানউল্লাহ গুরবাজ এবং গুলবাদিন নাইবকে। শেষ পর্যন্ত ৫ উইকেট হারিয়ে ১১৫ রান সংগ্রহ করতে সক্ষম হয় আফগানরা। ২৬ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ইনিংসের সেরা বোলার রিশাদ।
এসি/