ছবি : সংগৃহীত
বর্ষাকাল যেমন স্বস্তি ও প্রশান্তি নিয়ে আসে, তেমনই কিছু সমস্যাও সঙ্গে করে আনে। এ সময় পানিবাহিত রোগের ঝুঁকি বেশি থাকে। এর মধ্যে আমাশয় অন্যতম। এর ফলে রক্ত এবং শ্লেষ্মা-সহ গুরুতর ডায়রিয়া দেখা দিতে পারে। আমাশয় সঠিকভাবে প্রতিকার করা না হলে ডিহাইড্রেশন এবং অন্যান্য গুরুতর স্বাস্থ্য জটিলতা দেখা দিতে পারে। জেনে নিন, বর্ষায় আমাশয় প্রতিরোধের উপায়-
আমাশয় হলো ব্যাকটেরিয়া বা পরজীবী সংক্রমণের কারণে সৃষ্ট একটি অন্ত্রের রোগ, যার ফলে প্রাথমিকভাবে রক্ত বা শ্লেষ্মাসহ মল নির্গত হয় এবং ডিহাইড্রেশন হয়।
আমাশয়ের লক্ষণ
* জ্বর
* পেটে ব্যথা
* বমি বমি ভাব
* দুগ্ধজাত খাবারে সাময়িক অসহিষ্ণুতা
* ওজন কমে যাওয়া।
আমাশয়ের কারণ
প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আগে আমাশয়ের কারণ বোঝা গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যাকটেরিয়া বা পরজীবীর কারণে অন্ত্রের একটি বড় অংশকে প্রভাবিত করে এমন সংক্রমণের ফলে আমাশয় হয়। সংক্রমণের রুট হলো মল-মুখ, অর্থাৎ ব্যাকটেরিয়া বা পরজীবীর স্থানান্তর ঘটে যখন সংক্রমিত ব্যক্তির থেকে মল পদার্থ অন্য ব্যক্তির মুখে প্রবেশ করে। এটি খাদ্য দূষণ, পানি দূষণের মাধ্যমে ঘটতে পারে।
আরো পড়ুন : খাওয়ার পর ১০ মিনিট হাঁটার যত উপকার
প্রতিরোধ
বর্ষা ও বর্ষা-পরবর্তী সময়ে পানিবাহিত রোগের ঝুঁকি বেশি থাকে। ডিহাইড্রেশনের কারণে গুরুতর জটিলতা প্রতিরোধের জন্য আমাশয়ের কার্যকর ব্যবস্থাপনা এবং প্রতিরোধ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিম্নলিখিত প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা, নিরাপদ খাদ্য এবং পানি খাওয়ার ওপর জোর দেওয়া এবং যখন প্রয়োজন হয় তখন দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা উচিত।
১. বিশুদ্ধ পানি পান
আমাশয় রোগ নিয়ন্ত্রণের টেকসই সমাধানের জন্য অবশ্যই বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। ফোটানো, ফিল্টার করা, সঠিকভাবে ক্লোরিনযুক্ত, বোতলজাত বা টিনজাত পানি পান করুন। পাইপযুক্ত পানি বা প্লাস্টিকের মগ, কাপ, ব্যাগ বা ভাঙা বোতলে বিক্রি হওয়া পানি/পানীয় পান করা এড়িয়ে চলুন। পানীয়, দাঁত ব্রাশ, ধোয়া এবং খাবার তৈরি করতে এবং বরফ বা পানীয় তৈরির জন্য সঠিকভাবে ক্লোরিনযুক্ত, ফোটানো, ফিল্টার করা পানি ব্যবহার করুন।
২. স্বাস্থ্যকর স্যানিটেশন ব্যবস্থা
পানিবাহিত রোগের প্রকোপ কমাতে ব্যক্তি ও সম্প্রদায় পর্যায়ে স্যানিটেশন প্রোটোকল বাস্তবায়ন করা উচিত। খাবার তৈরি এবং খাওয়ার আগে এবং পরে হাত পরিষ্কার করুন। বাচ্চাদের খাওয়ানোর আগে এবং পরে, টয়লেট ব্যবহারের পর, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত কাউকে দুধ খাওয়ানোর পরও হাত পরিস্কার করতে হবে।
৩. খাদ্য স্যানিটেশন
এমন খাবার খান যেগুলো ভালোভাবে রান্না করা হয়েছে এবং টাটকা খোসা ছাড়ানো ফল এবং সবজি খান। রান্না না করা বা কম রান্না করা খাবার, বিশেষ করে সামুদ্রিক খাবার এড়িয়ে চলুন।
৪. উন্মুক্ত মলত্যাগ নিরুৎসাহিত করুন
সর্বোত্তম স্যানিটেশন সুবিধাসহ টয়লেট বা ল্যাট্রিন ব্যবহার করতে হবে। টয়লেট সুবিধা সহজলভ্য না হলে, পানির উৎস থেকে কমপক্ষে ৩০ মিটার দূরে মলত্যাগ করতে হবে।
এস/ আই.কে.জে