সোমবার, ২৩শে ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৯ই পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আজ কেক খাওয়ার দিন

লাইফস্টাইল ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৪:০২ অপরাহ্ন, ২৬শে নভেম্বর ২০২৪

#

প্রতীকী ছবি

ছোট বড় সবাই কমবেশি কেক খেতে পছন্দ করেন। যে কোনো বিশেষ দিন সেটা হোক কারও জন্মদিন, বিবাহ বার্ষিকী কিংবা প্রিয়মানুষের রাগ ভাঙানোর কৌশল। সবেতেই কেক এক অন্যতম উপকরণ সবার।

এছাড়া প্রতিদিনের নাশতায় কিংবা অতিথি আপ্যায়নে বা ঘরের ছোট সদস্যের চাহিদা মেটাতে প্রায়শই কমবেশি সবারই খাওয়া হয় কেক। বেশিরভাগ মানুষই পেস্ট্রি হাউজ থেকে কেক কিনে খান। আবার অনেকে ঘরেও বাহারি ধরনের কেক তৈরি করে খান।

আজ কিন্তু কেক খাওয়ার দিন। প্রতিবছর ২৬শে নভেম্বর বিশ্বব্যাপী পালিত হয় ‘আন্তর্জাতিক কেক দিবস’। কেকের ইতিহাস প্রাচীন কালের, এবং প্রাচীন গ্রিস এবং মিশরে প্রথম কেক তৈরি করা হয়েছিল বলে মনে করা হয়। আর প্রথম তৈরি কেক গুলো বেশ ভারী এবং সমতল ছিল বাদাম এবং মধু দিয়ে খাওয়ার শেষে খাওয়া হত।

কেক শব্দটি এসেছে পুরোনো নর্স শব্দ ‘কাকা’ থেকে। কেক হলো একটি বেকড খাবার যা সাধারণত ময়দা, চিনি ও অন্যান্য উপাদান দিয়ে তৈরি। গ্রিকরা ডিম, দুধ, বাদাম ও মধুর মিশ্রণে তৈরি করতো কেক। রোমান শাসনের সময় কেক শব্দটি একটি ভিন্ন নাম ধারণ করেছিল। কেককে তখন প্ল্যাসেন্টা বলা হত।

ইংল্যান্ডেও কেক প্রথমদিকে রুটির মতো তৈরি করা হত। এখনকার কেকের সঙ্গে সেগুলোর পার্থক্য ছিল আকৃতিতে। আরেকটি পার্থক্য আছে উৎপাদন পদ্ধতি। অতীতে কেক তৈরির সময় উল্টে দেওয়া হত, তবে এখন আর তেমনটি করা হয় না।

তবে এই কেক প্রথম তৈরি হয়েছিল মিশরীয়দের হাতেই। ৩০০০-৫০০০ বছর পূর্বে মিশরীয়রা রুটির সঙ্গে মধু বা মিষ্টি সিরাপ খেত। একসময় রুটিটাই মিষ্টি স্বাদের করার জন্য নানান জিনিস মেশাতে থাকে। সেই সময়ে গমের আটা, খামির, ডিম, দুধ এবং মসলা দিয়ে কেক তৈরি করা হতো এবং মধু, ডুমুর বা খেজুর দিয়ে মিষ্টি করা হতো। কেকটি বেক করা গরম পাথরের উপর। এখন যে কাজটি আমরা করছি ওভেনে।

গোলাকার এবং মিষ্টি এই কেক ধর্মীয় উৎসব এবং উদযাপনে খাওয়া হতো। দেবতাদের উদ্দেশ্যে বানানো হতো এবং মৃতদের সঙ্গে কবরে দিয়ে দেওয়া হতো মিষ্টি কেক। ইউরোপের অন্যান্য অংশে এর আরও অনেক পরে সময়টা ১৫ শতাব্দীর দিকে কেকের পরিচিতি বাড়তে থাকে।

১৫৭০ সালের দিকে এসে কেক বানানোর আজকের যে প্রক্রিয়া অর্থাৎ ডিমের সাদা অংশ আলাদা করে ফেটিয়ে ফোম বানিয়ে তৈরি করা শুরু হয়। তখন ডিমের ফোম তৈরি করা বেশ কষ্টসাধ্য এবং সময়সাপেক্ষ ব্যাপার ছিল। প্রথম স্পঞ্জ কেকটি ১৮ শতকের শেষের দিকে ইতালির জেনোয়া অঞ্চলের একজন পেস্ট্রি শেফ উদ্ভাবন করেছিলেন।

রাজার দরবারে ভোজসভার জন্য তিনি এই কেক তৈরি করেছিলেন। স্পঞ্জ কেক তৈরিতে ব্যবহার হতো ডিম, চিনি এবং ময়দা। স্মান্য সুগন্ধি ব্যবহার করা হতো ডিমের গন্ধ দূর করার জন্য। তবে কেকেক ব্যাটার তৈরি করার জন্য ডিমটিকে প্রস্তুত করাই ছিল সবচেয়ে কঠিন কাজ। সেই সঙ্গে চিনি এবং ময়দার পরিমাপও ঠিক রাখতে হতো। নাহলে পার্ফেক্ট স্পঞ্জ কেক তৈরি সম্ভব হবে না।

১৮ এবং ১৯ শতকের মধ্যদিকে ফ্রান্সে কেকের রেসিপিগুলো আরও পরিমার্জিত হয়। ১৭৮০ সালে ওভেন উদ্ভাবিত হয়, যা বেকিংয়ের কাজ আরও সহজ করে তোলে। পূর্বে বাড়ির বাবুর্চিরা রান্নার জন্য যে চুলা ব্যবহার করতেন সেখানে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে অসুবিধা হতো ফলে কেক তৈরি করা ছিল চ্যালেঞ্জিং।

১৮৫০ সালে বেকিং পাউডার উদ্ভাবিত হয়। ১৮৮৮৪ সালের শেষের দিকে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভাবন হয়, যেটি ডিম ফোটানোকে আরও সহজ করে তুলেছিল। ওহাইওতে উইলিস জনসন নামের একজন কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকান, একটি যান্ত্রিক ডিম বিটার তৈরি করেন। এটি একটি ঘূর্ণমান বিটার, যেটাতে খুব সহজেই ডিম ফেটানো এবং কেকের মিশ্রণ তৈরি করা যায়।

আন্তর্জাতিক কেক দিবস উদযাপনে আপনিও আজ পরিবারের জন্য তৈরি করতে অথবা কোন শপ থেকে অর্ডার করতে পারেন সুস্বাদু কেক। তারপর পরিবারের সবাইকে নিয়ে কেক কেটে উদ্‌যাপন করতে পারেন দিবসটি।

ওআ/


কেক

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন