ছবি: সংগৃহীত
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালু হচ্ছে আগামী মাসেই। মার্চের মধ্যে প্রত্যাশার এই এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে নগরীর টাইগারপাস থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত যান চলাচল শুরু হবে। ৮টি পয়েন্টে ১৫টি র্যাম্প নির্মাণে এই বছরের বাকি সময়টা লাগতে পারে। তবে এর আগে লালখান বাজারে আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের সাথে এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী–সিডিএ ফ্লাইওভার যুক্ত করে মুরাদপুর থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত যান চলাচল শুরু করে দেয়া হবে। এক্সপ্রেসওয়ে চালু হলে নগরে যান চলাচলে গতি আসবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, চট্টগ্রামের যানজট নিরসনসহ বহুমুখী লক্ষ্য সামনে নিয়ে পতেঙ্গা থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত সাড়ে ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী–সিডিএ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নগরীর লালখান বাজারে ইতোপূর্বে নির্মিত আখতারুজ্জামান চৌধুরী ফ্লাইওভারের সাথে যুক্ত হবে। এতে পতেঙ্গা থেকে বহদ্দারহাট পর্যন্ত ২২ কিলোমিটারের বেশি দৈর্ঘ্যের ফ্লাইওভারের উপর দিয়ে যানবাহন চলাচল করবে। আগামী মাসের মধ্যে এই ফ্লাইওভারের টাইগারপাস থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত অংশ যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হলেও পুরো ফ্লাইভার পুরোদমে কার্যকর করতে চলতি বছরের পুরো সময় লাগবে।
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মাহফুজুর রহমান গতকাল বলেন, ফ্লাইওভারের বেশিরভাগ কাজ শেষ হয়েছে। টাইগারপাস থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত অংশটি প্রায় পুরোপুরি তৈরি। শুধু সাইডের রেলিং, লাইটিংসহ কিছু কাজ বাকি রয়েছে। এসব কাজ শেষ করার জন্য রাতে–দিনে কাজ চলছে। তিনি বলেন, আমবাগানের দিকে একটি র্যাম্প নেমেছে। এই র্যাম্প দিয়ে গাড়ি পতেঙ্গায় গিয়ে নামতে পারছে। আবার পতেঙ্গা থেকে ওঠা গাড়ি টাইগারপাসে এসে নামতে পারছে। সাইডের রেলিংসহ কিছু কাজ বাকি থাকায় আমরা এখনো সাধারণ যানবাহনকে ফ্লাইওভারে অ্যালাউ করছি না। অচিরেই আমরা এই অংশটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেব।
পতেঙ্গা থেকে আসা ফ্লাইওভারের দুই লেন লালখান বাজার ম্যাজিস্ট্রেট কলোনির সামনে নেমে যাবে। বাকি দুই লেন জমিয়তুল ফালাহ মসজিদের পাশ দিয়ে ওয়াসা মোড়ের কাছে মুরাদপুর থেকে আসা আখতারুজ্জামান চৌধুরী ফ্লাইওভারের সাথে যুক্ত করে দেয়া হচ্ছে। এই অংশটির বেশিরভাগ কাজ হয়ে গেছে। বাকি কাজ দ্রুততম সময়ের মধ্যে শেষ করার জন্য রাতে–দিনে কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মাহফুজুর রহমান।
তিনি জানান, মূল ফ্লাইওভার থেকে ৮টি এলাকায় ১৫টি র্যাম্প নির্মাণ করা হবে। এগুলো শহরের যান চলাচলে গতি আনবে। এসব র্যাম্পের সহায়তায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কানেক্টিভিটি বেড়ে যাবে।
তিনি বলেন, জিইসি মোড়ে পেনিনসুলা হোটেলের সামনে থেকে একটি র্যাম্প ফ্লাইওভারে উঠবে। যাতে জিইসি মোড় থেকে ফ্লাইওভারে ওঠা যায়। এছাড়া টাইগারপাস মোড়ে দুটি র্যাম্পের একটি সিআরবি রোড থেকে, অপরটি আমবাগান রোড থেকে এসে ফ্লাইওভারে যুক্ত হবে। আগ্রাবাদ মোড়ে ৪টি, ফকিরহাটে ১টি, নিমতলা মোড়ে ২টি, সিইপিজেড মোড়ে ২টি, সিমেন্ট ক্রসিংয়ে ১টি এবং কেইপিজেডের সামনে দুটি র্যাম্প ফ্লাইওভারে যুক্ত হবে। এসব র্যাম্পসহ এক্সপ্রেসওয়ের দৈর্ঘ্য হবে ২২ কিলোমিটার।
সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, আমরা মার্চের মধ্যে টাইগারপাস থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালু করে দেব। মে’র মধ্যে লালখান বাজারে সংযুক্ত করার কাজ শেষ হলে মুরাদপুর থেকে টানা যান চলাচল শুরু হবে।
তিনি জানান, ৮টি পয়েন্টে ১৫টি র্যাম্প নির্মিত হবে। তবে র্যাম্প নির্মাণে কিছু সময় লাগবে। আমরা এলাকার গুরুত্ব বিবেচনা করে র্যাম্প নির্মাণে অগ্রাধিকার দিচ্ছি। জিইসি মোড়ে র্যাম্প নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। পেনিনসুলা হোটেলের সামনে থেকে এই র্যাম্প উঠবে। টাইগারপাসে আমবাগানের দিকের র্যাম্পটির কাজ প্রায় শেষ। স্টেশন রোডের দিক থেকে আসা র্যাম্পের কাছ অচিরেই শুরু হবে। আগ্রাবাদ কমার্স কলেজ রোড থেকে র্যাম্প না তুলে রেলওয়ে ঢেবার পাড় থেকে কিছু জায়গা অধিগ্রহণ করে র্যাম্প নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এতে আগ্রাবাদ এক্সেস রোড থেকে আসা গাড়িগুলোকে আগ্রাবাদ হোটেলের রাস্তা ধরে ভিতরে প্রবেশ করতে হবে না। মেইন রোড থেকেই ফ্লাইওভারে উঠতে পারবে। এক্সপ্রেসওয়ের কানেক্টিভিটি বাড়িয়ে অধিক কার্যকর করার জন্য প্রয়োজনীয় সব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ওআ/
খবরটি শেয়ার করুন